মুসল্লি রাকাত ধরার জন্য রুকুতে ইমামের দেরি করার বিধান

তাকবিরে উলা বা নামাজের প্রথম তাকবিরের সময় ইমামের সঙ্গে উপস্থিত হওয়া জরুরি। হাদিসে তাকবিরে উলার সঙ্গে নামাজ আদায়ের বিশেষ ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি চল্লিশ দিন জামাতে নামাজ আদায় করবে এবং সে প্রথম তাকবিরও পাবে তার জন্য দুটি মুক্তির পরওয়ানা লেখা হবে। (এক) জাহান্নাম থেকে মুক্তি। (দুই) নেফাক থেকে মুক্তি। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৪১)
বিখ্যাত তাবেয়ি মুজাহিদ (রহ.) বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একজন বদরি সাহাবিকে বলতে শুনেছি, তিনি তার ছেলেকে জিজ্ঞাস করেছেন, তুমি কি আমাদের সঙ্গে নামাজ পেয়েছে? ছেলে বললেন, জ্বি, আবার জিজ্ঞাস করলেন, তাকবিরে উলা তথা ইমামের সঙ্গেই তাকবির পেয়েছ? ছেলে বললেন, না। তিনি বললেন, তুমি ১০০ কালো চোখ বিশিষ্ট উটের চেয়ে অধিক কল্যাণ হারিয়েছ। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস নং ২০২১)
সাধারণত শুরু থেকেই নামাজে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করেন মুসল্লিরা। তবে অনেক সময় তাকবিরে উলা পাওয়া সম্ভব হয় না। রুকু বা সিজদায় ইমামকে পাওয়া যায়।
অনেক সময় শুরু থেকে নামাজ না পেলে মুসল্লিরা রুকু সিজদায় তাড়াতাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করেন। ইমাম এমন কোনো মুসল্লির জন্য রুকুতে দেরি করতে চাইলে তার বিধান কী হবে, এ বিষয়ে জানতে চেয়ে একজন বলেছেন—
আমি এক মসজিদে ইমামতি করি। অনেক সময় রুকুতে যাওয়ার পর কোনো কোনো মুসল্লীর দ্রুতগতিতে মসজিদে প্রবেশের শব্দ শোনা যায়। এমতাবস্থায় আমি যদি উক্ত মুসল্লীর রাকাত পাওয়ার জন্য রুকুতে একটু দেরি করি তাহলে এতে শরয়ী কোনো সমস্যা হবে কি না?
এ ক্ষেত্রে ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতামত হলো— ইমামের কর্তব্য, সুন্নাহসম্মত পন্থায় নামাজ আদায় করা। কোনো আগন্তুক মুসল্লীর রাকাত পাওয়ার জন্য রুকু কিংবা কেরাত লম্বা করা উচিত নয়।
অবশ্য কেউ যদি মুসল্লীদের রাকাত পাওয়ার আশায় কিরাত বা রুকু লম্বা করে থাকে তাহলে এতে নামাজের ক্ষতি হবে না। কিন্তু বিশেষ কোনো মুসল্লীর মনোরঞ্জনের জন্য এমনটি করা জায়েজ হবে না।
-আলমুহীতুল বুরহানী ২/১১৫; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়্যা ১/১০৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৫৫