জামালের জয়রথ থামাল ঢাকা আবাহনী

আগের পাঁচ ম্যাচে হারেনি শেখ জামাল। ষষ্ঠ ম্যাচে এসে ড্র করল শেখ জামাল। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ঢাকা আবানীর সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে শেখ জামাল। পিছিয়ে পড়েও ঢাকা আবাহনীর সঙ্গে ড্র করে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে ধানমন্ডির দলটি। ম্যাচটি বেশ প্রতিদ্বদ্বিতাপূর্ণ ছিল। আবাহনী ও শেখ জামাল উভয় দলের একজন খেলোয়াড় লাল কার্ড দেখেছেন। মাচের চারটি গোলই করেছেন দু’দলের বিদেশি ফুটবলার।
শেখ জামাল প্রথম ড্রয়ের মুখ দেখলেও তৃতীয় ড্র ঢাকা আবাহনীর। এ ড্রয়ে ঢাকা আবাহনী শিরোপা দৌড়ে কিছুটা পিছিয়ে পড়ল। ৭ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ১৫। অন্যদিকে কিংসের সমান ম্যাচে ২১। শেখ জামাল এক ম্যাচ কম খেলে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে।
উড়ন্ত শেখ জামালকে মাটিতে নামিয়ে আনতে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল আকাশী হলুদ শিবির। যার ফল তারা পেয়ে যায় ম্যাচের মাত্র ১৩ মিনিটে। রায়হানের লম্বা থ্রোয়ে মাসিহ সাইঘানির হেড শেখ জামালের এক খেলোয়াড় ফেরালে বক্সের বাইরে বল পান সোহেল রানা। তার নেয়া বাঁ পায়ের শট বেলফোর্টের ব্যাকহিলে পোস্টের কোলঘেঁষে জালে জড়িয়ে যায় (১-০)।
গোল শোধ করে ম্যাচে সমতা আনতে খুব বেশি দেরি করেনি শেখ জামাল। মিনিট ছয়েক পর মাঝমাঠ থেকে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে জোনোভ ওটাবেক দ্রুতগতিতে এগিয়ে যান। আবাহনীর তিন ডিফেন্ডারের মাঝখান দিয়ে তার থ্রু পাস খুজে নেয় সুলাইয়মান সিল্লাহকে। বক্সের মধ্যে ঢুকে ঠান্ডা মাথায় ডান পায়ের প্লেসিং শটে আবাহনীর গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেলকে পরাস্ত করেন এ গাম্বিয়ান (১-১)।
২২ মিনিটে নিশ্চিত সুযোগ মিস করেন বেলফোর্ট। রাফায়েলের পাস শেখ জামালের শাকিল আহমেদ বলে পা লাগাতে পারেননি। বল চলে যায় বেলফোর্টের কাছে। তার সামনে ছিলেন শুধুই জামালের গোলকিপার জিয়াউর রহমান। কিন্তু জিয়ার বরাবর শট মেরে সুযোগ নষ্ট করেন হাইতির এ ফরোয়ার্ড। ৩৫ মিনিটে বক্সের খুব কাছে ফ্রান্সিসকোকে ফেলে দেন জামালের আলাউদ্দিন। রেফারি নয়ন ফ্রি কিকের বাঁশি বাজান।
গোল হওয়ার মতো জায়গা থেকে দুর্বল সেট পিস নেন রাফায়েল। মিনিট দু’য়েক পরেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন দু’দলের খেলোয়াড়রা। বল নিয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাওযার চেষ্টা করা সোহেল রানা জামালের সলোমন কিংয়ের সঙ্গে হালকা ধাক্কা লাগলে পড়ে যান। ঘটনার সূত্রপাত তখন থেকেই। কর্নার পায় আবাহনী। বক্সের মধ্যে ঢুকে জুয়েল রানা ডান হাত দিয়ে ধাক্কা দিলে পড়ে যান সলোমন কিং। দু’দলের খেলোয়াড়রা হাতাহাতিতে জড়ায়। মাটি থেকে ওঠে এসে সলোমনও ধাক্কা মারেন জুয়েল রানাকে। উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। উভয় দলের ফুটবলারদের মধ্যে শুরু হয় তর্ক। খেলা বন্ধ থাকে প্রায় পাঁচ মিনিটের মতো।
শেষ পর্যন্ত সহকারী রেফারির সঙ্গে কথা বলে রেফারি নয়ন শেখ জামালের সলোমন কিং ও আবাহনীর জুয়েল রানাকে লাল কার্ড দেখান। রেফারির সিদ্ধান্ত মেনে জুয়েল রানা চলে গেলেও তা মানতে না পেরে রেফারিকে ঘিরে ধরেন জামালের খেলোয়াড়রা।
কিছুক্ষণ তর্ক-বির্তকের পর সলোমন মাঠের বাইরে চলে গেলেও শেখ জামালের ডাগ আউটে উত্তেজনা ছড়ায়। একটু পর একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে জামালের ডাগ আউটে থাকা এক কর্মকর্তা রেফারির সঙ্গে তর্কে জড়ান। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি।
৪৬ মিনিটে লিড নেয় আবাহনী। বক্সের বাঁ প্রান্ত দিয়ে ঢুকে পড়া ডিফেন্ডার রায়হান হাসানের উড়ন্ত ক্রসে অনেকটা অরক্ষিত থাকা ফ্রান্সিসকো ডাইভ দিয়ে দর্শনীয় হেডে গোল করলে এগিয়ে যায় আকাশী হলুদ শিবির (২-১)। ৭২ মিনিটে ম্যাচে ফের সমতা আনে শেখ জামাল। সিল্লাহ’র সহযোগিতায় গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড ওমর জোবে দুর্দান্ত এক শটে গোল করেন (২-২)। শেষে ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়ে দল দু’টি।
এজেড/এটি/এনইউ