আবারও মন্ত্রণালয়ের কোর্টে বল ঠেলছে বাফুফে

চলতি বছরের বাকি পাঁচ মাসে ১৪টি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা রয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে)। বাফুফের হিসাবে এজন্য প্রয়োজন ৭ কোটি টাকার মতো। এজন্য ফিফা-এএফসি’র মাধ্যমে মিলবে প্রায় ৩ কোটি। ফলে আরও ৪ কোটি টাকার ঘাটতি বাজেট।
এই পরিমাণ অর্থের ঘাটতি পূরণে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে চিঠি দেবে বাফুফে। আজকের (১৭ জুন) জরুরি সভায় এমন সিদ্ধান্তই হয়েছে। সভা শেষে বাফুফের নির্বাহী সদস্য এবং মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জাকির হোসেন চৌধুরি বলেন, ‘এই বছরের বাকি সময়ের আন্তর্জাতিক খেলাগুলোর জন্য আমাদের অফিস একটি বাজেট করেছে। যার অঙ্ক প্রায় সাত কোটি টাকার মতো। এর মধ্যে ফিফা এবং এএফসি থেকে পাওয়া যাবে ৩ কোটি। বাকি অর্থের সংস্থানের জন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হবে। আমাদের সভায় এই সিদ্ধান্তই হয়েছে।’
বর্তমানে জাতীয় সংসদে চলছে বাজেট অধিবেশন। এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ গত বছর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় অনেক কম। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের বাজেট একেবারে খাতভিত্তিক। বাফুফে নির্বাহী কমিটির অনেকেই সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বাজেট প্রক্রিয়া সম্পর্কেও তারাও অবগত। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষে বাফুফের অনুরোধ মেটানো অনেক কষ্টসাধ্য জেনেও এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান জাকির, ‘ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আমাদের অভিভাবক সংস্থা। আমাদের অভাব বা প্রয়োজনটা তাদেরই আগে জানাব। তারা আমাদের চিঠি পাওয়ার পর নিশ্চয়ই একটা জবাব দেবে। এরপর আমরা বিকল্প ব্যবস্থা করব।’
৭ কোটি টাকার মধ্যে ফিফা-এএফসি’র মাধ্যমে সংস্থান হবে ৩ কোটি টাকার মতো। বাকি টাকা সরকারের কাছে চাইছে বাফুফে। তাহলে বাফুফে নির্বাহী কমিটির ফুটবল পরিচালনায় দায়িত্ব কী? এমন প্রশ্নে মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যানের উত্তর, ‘আমরাও স্পন্সর এবং বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ জোগাড়ের চেষ্টা করব। আমাদের কমিটির সিদ্ধান্ত ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে একটি চিঠি দেওয়া।’
গত মার্চে নারী ফুটবলে অলিম্পিক বাছাই খেলতে মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিল বাফুফে। অতি স্বল্প সময়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পক্ষে সেই টাকা প্রদান করা সম্ভব হয়নি। সরকারের অর্থ না পাওয়ায় নারী দলকে পাঠায়নি বাফুফে। আবার সরকারের কাছে অর্থ চাওয়ার মাধ্যমে কি সেরকম ঘটনারই পুনরাবৃত্তি! এই প্রসঙ্গে মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘না, সেরকম কিছু নয়। আমরা আগে থেকেই আর্থিক বিষয়ে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিয়েছি। এজন্য তিন মাস আগেই সভা হয়েছে।’
সাবিনাদের মিয়ানমারে না পাঠানোয় সে সময় সারাদেশে তুমুল সমালোচনা হয়েছিল। এর কিছুদিন পর বাফুফে জরুরি সভা করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও মন্ত্রণালয়ে নারী দলের জন্য বাজেট নিয়ে একটি চিঠি দেওয়ার কথা ছিল। দুই মাস পেরিয়ে গেলেও সেই চিঠি আর দেওয়া হয়নি। ফলে বাফুফের সভার কার্যকারীতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে রীতিমতো।
আজ বাফুফের জরুরি সভা ছিল আর্থিক বিষয়াদি নিয়ে। সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদী এতে সশরীরে ছিলেন না। যদিও তিনি জুমে সংযুক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছেন নির্বাহী সদস্য এবং মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জাকির হোসেন চৌধুরি। ব্রিফিংয়ের সময় জাকিরের সঙ্গে ছিলেন আরও চার সদস্য। বাফুফের নানা কর্মকান্ডে সহ-সভাপতিদের প্রাধান্যই বেশি পরিলক্ষিত। নির্বাহী সভার পর নির্বাহী সদস্যের মিডিয়া ব্রিফিং আজই প্রথম অনুষ্ঠিত হলো। আজকের সভায় দুই সহ-সভাপতি উপস্থিত থাকলেও ব্রিফিংয়ের সময় তারা ছিলেন না।
এজেড/এএইচএস