লন্ডনের দৃষ্টিনন্দন ৭ মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার

লন্ডনে অনেক মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার আছে। মসজিদগুলো মুসল্লিদের উষ্ণ অভ্যর্থনার স্থান হয়ে উঠেছে এবং স্থানীয় সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
প্রতিটি মসজিদের রয়েছে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও বিশেষ তাৎপর্য। মসজিদগুলো এমন জায়গায় অবস্থিত, যেখানে আশেপাশেই রয়েছে দারুণ সব পর্যটনকেন্দ্র।
লন্ডন ভ্রমণের সময় আপনি অবশ্যই ঘুরে আসতে পারেন এমন ৭টি মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার সম্পর্কে জেনে নেই—
১. লন্ডন সেন্ট্রাল মসজিদ

লন্ডন সেন্ট্রাল মসজিদ লন্ডনের অন্যতম ঐতিহাসিক ও জনপ্রিয় মসজিদ । এর সোনালি গম্বুজ ও স্থাপত্যশৈলী একে সহজেই আলাদা করে তোলে। ১৯৭৭ সালে মসজিদটি উদ্বোধন করা হয় এবং এতে একসঙ্গে ৫ হাজারেরও বেশি মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।
মসজিদটি ‘রিজেন্টস পার্ক মসজিদ’ নামেও পরিচিত। কারণ এটি রিজেন্টস পার্কের কাছাকাছি অবস্থিত—যেখানে রয়েছে বিশ্বের প্রাচীনতম আউটডোর থিয়েটার, লন্ডন চিড়িয়াখানা ইত্যাদি।
আরও পড়ুন
২. ইস্ট লন্ডন মসজিদ
ইস্ট লন্ডন মসজিদ লন্ডনের অন্যতম বৃহৎ ও সুপ্রতিষ্ঠিত ইসলামিক সেন্টার। এর বিশাল নামাজঘরে প্রায় ৭ হাজার মুসল্লি একসাথে নামাজ পড়তে পারেন।
এখানে ফুল-টাইম প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি স্কুল রয়েছে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য। নারীদের জন্য রয়েছে বিনামূল্যে পেশাদার কাউন্সেলিং। এ ছাড়া, ইসলামিক জ্ঞান ও নব মুসলিমদের সহায়তায় নিয়মিত আয়োজন করা হয় বিভিন্ন কর্মসূচি।
এখানে আপনি এক ভিন্নধর্মী শিল্প অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারেন। কাছেই রয়েছে টাওয়ার অব লন্ডন ও টাওয়ার ব্রিজ।
৩. সুলায়মানিয়ে মসজিদ

যদি আপনি লন্ডনের লোকাল মার্কেট ভ্রমণ করেন, তাহলে সুলায়মানিয়ে মসজিদ ঘুরে দেখতে পারেন। এটি ব্রডওয়ে মার্কেট ও কলম্বিয়া রোড ফ্লাওয়ার মার্কেটের কাছে অবস্থিত।
তুর্কি কমিউনিটির নির্মিত এই মসজিদটিতে উসমানীয় স্থাপত্যশৈলী ও আধুনিক নকশার অপূর্ব মিশ্রণ ঘটেছে। ভেতরের মার্বেল দেয়াল ও বিশাল ঝাড়বাতি দর্শকদের মুগ্ধ করবে।
এই মসজিদ শুধু নামাজের জায়গা নয়, বরং ইসলামী শিক্ষা ও বিভিন্ন সেবার কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত।
৪. ব্রিক্সটন মসজিদ
ব্রিক্সটন মসজিদ বাইরে থেকে তেমন আকর্ষণীয় নাও মনে হতে পারে, তবে ভেতরের পরিবেশ মুগ্ধতা তৈরি করে।
নামাজের পাশাপাশি মসজিদটিতে আছে শিশু-কিশোরদের ইসলামি শিক্ষার ব্যবস্থা এবং এখানে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নিয়মিত দ্বীন শিক্ষা সেশন আয়োজন করা হয়।
ব্রিক্সটন সাংস্কৃতিকভাবে লন্ডনের সমৃদ্ধ একটি এলাকা।
৫. ওয়েস্ট লন্ডন ইসলামিক সেন্টার

ওয়েস্ট লন্ডন ইসলামিক সেন্টার একটি বড় ও প্রাণবন্ত মসজিদ এবং কমিউনিটি সেন্টার। এর পরিবেশ, সুযোগ-সুবিধা, পারিবারিক পরামর্শ সেবা, তরুণদের কার্যক্রম সবই খুব চমৎকার।
এর কাছাকাছি দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আছে, রয়েল বোটানিক গার্ডেনস, ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম, নটিং হিল, ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম ইত্যাদি।
আরও পড়ুন
৬. ফিন্সবুরি পার্ক মসজিদ
ফিন্সবুরি পার্ক মসজিদ (নর্থ লন্ডন সেন্ট্রাল মসজিদ নামেও পরিচিত) ১৯৬০-এর দশকে এটি একটি ছোট নামাজঘর ছিল। পরে ১৯৯৪ সালে এটি পাঁচতলা বিশিষ্ট একটি বিশাল মসজিদে রূপ নেয়।
এখানে মুসলমানদের জন্য বিভিন্ন রকম সেবা, কার্যক্রম ও কমিউনিটি ইভেন্ট আয়োজিত হয়।
এটি ফিন্সবুরি পার্কের কাছে অবস্থিত—যেখানে আছেছে হ্রদ, মিউজিক ফেস্টিভাল, বহুজাতিক খাবারের দোকান, আউটডোর জিম এবং হাঁটার পথ। কাছেই আছে আর্সেনাল ফুটবল ক্লাবের ঘর—এমিরেটস স্টেডিয়াম।
৭. আজিজিয়ে মসজিদ

ইউকে তুর্কিশ ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশনের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয়েছে স্টোক নিউইংটনে অবস্থিত আজিজিয়ে মসজিদ। মসজিদটি তুর্কি স্থাপত্যের নিদর্শন বহন করছে। ১৯১৪ সালে
প্রথমে প্রথমে এখানে একটি থিয়েটার নির্মিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে এটি মসজিদে রূপান্তর করা হয়।
এর নীল রঙের ছোঁয়া, নকশা করা টাইলস এবং অটোমান প্রভাব বিশেষভাবে চোখে পড়ে।
এর কাছাকাছি দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আছে ক্লিসল্ড পার্ক, ওয়েস্ট রিজার্ভ ওয়াটার স্পোর্টস সেন্টার।
সূত্র : হালাল ট্রিপ
এনটি