একজন মুসলিমের নতুন বছরের সূচনা যেমন হবে

নতুন বছর মানেই সময়ের একটি নতুন অধ্যায়। ক্যালেন্ডারের পাতা বদলের সঙ্গে সঙ্গে একজন মুসলিমের জীবনেও বদলের আহ্বান আসে। তবে এই পরিবর্তন উৎসব, উচ্ছৃঙ্খলতা কিংবা আত্মভোলা আনন্দে নয়, বরং আত্মশুদ্ধি, আত্মসমালোচনা ও আল্লাহমুখী নতুন যাত্রায় শুরু করা উচিত। কারণ মুসলিমের কাছে সময় নিছক গণনার বিষয় নয়; সময় আল্লাহর আমানত, যার প্রতিটি মুহূর্তের হিসাব দিতে হবে।
একজন মুসলিমের নতুন বছরের সূচনা হওয়া উচিত ‘মুহাসাবা’ বা আত্মসমালোচনার মাধ্যমে। গত বছরে কী করেছি, কী করতে পারিনি, কোথায় গাফিলতি হয়েছে, নিজের কাছে এসব প্রশ্ন করা জরুরি। নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া, যিকির ও চরিত্র গঠনে কতটা অগ্রগতি হয়েছে, এ হিসাবই নতুন বছরের প্রথম পাঠ হওয়া উচিত।
মানুষ ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। তাই নতুন বছরের সূচনা হওয়া উচিত তওবার মাধ্যমে। আল্লাহ তায়ালা তাওবা গ্রহণকারীকে ভালোবাসেন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন। (সুরা বাকারা, আয়াত: ২২২)। অতীতের গুনাহ থেকে ফিরে এসে নতুন বছরের প্রথম দিন আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া একজন মুমিনের সবচেয়ে বড় অর্জন হতে পারে।
একজন মুসলিমের নতুন বছরের সূচনায় থাকতে হবে নিয়মিত ইবাদতের অঙ্গীকার। নামাজে গাফিলতি, কোরআন থেকে দূরে থাকা কিংবা হারাম থেকে বাঁচতে অবহেলা, এসব ত্যাগ করার দৃঢ় সংকল্প নিতে হবে। নতুন বছর হোক ফরজের পাশাপাশি নফল ইবাদতে যত্নবান হওয়ার সুযোগ।
নতুন বছরে পরিবার, প্রতিবেশী, সহকর্মী, সবার সঙ্গে উত্তম আচরণ, সত্যবাদিতা ও আমানতদারির চর্চার প্রতিজ্ঞা করা উচিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে উত্তম সে, যার চরিত্র উত্তম। (বুখারি)।
দুনিয়া ও আখিরাতের ভারসাম্য রক্ষার প্রতিজ্ঞার মাধ্যমে একজন মুসলিমের নতুন বছরের সূচনা হওয়া উচিত । দুনিয়ার দায়িত্ব পালন করতে হবে, তবে আখিরাতকে ভুলা যাবে না। সময়ের সঠিক ব্যবহার, হালাল রিজিকের চেষ্টা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টিকে জীবনের মূল লক্ষ্য বানানোই মুসলিম জীবনের সার্থকতা।
সবশেষে বলা যায়, নতুন বছর একজন মুসলিমের কাছে উদযাপনের নয়, বরং নিজেকে নতুন করে গড়ে তোলার সুযোগ। যে বছর আল্লাহর নৈকট্য বাড়ায়, গুনাহ কমায় এবং চরিত্রকে সুন্দর করে সেই বছরই একজন মুমিনের জন্য প্রকৃত নতুন বছর।
এনটি