রনি জানেন, জাতীয় দলে ঢুকতে তার কী করতে হবে
সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ব্যাট হাতে রানের ফুলঝুরি ছুটিয়েছেন রনি তালুকদার। রংপুর রাইডার্সের এই ক্রিকেটার আসরজুড়েই প্রতিপক্ষ বোলারদের বেশ চাপে রেখেছেন। ১৩ ইনিংসে ৪২৫ রান করে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে আসর শেষ করেছেন এই ওপেনার।
টুর্নামেন্টজুড়ে ১২৯ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেছেন রংপুরের এই ওপেনার। তবে নিজে ভালো করলেও দল ফাইনালে খেলতে না পারায় আক্ষেপ থেকে গিয়েছে রনির মনে। ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে এমনটাই জানিয়েছেন রনি। এছাড়া জাতীয় দলে জায়গা পেতে নিজেকে নিজেই আরও ভালো খেলার তাগিদ দিয়ে রাখলেন এই ওপেনার।
প্রশ্ন: বিপিএলে ব্যাট হাতে রানের ফোয়ারা ছুটিয়েছেন, সবমিলিয়ে কেমন লাগল?
রনি: খুবই ভালো। বেশ উপভোগ করেছি, চেষ্টা ছিল দলের জন্য কনট্রিবিউট করার। সেটা পেরেছি আর কি।
প্রশ্ন: টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ভেবেছিলেন কি সেরা রান সংগ্রাহকের তালিকায় থাকবেন?
রনি: হ্যাঁ, টুর্নামেন্ট শুরুর আগে আমার একটা টার্গেট ছিল এক থেকে তিনের ভেতরে থাকার।
প্রশ্ন: সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় থাকতেই হবে, এমন চিন্তা আসল কিভাবে?
রনি: প্রথম আসছে আমার দলটাকে (রংপুর রাইডার্স) দেখে। দলটা ওভাবেই সাজানো হয়েছে আর দলের ম্যানেজমেন্ট, অধিনায়ক, কিংবা কোচ তারা আমাকে সেইভাবেই স্বাধীনতা দিয়েছে। তাদের বিশ্বাস ছিল আমার উপরে।
প্রশ্ন: রংপুরের মালিকপক্ষ থেকে কেমন সাপোর্ট পেয়েছেন?
রনি: অনেক। তারা অনেক সাপোর্ট করছে আমাকে, যা বলে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। চেষ্টা করেছি তাদের আস্থার প্রতিদান দিতে।
প্রশ্ন: তিন অর্ধ-শতকে আসরে রান করেছেন ৪২৫, ব্যক্তিগতভাবে কোন ইনিংসকে এগিয়ে রাখবেন?
রনি: দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে সিলেটের বিপক্ষে ৬৬ রানকে এগিয়ে রাখব। এছাড়া কুমিল্লার বিপক্ষে একটা ইনিংস রয়েছে। প্রতিটা ইনিংসই গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ছোট ছোট রানও দলের জন্য বড় ভূমিকা রাখে। আর একটা ইনিংস ছিল সিলেটের সঙ্গে তাদের মাঠে, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
প্রশ্ন: ফাইনাল খেলতে না পারার আক্ষেপ নিশ্চয় এখনও রয়ে গিয়েছে?
রনি: এটা তো অবশ্যই খারাপ লাগে। কারণ একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমি যত ভালোই খেলি না কেন দল যদি জিততে না পারলে সে ইনিংসের কোনো দাম থাকে না। মানে একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমার কাছে দল আগে। দলের জয়টাই মুখ্য বিষয়। কারণ আমরা খেলি দলের জয়ের জন্যই। দল হারলে এগারো জন ভালো খেললেও সেটার মূল্য আর থাকে না আমার কাছে। আর যদি ওই ম্যাচটা জিততে পারতাম তাহলে দৃশ্যটা অন্যরকম হতে পারত।
প্রশ্ন: ঘরোয়াতে পারফর্ম করেও জাতীয় দলে ডাক পান না। এই বিষয়ে কিছুটা আক্ষেপ রয়েছে কিনা?
রনি: আমি শুধু এটুকুই জানি আমাকে আরও ভালো খেলতে হবে। যারা এখন জাতীয় দলে খেলছে তারা অবশ্যই ভালো আমার থেকে। আর আমার যদি সেখানে খেলতে হয় তাহলে তাদের থেকে ভালো কিছু করতে হবে এবং সেখানেও ভালো খেলতে হবে।
প্রশ্ন: নতুন করে দলে সুযোগ পেয়েছেন তৌহিদ হৃদয়, তাকে কেমন লাগলো?
রনি: তৌহিদ অনেক সম্ভাবনাময়ী। ওকে আমি অরেকদিন ধরেই দেখছি, ও ভালো খেলছে। আশা রাখি সে যেন জাতীয় দলেও ভালো খেলে।
প্রশ্ন: রংপুরে খেলতে এসেছিলেন পাকিস্তানের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার শোয়েব মালিক। তার থেকে কিছু শিখেছেন কিনা বা ক্রিকেট নিয়ে কী ধরনের আলাপ হয়েছে?
রনি: শোয়েব ভাইয়ের সঙ্গে অনেক কথাই বলেছি আমার খেলা নিয়ে। তিনি অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। তার কাছ থেকে খেলা নিয়ে জানার চেষ্টা করেছি। সবসময় তার সঙ্গে কথা বলতাম যে কী করলে ভালো কিছু হবে। তিনিও আমার ব্যাটিং দেখে অনেক কথা বলেছেন। শোয়েব খুবই ফ্রেন্ডলি, সবার সঙ্গেই কথা বলে। যারাই রংপুর দলের বিদেশি ক্রিকেটার ছিল সবাই খুব বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল।
প্রশ্ন: নিয়মিত পারফর্ম করছেন ঘরোয়া লিগে। জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্নটা কি দেখেন না?
রনি: সেটা তো অবশ্যই রাখি, সবারই আশা থাকে। একজন খেলোয়াড় হিসেবে বুঝি, আমি দলে ঢুকতে আমার কী করতে হবে। এবার যখন বিপিএলটা ভালো হয়েছে চেষ্টা করব সামনের খেলাগুলোতেও এ ধারা বজায় রাখতে। ডিপিএল আছে, বিসিএল আছে ইসলামী ব্যাংকের হয়ে। এখন ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলতে চাই, দেখি কী হয় সামনে।
প্রশ্ন: আবারও প্রধান কোচ হয়ে ফিরছেন হাথুরুসিংহে। কী মনে হয়, কেমন করবে বাংলাদেশ দল?
রনি: অবশ্যই ভালো। হাথুরুসিংহে কোচ হিসেবে অসাধারণ। তার সময়ে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলেছি। আমরা ওয়ানডেতে সেসময় দুর্দান্ত করেছিলাম পরপর তিনটা সিরিজে। আমি আশা করি তার ফেরা আমাদের জন্য ভালোই হবে।
প্রশ্ন: সামনেই ইংল্যান্ড সিরিজ। কেমন করবে বাংলাদেশ দল?
রনি: ঘরের মাটিতে আমরা সবসময় শক্তিশালী দল। আমরা শেষ সিরিজেও ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে জিতেছি। আশা করছি ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও আমরা সিরিজ জিততে পারব।
এসএইচ/এনইআর