শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট প্রভাব ফেলেছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে

তীব্র অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সংকটে দিশেহারা শ্রীলঙ্কা। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও পণ্যসামগ্রীর তীব্র ঘাটতির ফলে বেশ বিপাকে পড়েছে দ্বীপদেশটি। শ্রীলঙ্কায় প্রতি কেজি চালের মূল্য প্রায় ৫০০ রুপি। এক কাপ চা বিক্রি হচ্ছে ৩০ রুপিতে। আপেলের কেজি ঠেকেছে ১ হাজারে। বিপর্যয়ের পড়া শ্রীলঙ্কার ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারে ভাঙন ধরেছে। জোট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন সংসদ সদস্যরা। এসব কিছু প্রভাব পড়েছে দেশটির ক্রিকেটে।
শ্রীলঙ্কার এমন ভঙ্গুর দশার খানিকটা আঁচ লেগেছে বাংলাদেশ ক্রিকেটেও। বাংলাদেশ হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) ইউনিটের শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার কথা ছিল। তবে এমন অবস্থায় বাংলাদেশকে আতিথেয়তা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড। শ্রীলঙ্কা সফরের সঙ্গে মাঠ সংকটে আয়ারল্যান্ড সফরও সম্ভব হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে এইচপি ইউনিটের চেয়ারম্যান নাঈমুর রহমান দুর্জয় বলেন, ‘আমাদের দুটি বিদেশ সফর ছিল- একটি আয়ারল্যান্ড, আরেকটি শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার অবস্থা আপনারা সবাই জানেন। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তারা এই সফর আয়োজন করতে পারছে না। সেটা স্বীকার করেছে। আয়ারল্যান্ডের সমস্যা হল ওদের মাঠে সংখ্যা খুব কম। করোনার কারণে জাতীয় দলের যা কিছু করতে পারেনি সেগুলোই এখন করতে চাচ্ছে। তাই ওরাও আমাদের আতিথেয়তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে।’
বিকল্প ভাবনার কথাও জানান দুর্জয়, ‘আমরা অন্যত্র চেষ্টা করছি। সিরিজ খেলতে না পারলেও যেন ভিন্ন কন্ডিশনে গিয়ে ক্যাম্প করা যায় সেই চেষ্টা করছি। এখানে আইসিসির হস্তক্ষেপের কিছু নেই। এটা দুই বোর্ডের আলোচনা। কোনো বোর্ড অপারগ হলে তো চাপ দিতে পারি না। ওরা কিন্তু বাতিল করে দেয়নি, স্থগিত করেছে, অর্থাৎ এ মুহূর্তে পারছে না।’
শ্রীলঙ্কা তাদের এই টালমাটাল অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবার ঋণ সহায়তা চেয়েছে। লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডকেও সাধ্যমত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় বিসিবি। প্রয়োজন পড়লে আবার শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের পাশে দাঁড়াবে টাইগার বোর্ড।
বিসিবি পরিচালক দুর্জয় বলছিলেন, ‘প্রভাব পড়া খুবই স্বাভাবিক। একটা দেশে যদি চলাচল না করা যায়, খাবারের সংকট থাকে, বিদ্যুৎ নেই এটাও একটা বড় ইস্যু। কী হবে এটা এখনও বলা যাচ্ছে না। জাতীয় দলের কথা বলতে পারব না। তারপরও একটা প্রভাব পড়ার শঙ্কা তো আছেই।’
সঙ্গে যোগ করেন দুর্জয়, ‘আগে যেহেতু করেছি, ভবিষ্যতেও করতে পারি। কিন্তু এখন ওদের যে অবস্থা, আসলে বোর্ডের পক্ষে পাশে দাঁড়ানো সম্ভব হবে না। ওরা এখন সরকারের কাছ থেকে সহায়তা চাচ্ছে। সেটা আরও অনেক বড় ব্যাপার। তবে হয়ত ক্রিকেটের ব্যাপারে আমরা করতে পারি। বাকিটা ক্রিকেট অপারেশন্স বিভাগ বললে ভালো।’
টিআইএস/এনইউ