মোনেম মুন্নার চলে যাওয়ার ১৬ বছর
আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের প্রথম শিরোপাজয়ী দলের অধিনায়ক, দেশের বাইরের লিগে হ্যাটট্রিক লিগ ট্রফি, ঘরোয়া ফুটবলে রেকর্ড পারিশ্রমিক পাওয়া সহ আরো অনেক কিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে মোনেম মুন্নার নাম। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়কের আজ (১২ ফেব্রুয়ারি) ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী।
১৯৯৯ সালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার্থে সিঙ্গাপুর যান। সেখানেই কিডনিতে সমস্যা ধরা পড়ে। ২০০৫ সালের ২৬ জানুয়ারি গুরুতর অসুস্থ হলে মুন্নাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রায় তিন সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার পর ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।
মোনেম মুন্নার সঙ্গে আবাহনী ও ইস্টবেঙ্গলে একসঙ্গে দীর্ঘদিন খেলেছেন শেখ মোহাম্মদ আসলাম। মুন্নার প্রয়াণ দিবসে আবেগজড়িত কন্ঠে আসলাম বলেন, ‘মুন্নার মতো কুশলি ফুটবলার বাংলাদেশ সহসা আর পাবে না। অসাধারণ ডিফেন্ডার হলেও কলকাতায় সে মিডফিল্ডে দুর্দান্ত খেলে ইস্টবেঙ্গলকে চ্যাম্পিয়ন করেছে।’
মুন্না ফুটবলার হিসেবে যত বড় মাপের, মানুষ হিসেবে তার চেয়ে আরো বড় বলে মনে করেন মুন্নার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব মোহামেডানের কায়সার হামিদ, ‘আবাহনী-মোহামেডানের মধ্যে একটা বৈরিতা থাকলেও আমরা ভালো বন্ধু ছিলাম। মুন্না কত বড় মাপের ব্যক্তিত্ব, যারা কাছ থেকে মিশেছে, তারা সবাই স্বীকার করবে।’
বাংলাদেশ ফুটবলের অন্যতম সেরা কোচ গোলাম সারওয়ার টিপু অধিনায়ক মুন্নাকে দেখেন বিশেষভাবে, ‘আবাহনী অনেক ম্যাচে পিছিয়ে ছিল। ইনজুরি নিয়ে মুন্না মাঠে নেমে শুধু অধিনায়কত্ব দিয়ে দলকে জিতিয়েছেন। ফুটবলে অধিনায়কত্বও যে বড় ব্যাপার সেটা মুন্না প্রতিষ্ঠিত করেছে।’ ১৯৯৫ সালে মিয়ানমারের গ্র্যান্ড রয়েল চ্যালেঞ্জ কাপের ট্রফি জয় মুন্নার অধিনায়কত্বে।
১৯৮১ সালে পাইওনিয়ার ফুটবল দিয়ে মুন্নার ক্যারিয়ার শুরু। বেশির ভাগ সময় খেলেছেন আবাহনীতে। এ ছাড়া খেলেছেন শান্তিনগর, মুক্তিযোদ্ধা, ব্রাদার্স ইউনিয়নে। কলকাতার ইস্টবেঙ্গলে খেলেছেন ১৯৯১ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত খেলেছেন জাতীয় দলে। ১৯৯১ সালে ২০ লাখ টাকা সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকের রেকর্ড গড়েন মুন্না।
মোনেম মুন্নার ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শুক্রবার নানা কর্মসূচী রয়েছে মোনেম মুন্না স্মৃতি সংসদ ও পরিবারের সদস্যদের। মোনেম মুন্না স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জাতীয় ফুটবলার আজমল হোসেন বিদ্যুৎ বলেন, ‘সকালে মোনেম মুন্নার কবর জিয়ারত করা হবে। এরপর তার কবরস্থান থেকে মোনেম মুন্না স্মৃতি সংসদের কার্যালয় পর্যন্ত একটি শোক র্যালি হবে। বিকেলে কোরআন খতম ও দোয়ার আয়োজন করা হবে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে মুন্নার বাড়িতে পরিবারের পক্ষ থেকে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে।’
এজেড/টিআইএস