তাওয়াফের সময় উচ্চস্বরে দোয়া পড়া যাবে?

হজ ও ওমরার সময় পবিত্র কাবাঘর তাওয়াফ করা হয়। হজ ছাড়াও নফল তাওয়াফের নিয়ম রয়েছে। পবিত্র কোরআনে একাধিক জায়গায় কাবাঘর তাওয়াফের কথা বলা হয়েছে। বর্ণিত হয়েছে,
‘আর আমার ঘরকে পবিত্র রাখবে তাওয়াফকারী, নামাজ কায়েমকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য।’ (সূরা হজ, আয়াত : ২৬)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি ইবরাহিম ও ইসমাঈলকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম যে তোমারা আমার ঘরকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো।’ (সূরা বাকারা, আয়াত : ১২৫)
তাওয়াফের ফজিলত সম্পর্কে ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, বাইতুল্লাহর চারদিকে তাওয়াফ করা নামাজ আদায়ের অনুরূপ। তবে তোমরা এতে (তাওয়াফকালে) কথা বলতে পারো। সুতরাং তাওয়াফকালে যে ব্যক্তি কথা বলে সে যেন ভালো কথা বলে। (তিরমিজি, হাদিস : ৯৬০)
তাওয়াফের সময় যার যেটা মনে চায় একান্তভাবে আল্লাহ তায়ালার সামনে পেশ করতে পারে।
তাওয়াফ করার সময় এই দোয়াগুলো এমনভাবে পড়া উচিত যেন অন্য কারো সমস্যা না হয়। এ সময় উচ্চস্বরে দোয়া-দরূদ পড়া ও জিকির-আজকার করা ঠিক নয়। কেউ তাওয়াফের সময় উচ্চস্বরে দোয়া-দরূদ পড়লে তা সুন্নাহ পরিপন্থী আমল হিসেবে গণ্য হবে।
এছাড়া তাওয়াফের সময় উচ্চস্বরে দোয়া-দরূদ পড়লে এতে অন্য তাওয়াফকারীদের একাগ্রতা নষ্ট হয় এবং অনেকের আমলে বিঘ্নতা ঘটে। আর কারো আমলে বিঘ্নতা ঘটানো নিষিদ্ধ।
তাওয়াফ গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। এ সময় খুশু-খুযু তথা একগ্রতা ও মগ্নতার সাথে থাকা উচিত। তাওয়াফসহ হজের সকল আমল আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণে হওয়া উচিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
خُذُوا عَنِّي مَنَاسِكَكُمْ
তোমরা আমার থেকে হজের বিধান ও নিয়মাবলি শিখে নাও। (সুনানে কুবরা, বাইহাকী ৫/১২৫)
তাওয়াফের সময় উচ্চস্বরে বা সমস্বরে দোয়অ-দরূদ ও জিকির করার কোনো প্রমাণ হাদীস-আছারে পাওয়া যায় না। এটি সুন্নাহসম্মত আমল নয়; বরং তা বিদআত। তাই তাওয়াফের সময় উচ্চস্বরে দোয়া-দরূদ পড়ার পদ্ধতি বর্জনীয়।