অধরা জয়ের খোঁজে ডানেডিনে বাংলাদেশ

একদিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের উন্নতির গ্রাফটা ঊর্ধ্বগামী। নিজেদের খেলা শেষ ৫ ওয়ানডের পাঁচটিতেই জিতেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তবে মিশন যখন নিউজিল্যান্ড, তখন কপালে চিন্তার ভাঁজ। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশ দল কয়েকটি ম্যাচ জিতেছে বটে, তবে স্বাগতিকদের বিপক্ষে পরিসংখ্যান মেলাতে গেলেই প্রাপ্তির খাতা শূন্য টাইগারদের। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি খানিক ভিন্ন। শনিবার টম লাথামারের দলের বিপক্ষে অধরা জয়ের খোঁজে নামবে তামিম ইকবালের দল।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ওদের বিপক্ষে তিন ফরম্যাটের কোনটাতেই জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ দল। ২০০১, ২০০৭, ২০১০, ২০১৭ এবং সবশেষ ২০১৯ দ্বিপাক্ষিক সিরিজ, প্রতিবারই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে সফরকারীদের। ২০১৫ বিশ্বকাপে একবার মুখোমুখি হয়েছিল দুদল, সেখানেও পরাজিত দলের নাম বাংলাদেশ। এবার সে খরা কাটানোর সুযোগ বাংলাদেশের দলের সামনে।
৩ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ২০ মার্চ (শনিবার) মুখোমুখি হবে দু-দল। ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায়। অধরা জয়ের খোঁজে নামা বাংলাদেশ দল এই সিরিজে পাবে না অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে। গোটা নিউজিল্যান্ড সফর থেকেই ছুটি নিয়েছেন তিনি। তবে সফরকারী শিবির স্বস্তি পেতে পারে এই ভেবে যে, স্বাগতিক দলের দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার কেন উইলিয়ামসন ও রস টেলর এ ম্যাচে থাকছেন না।
দুই দলের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটি আইসিসির ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের অন্তর্ভুক্ত। সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলে অবশ্য উপরের দিকেই অবস্থান টাইগারদের। করোনা সংক্রমণ শুরুর প্রায় সাড়ে ১০ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলতে নেমে ৩-০ ব্যবধানে জয় পায় তামিম ইকবালরা। এতে নামের পাশে জমা করে পূর্ণ ৩০ পয়েন্ট। উঠে যায় টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে।
অন্যদিকে সুপার লিগের ম্যাচে এখনো মাঠে নামা হয়নি নিউজিল্যান্ডের। নামের পাশে যোগ হয়নি কোন পয়েন্ট। ডানেডিনের প্রথম ওয়ানডে জিতে পয়েন্টের খাতা খুলতে চায় স্বাগতিকরা। অন্যদিকে বাংলাদেশ দলের চাওয়া জয়ের দেখা পাওয়া। ইউনিভার্সিটি ওভাল মাঠে বাংলাদেশ দলের অতীত স্মৃতি সুখকর নয়। আগের দুই ম্যাচের দুটিতেই হার টাইগারদের। প্রথমটি ২০১০ সালে, যেটি ৫ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ দল। পরেরটি ২০১৯ সালে ৮৮ রানে হার।
ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভাল মাঠটি আয়তনে ছোট। এ মাঠে আগে ব্যাট করা দলের গড় রান ২৬১, তবে শনিবারের ম্যাচটিতে আরও বড় রানের ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশ দলের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। মাঠের মতোই গ্যালারির আয়তনও বেশ ছোট। সর্বসাকুল্য সাড়ে ৪ হাজার মানুষ একসঙ্গে বসে মাঠের লড়াই উপভোগ করতে পারবেন। তবে মাঠের চারপাশ খোলা থাকায় তীব্র বাতাস থাকে সব সময়ই, সাথে কনকনে ঠান্ডা। ম্যাচে ভালো করতে হলে এই চ্যালেঞ্জ আগে জয় করতে হবে বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যান ও বোলারদের।
বাংলাদেশ দলের একাদশে খুব বেশি চমক দেখা যাবে না। শঙ্কা থাকলেও এ ম্যাচে টস করতে নামবেন অধিনায়ক তামিম। তবে অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে নিয়ে দোটানা আছে। তার পরিবর্তে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো করা মোহাম্মদ মিঠুনের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হতে পারে। দলের পেস শক্তি বাড়াতে দুই অলরাউন্ডার সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের থাকা অনুমেয়।
এদিকে ১৩ সদস্যের দল থেকে আগেই ছিটকে গেছেন রস টেলর। প্রথম ওয়ানডেতে থাকবেন না তিনি। ১২ জনের দলে খুব বেশি পরীক্ষা নিরীক্ষার সুযোগ নেই স্বাগতিকদের। অধিনায়ক টম লাথামের নেতৃত্বে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখার চ্যালেঞ্জ কিউইদের সামনে।
বাংলাদেশ দলের সম্ভাব্য একাদশ-
তামিম ইকবাল, লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, মোহাম্মদ মিঠুন, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ।
নিউজিল্যান্ড দলের সম্ভাব্য একাদশ-
মার্টিন গাপটিল, হেনরি নিকলস, ডেভেন কানওয়ে, টম লাথাম, উইল ইয়াং, জিমি নিশাম, ডেরেয়ল মিচেল, মিচেল স্যান্টনার, টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট ও কাইল জেমিসন।
টিআইএস/এটি/এমএইচ
