সিডন্সের ক্লাসে বোলার সংকটে তামিম, হেরাথের উইকেট উদযাপন

আগের দিনে রোমাঞ্চকর এক জয়ের পর বুধবার রাতেই জানিয়ে দেওয়া হয়, বৃহস্পতিবার ঐচ্ছিক অনুশীলন বাংলাদেশ দলের। যারা প্রথম ওয়ানডের একাদশে ছিলেন না, শুধু তারাই এ অনুশীলন করবেন। তবে মুশফিকুর রহিম যে অনুশীলনে আসবেন, সে নিয়ে সংশয় ছিল না কারো। যথারীতি সবার আগে হাজির মুশফিক। সঙ্গে ইয়াসির আলি রাব্বির আর অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তারা সবাই আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের একাদশে ছিলেন।
একাদশে থাকা তিন ক্রিকেটারের সঙ্গে অনুশীলনে এসেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদুল হাসান জয়, এবাদত হোসেন এবং নাসুম আহমেদ। বাকিরা হোটেলে ছুটির মেজাজে ছিলেন। তবে অনুশীলনে উপস্থিত কোচিং স্টাফের প্রতিটি সদস্য। ছিলেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ দুজন, হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, ফিল্ডিং কোচ রাজিন সালেহ, ট্রেনার ট্রেভর নিক লি, ফিজিও বায়জিদুল ইসলাম। সব থেকে সরব যিনি ছিলেন, তিনি দলের নতুন ব্যাটিং পরামর্শক জেমি সিডন্স।
বলা যায়- আজকের এই সেশনই ছিল সিডন্সের, এক নেট থেকে আরেক নেট। দৌড়োদৌড়িতে সময় গেছে তার! আজ সিডন্সের বিশেষ ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন শান্ত, তামিম, রাব্বি, মুশফিক আর এবাদত। ব্যাট হাতে নেননি জয় আর নাসুম। আগের ম্যাচে অভিষেক হাওয়া রাব্বি রানের খাতা খুলতে পারেননি, এ দিন তার অনুশীলনে ছিল বাড়তি মনোযোগ। সিডন্স হাতে ধরে দেখাচ্ছিলেন ঠিক কোথায় সমস্যা হচ্ছে তার। পরে কোচের অভিবাদনও পেয়েছেন রাব্বি।
সিডন্সের ক্লাসে একটু বেশিই সময় পেয়েছেন শান্ত আর তামিম। আগের ম্যাচে একাদশে সুযোগ না পাওয়া শান্ত এদিন নেটে ব্যাট করার সময় টাইমিংয়ে গড়বড় করে ফেলছিলেন, হাতে ধরে দিয়ছেন সিডন্স পেসারদের খেলার কৌশল। তবুও যেন ঠিকঠাক হচ্ছিল না শান্তর, কয়েক দফা এগিয়ে গিয়ে সমস্যা ধরিয়ে দিলেন সিডন্স। এরপর দারুণ একটি কাভার ড্রাইভ শান্তর, সিন্ডন্সের উচ্ছ্বাস। হাততালি দিয়ে জানালেন, ‘তুমি চার রান পেয়ে গেছ।’
শান্ত গড়বড় পাকিয়েছেন লেগ স্পিনের বিপক্ষেও। স্লগ সুইপগুলো ঠিকঠাক হচ্ছিল না। তখন নেটে দাঁড়িয়ে দুই লেগি রিশাদ হসেন আর আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বোলিং দেখছিলেন স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ। বাঁহাতি লেগ স্পিন শান্তর কাছে অফ স্পিন হয়ে যায়। রিশাদের অফ স্টাম্পের বাইরের একটি বল লাইন মিস করে বোল্ড হন শান্ত, পরের বলেই বিপ্লবের বল লাগে তার প্যাডে। আবেদন করলে আম্পায়ারের ভূমিকায় থাকা হেরাথ আঙুল তুলে জানিয়ে দেন, এটি আউট।
ঐচ্ছিক অনুশীলন থাকায় এদিন নেটে ছিল বোলার সংকট। নাসুম আর এবাদত মাঠে এলেও বল হাতে নেননি। ছিল না বাঁহাতি কোনো স্পিনার। অনেকটা বাধ্য হয়েই দীর্ঘ সময় ধরে মুশফিককে বল করেন হেরাথ। ২০১৮ সালে সব ধরণের ক্রিকেটকে বিদায় বলা এই কিংবদন্তি স্পিনার এদিন আরো একবার মাতলেন উইকেটে পাওয়ার আনন্দে। হেরাথের লেন্থ বল খেলতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দেন মুশফিক। সে ক্যাচ নিয়ে যেন ইমরান তাহির বনে গেলেন হেরাথ, তার দৌড় আর থামায় কে!
মাহমুদুল হাসান জয় এদিন ব্যাট হাতে নেননি। বোলারের অভাবে পুরোদস্তুর অফ স্পিনার হয়ে গেলেন তিনি। শান্ত, রাব্বিকে টানা বল করে গেলেন এই তরুণ।
তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, সাকিব আল হাসানরা না থাকায় বোলার সংকটে শুধু সাইড আর্ম থ্রোয়ার দিয়ে কাজ সারেন তামিম। প্রিয় শিষ্য তামিম নেটে আসার পর দৌড়ে এলেন সিডন্স। উইকেট দিয়ে ক্রিজে ছক কষে যেন বুঝিয়ে দিলেন, এই লেন্থের বল এদিকে এভাবে খেলবে, এখানে পেলে ওদিকে খেলবে। কখনো নেটের পিছনে, কখনো সামনে, কখনো পাশ থেকে তামিমের কৌশলগুলো ধরিয়ে দিচ্ছিলেন সিডন্স।
তামিমের নেটে বোলার না থাকায় পরে থ্রোয়ারদের থামিয়ে নক করতে থাকেন তিনি। পরে ড্রেসিংরুম থেকে শান্ত আর নাসুম বেরিয়ে এলে বল করার প্রস্তাব দেন। শান্ত তখনো প্যাড পায়ে। সেই প্যাড খুলে নেমে পড়লেন বল হাতে। তার আগেই অবশ্য এগিয়ে এসেছেন খালেদ মাহমুদ, তিনি ব্যাটিংয়ের কৌশল ধরিয়ে দেন তামিম-শান্তকে।
টিআইএস/এটি/এনইউ
