মোহামেডানকে হারিয়ে মৌসুম শুরু আবাহনীর

ঘরোয়া ফুটবলে অনেক ঘটনার জন্ম হয়েছে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে। আবাহনী-মোহামেডানের সেই অতীত এখন অনেকটাই ধূসর। ফেডারেশন কাপে দুই দলের প্রথম ম্যাচে দর্শক সর্বসাকুল্যে কয়েক শ’। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বির দ্বৈরথে জয় হলো ঢাকা আবাহনীরই। সাদা কালোদের উপর স্পষ্ট প্রভাব বিস্তার করে খেলেছে তারা। বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফেডারেশন কাপের ডি-গ্রুপের প্রথম ম্যাচে আকাশী-হলুদ শিবির ৩-০ গোলে হারায় মোহামেডানকে। ম্যাচে জুয়েল রানা দু’টি ও মাসিহ সাইঘানি একটি গোল করেন।
আফগানিস্তানের ডিফেন্ডার মাসিহ সাইঘানিকে ফের দলে নিয়ে ভুল করেনি ঢাকা আবাহনী। মোহামেডানের বিপক্ষে ম্যাচটা ছিলো তারই প্রমাণ। রক্ষণভাগে যেমন ছিলেন অতন্দ্র প্রহরী, ঠিক তেমনি ডিফেন্ডার হয়েও চমৎকার দর্শনীয় বাইসাইকেল কিকে গোল করান জুয়েল রানাকে দিয়ে।
করোনাকালে গ্যালারিতে দর্শক আসার অনুমতি দেননি আয়োজকরা। তবে ক্লাবের সমর্থকগোষ্ঠির মাঠে আসার অনুমতি ছিলো। আবাহনী ও মোহামেডানের ম্যাচ বলে অন্য দিনের তুলনায় সেই সংখ্যা কিছুটা বেড়েছিল। উত্তেজনার রেণু ছড়িয়েছিল উপস্থিত কিছু সংখ্যক দর্শকদের মধ্যেও। প্রিয় দলের আক্রমন তারা যেমন সরব ছিলেন, ভুল করলে গালমন্দ করতেও ছাড়েননি তেমনি।
ম্যাচের শুরু থেকেই অগোছালো ফুটবল খেলে দু’দল। কোনো পরিকল্পিত আক্রমন ছিল না। দু’দলই আগে রক্ষণ সামলানোর দিকেই মনযোগ ছিল বেশি। ফলে বল মাঝমাঠেই ঘুরপাক খাচ্ছিল বেশি। ৩১ মিনিটে গোলকিপার সুলতান আহমেদ শাকিলের কল্যানে বেঁচে যায় মোহামেডান। বাঁ প্রান্ত দিয়ে রুবেল মিয়ার মাইনাসে বক্সের মধ্যে বল পেয়েই বাঁ পায়ের প্লেসিং শট নেন বেলফোর্ট। তবে তার শটে বল চলে যায় মোহামেডান গোলকিপার হোসাইন সুজনের হাতে।
মিনিট দশেক পর রায়হানের থ্রোয়ে প্রথম গোলের আনন্দে মেতে ওঠে আবাহনী। ম্যাচের ৪১ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে রায়হানের উড়ন্ত থ্রোয়ে আফগান ডিফেন্ডার মাসিহ সাইঘানির হেড জড়িয়ে যায় মোহামেডানের জালে (১-০)। গত মৌসুমে এই আবাহনী ছেড়েই চেন্নাইয়ান এফসিতে খেলেছিলেন সাইঘানি। এবার তাকে আবারও নিয়ে আসে আবাহনী। নিজের প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে আলো ছড়ালেন এই আফগান। গোল করে এবং করিয়ে নিজের জাত চিনিয়েছেন তিনি।
গোলের পর দু’দলের খেলোয়াড়রা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে আবাহনীর সাদ উদ্দিন এবং মোহামেডানের আমির হাকিম বাপ্পির মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। রেফারি মিজানুর রহমান দু’জনকেই হলুদ কার্ড দেন।
মিনিট চারেক পর ফের উৎসবে মাতে আবাহনী। ম্যাচের ৪৫ মিনিটে নাবীব নেওয়াজ জীবনের পাস বক্সের মধ্যে পান সাইঘানি। তিনি চমৎকার বাইসাইকেল কিক নেন। চলন্ত বলে হেড করে লক্ষ্যভেদ করেন জুয়েল রানা (২-০)। প্রথমার্ধেই কোণঠাসা হয়ে পড়ে মোহামেডান।
ম্যাচের ৫৩ মিনিটে মোহামেডানের হতাশা আরও বাড়িয়ে দেন সেই জুয়েল। এবার গোলের মূল কারিগর রায়হান। তার উড়ন্ত থ্রোয়ে বক্সের মধ্যে বেলফোর্টের হেডে আসা বলে পা ছুঁইয়ে দেন জুয়েল (৩-০)। ম্যাচে এই মিডফিল্ডারের দ্বিতীয় গোল এটি। সময় গড়ালেও দু’চারটি আক্রমণ ছাড়া একটি গোলও শোধ দিতে পারেনি মোহামেডান। ফলে ৩-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ঢাকা আবাহনী।
এজেড/এনইউ