উইন্ডিজকে চালকের আসনে রাখল বাংলাদেশ

সংক্ষিপ্ত স্কোর
উইন্ডিজ ৪০৯ (বোনার ৯০, জশুয়া ৯২, জোসেফ ৮২; রাহী ৯৬-৪, তাইজুল ১০৮-৪)
বাংলাদেশ ১০৫-৪ (তামিম ৪৪, মুশফিক ২৭; গ্যাব্রিয়েল ৩১-২)
ভুলের ম্যাচ। এ ছাড়া আর কী আখ্যা দেয়া যায় বাংলাদেশ উইন্ডিজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টটাকে? ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত ছিল এক পেসারের, এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে ব্যাটসম্যানদের ভুল। সব ভুলের এক ম্যাচে দ্বিতীয় দিন শেষেই চালকের আসনে উইন্ডিজ। উল্টোদিকে হার তো বটেই, ফলোঅনও চোখ রাঙানি দিচ্ছে বাংলাদেশকে।
ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শুরু থেকেই নখদন্তহীন ছিলেন বোলাররা। একপাশে আবু জায়েদ রাহী কিংবা মেহেদী হাসান মিরাজের সৃষ্টি করা চাপ অন্য দিক থেকে উবে যাচ্ছিল নাইম হাসান, তাইজুলদের লাগামছাড়া বোলিংয়ে।
তাতে যা হওয়ার তাই হয়েছে। সকালে এনক্রুমাহ বোনারকে ফেরানো গেলেও এরপর আলজারি জোসেফ আর জশুয়া দা সিলভার জুটি সেশনভর ছড়ি ঘুরিয়েছে বাংলাদেশের ওপর। ষষ্ঠ উইকেটে তাদের ১১৮ রানের জুটিতেই মূলত উইন্ডিজ চলে গেছে স্বাগতিকদের নাগালের বাইরে।
তাইজুল আর রাহী মিলে জশুয়া আর জোসেফকে ফিরিয়ে যতক্ষণে উইন্ডিজকে চেপে ধরেছেন, ততোক্ষণে বেশ দেরিই হয়ে গেছে। শেষমেশ ৪০৯ রানে ইতি ঘটে উইন্ডিজ ইনিংসের।
এরপর ব্যাটসম্যানরাও করেছেন একগাদা ভুল। সৌম্য সরকার ইনিংসের গোড়াতেই ফিরেছেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের নিরীহদর্শন এক বলে। উইন্ডিজ পেসারের করা ফুলার লেংথের বলটা খেললেন। পা বিন্দুমাত্র সরলো না, তাতে ঠিকঠাক ব্যাটে-বলেও হলো না। তালুবন্দি হলেন শর্ট মিড উইকেটে থাকা কাইল মেয়ার্সের হাতে।
নাজমুল হোসেন শান্তও ফিরেছেন ভুলের ফাঁদে পা দিয়ে। শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ড্রাইভিং লেংথের বলে শান্তকে আহ্বান জানাচ্ছিলেন তাড়া করার। তাতে সাড়া দিলেন শান্ত, ঘটলো বিপত্তি। তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলটা হলো অফস্ট্যাম্পের অনেক বাইরে, সৌম্যর মতো তারও বলের লাইনে পা এগোলো না, বলটা তার ব্যাটের কোণা ছুঁয়ে জমা হয় গালিতে থাকা বোনারের তালুতে। ১১ রানে দুই উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তখন ভুগছে।
এরপর ওপেনার তামিম ইকবাল আর মুমিনুল হকের ব্যাটিং আশা দেখাচ্ছিল বিপদ থেকে উদ্ধারের। কিন্তু সে আশাও টিকেনি মাত্র ১২ ওভার পর্যন্ত। তাদের ৫৮ রানের জুটি ভাঙে রাকিম কর্নওয়ালের হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা বলে। উচ্চতা আর উইকেট থেকে আদায় করা বাড়তি বাউন্স অধিনায়ক মুমিনুলকে চমকে দেয়, তার ব্যাটের কোণা ছুঁয়ে জমা হয় উইকেটরক্ষক জশুয়া দা সিলভার হাতে।
এরপর তামিমও ফেরেন ভুলের খাতায় নাম তুলে। আলজারির করা গুড লেংথের বল পড়তে ভুল করেন, ফ্রন্টফুটে থেকে মিড উইকেট দিয়ে খেলার চেষ্টা করেন। তাতে কাজের কাজ হয়নি কিছু, উল্টো তার দুর্বল শট জমা পড়ে শর্ট মিড উইকেটে থাকা শেন মোসেলের হাতে। মাত্র ৭১ রানে চার উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তখন ঘোর বিপদের প্রমাদ গুণছে।
তবে দিনের বাকি অংশে মিঠুন আলি আর মুশফিকুর রহিম মিলে আর কোনো বিপদ হতে দেননি। প্রায় বিশ ওভার খেলে তাদের অবিচ্ছিন্ন ৩৪ রানের ইনিংসই আপাতত কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে বাংলাদেশকে।
তবে দুই দিনে স্বাগতিকরা করেছে একগাদা ভুল। ফলে দ্বিতীয় দিনের শেষটা ৩০৪ রানে এগিয়ে থাকা উইন্ডিজ করেছে চালকের আসনে থেকেই।
এনইউ/এমএইচ/এটি
