১০ বছর দীর্ঘ প্রকল্পের ফসল এই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ

বাংলাদেশে নারী ফুটবলের পথচলা বেশ বন্ধুর। সেই বন্ধুর পথ পেরিয়ে নারী ফুটবলাররা এখন দক্ষিণ এশিয়ার সেরা। বাংলাদেশের নারীদের নিয়ে কাজটা বিশেষভাবে শুরু হয়েছিল ২০১২ সাল থেকে বলে মন্তব্য করেছেন বাফুফের নারী কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।
সাফ চ্যাম্পিয়ন নারী দল নিয়ে বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সংবাদ সম্মেলনে নারী কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেন, ‘কাজী সালাউদ্দিন ২০০৮ সালে নারী ফুটবলের চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই মূলত নারী ফুটবল নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। তবে পরিকল্পিতভাবে কাজ শুরু হয় ২০১২ সাল থেকে। সানজিদারা ২০১২ সালের প্রকল্পেরই ফসল।’
কিরণের সঙ্গে একমত পোষণ করে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন বলেন, ‘২০১২ সালে প্ল্যানের একটি আবাসিক ক্যাম্প হয়। সেই আবাসিক ক্যাম্প থেকে আমরা মেধাবী কয়েকজন খেলোয়াড় পাই। সেই খেলোয়াড়দের আমরা ধরে রেখেছি।’
২০১২-১৫ সাল পর্যন্ত সেই খেলোয়াড়দের নিজেদের অর্থায়নে পরিচালনা করেছেন বলে জানান মাহফুজা আক্তার কিরণ, ‘শুরুর দিকে নারী ফুটবলে কোনো স্পন্সর ছিল না। আমি ও সভাপতি টাকা দিয়ে ক্যাম্প চালিয়েছি। মেয়েদের খাবার, গিয়ার্সের জন্য অনেক অর্থ লাগত। সেগুলো আমরা নিজেরা কয়েক বছর দিয়েছি।’
২০১৬ সালে এএফসি অ-১৬ বাছাইয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরই মূলত বাফুফে এক নাগাড়ে দীর্ঘমেয়াদী ক্যাম্প পরিচালনা করে। সেই সময় ঢাকা ব্যাংক সহ আরো কয়েকটি আর্থিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান সহায়তা করেছে। ২০১৬ সালের পর থেকে নারী ফুটবলে বিশেষভাবে কাজ করছেন ব্রিটিশ টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলি। পল স্মলি নারী দলকে কঠিন পরিশ্রমের কথা বলতেন। সেই পরিশ্রমের ফসল আজ পেয়েছে বাংলাদেশ বলে মনে করেন ছোটন, ‘পল স্যার হার্ড ওয়ার্ক এন্ড হার্ড ওয়ার্কের কথা বলতেন। সেই হার্ড ওয়ার্ক করায় আজ চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব হয়েছে।’
বাংলাদেশ নারী দল সিনিয়র সাফে এবার চ্যাম্পিয়ন হলেও বয়সভিত্তিক পর্যায়ে বেশ কয়েকবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। জুনিয়র পর্যায়ে সফল দল কেন সিনিয়র পর্যায়ে ব্যর্থ সেই ব্যাখ্যা আজ পুনরায় দিয়েছেন কোচ ছোটন, ‘২০১৬ সালে ভারতের বিপক্ষে আমরা ফাইনাল খেলেছিলাম। সেখানে এই মারিয়া, মনিকাদের বয়স ছিল মাত্র ১৪-১৫। সেখানে ভারতের দেবীর বয়স ৩৪ এবং তার ক্যারিয়ারের বয়সই ছিল মনিকাদের চেয়ে বেশি। এই সময়ের ব্যবধানে আমাদের মেয়েরা আরো অভিজ্ঞতা ও পরিপক্বকতা অর্জন করায় আজ এই সফলতা পেয়েছি।’
এজেড/এনইউ