অবৈধভাবে টাকা ওড়াচ্ছে পিএসজি-ম্যানসিটি, উয়েফাকে লা লিগার অভিযোগ

দলবদলের বাজারে শেষ কয়েক বছরে পিএসজি-ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে পেরে ওঠা দায়। ইউরোপের অন্যতম ধনী দুই ক্লাব যাকে চাইছে, দলে ভেড়াচ্ছে তাকেই। সিটি গেল মৌসুমে জ্যাক গ্রিলিশকে হাজার কোটি টাকা খরচে দলে ভেড়াল, এরপর চলতি দলবদলে আর্লিং হালান্ডকেও টানল দলে।
পিএসজি এই কিছুদিন আগেই কিলিয়ান এমবাপেকে দলে রেখে দেওয়ার দৌড়ে হারিয়েছে কিলিয়ান এমবাপেকে। তবে পিএসজি সিটি এই দাপটটা বৈধ উপায়ে দেখাচ্ছে না, উয়েফার বেধে দেওয়া ফিন্যানসিয়াল ফেয়ার প্লে আইন ভেঙেই এমন আধিপত্য বিস্তার করছে, এমন অভিযোগ এনেছে লা লিগা। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে উয়েফার কাছে অভিযোগও জানিয়েছে স্প্যানিশ লিগ কর্তৃপক্ষ।
আজ প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ম্যানসিটিকে নিয়ে ইউরোপের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থার কাছে অভিযোগটা গেল এপ্রিল মাসেই দিয়েছে লা লিগা কর্তৃপক্ষ। লা লিগা সভাপতি হ্যাভিয়ের তেবাস অবশ্য অনেক দিন ধরেই বলে আসছেন, ম্যানসিটি ও পিএসজি ‘বারবার ফিন্যানসিয়াল ফেয়ার প্লে’ নিয়ম ভেঙেই যাচ্ছে।
লা লিগার প্রকাশিত সেই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘লা লিগার অভিমত, এই পক্ষগুলো ফুটবলের বর্তমান টেকসই ব্যবস্থাকে বদলে দিচ্ছে, ইউরোপের সব ক্লাব ও লিগকে ক্ষতির মুখে ফেলছে। তাদের কাজ শুধু মার্কেটে মূল্যস্ফীতি ঘটানো, তারা এই কাজটা করে ফুটবল দ্বারা অর্জিত নয়, এমন টাকা দিয়ে।’
ম্যানসিটি এই মাসের শুরুতে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে আর্লিং হালান্ডকে দলে টেনেছে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা খরচ করে। পিএসজি গেল মাসে কিলিয়ান এমবাপের সঙ্গে নতুন চুক্তি করে। রিয়াল মাদ্রিদকে হতাশ করে পিএসজি থেকে যাওয়ায় এমবাপেকে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা বোনাসও দিয়েছে পিএসজি। আর সিটির সঙ্গে হালান্ডের চুক্তিতে বেতন-বোনাস ও এজেন্টের ফি মিলিয়ে খরচটা পেরিয়েছে ২৫০০ কোটি টাকা, এমন গুঞ্জন আছে ইউরোপীয় সংবাদ মাধ্যমে।
ইউরোপীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা উয়েফার নিয়মানুসারে ফিন্যানসিয়াল ফেয়ার প্লে নিয়মটা এমন, যেখানে ফুটবলীয় আয় যেমন খেলোয়াড় বিক্রি, ক্লাবের স্পনসরশিপ ও বিভিন্ন ব্যবসা ইত্যাদি থেকে পাওয়া টাকার একটা অংশ খরচ করতে হয় খেলোয়াড়দের ট্রান্সফার ফি আর বেতনের পেছনে। লা লিগার সন্দেহটা এখানেই।
তেবাস যেমন বললেন, সিটি আর পিএসজির এইসব অঙ্কে কেউ বিশ্বাস করে না। বিবৃতিটিতে বলা হয়, ‘লা লিগা বুঝতে পেরেছে যে ক্লাবগুলোর ব্যয় করা এইসব অর্থ নিয়মের বাইরে অর্থায়ন দ্বারা হয়েছে। হয় টাকাটা সরাসরি ক্লাবে এসেছে অথবা এমন সব স্পনসরশিপ বা চুক্তির মাধ্যমে হয়েছে যা বাজারের শর্ত মানেনি।’
পিএসজির বিরুদ্ধে শুধু উয়েফার কাছে অভিযোগ করেই ক্ষান্ত হবে না লা লিগা। ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড এরপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছেও অভিযোগ করবে স্প্যানিশ লিগ কর্তৃপক্ষ।
২০১৮ সালেও পিএসজি আর ম্যানসিটির বিরুদ্ধে উয়েফার ফিন্যানসিয়াল ফেয়ার প্লে নিয়ম ভাঙার অভিযোগ উঠেছিল। পিএসজি কোনো সমস্যায় পড়েনি তখন, তবে সিটি ২০২০ সালের শুরুতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিল। যদিও পরে তা নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে আপিল করে মুক্তি পায় সিটি।
এনইউ