ভারতের বিপক্ষে আফগানিস্তানের লড়াকু পুঁজি

বাংলাদেশের কাছে শোচনীয় হারের স্মৃতি নিয়ে বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হয়েছে আফগানিস্তান। এদিনও (বুধবার) হাশমতউল্লাহ শহিদীর দলের শুরুটা ভালো ছিল না। এরপর অধিনায়ক শহিদী ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের দারুণ এক জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় আফগানরা। তবে শেষদিকে দ্রুত উইকেটের পতন তাদের বড় সংগ্রহের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। জসপ্রীত বুমরাহ’র বোলিং তোপে নির্ধারিত ওভার শেষে আফগানিস্তান ৮ উইকেটে ২৭২ রান সংগ্রহ করেছে।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দাপুটে এক জয়ে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল ভারত। অজিদের মাত্র ১৯৯ রানে আটকে দিয়ে ভারত জিতেছিল ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে। এমন সুখস্মৃতির অভিজ্ঞতা নেওয়া ভারতকে দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে আজ টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ে পাঠায় আফগানিস্তান। হয়তো তাদের লক্ষ্য ছিল— বড় সংগ্রহ নিয়ে ভারতকে তাদের বোলিং ফাঁদে আটকে ফেলা!
ব্যাট করতে নেমে দুই আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান ভালোই শুরু করেছিলেন। তবে প্রথম পাওয়ার-প্লে শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে যায় তাদের উদ্বোধনী জুটি। সপ্তম ওভারের চতুর্থ বলে জসপ্রীত বুমরাহকে খোঁচা দিতে যান ইব্রাহিম। তার আউটসাইড এডজ হওয়া বল ক্যাচ ধরেছেন ভারতীয় উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুল। ৪টি চারের বাউন্ডারিতে এই ওপেনার ২২ রান (২৮ বল) করেন।

এরপর ক্রিজে আসা রহমত শাহকে নিয়ে জুটি বড় গড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন গুরবাজ। তবে এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার তার ইনিংসটি লম্বা করতে পারেননি। ১৩ তম ওভারের চতুর্থ বলে হার্দিক পান্ডিয়াকে পুল করেন গুরবাজ। ডিপ ফাইন লেগে দাড়িয়ে থাকা শার্দুল ঠাকুর প্রথমে ছয় বাঁচান, বাউন্ডারি লাইন ছাড়িয়ে যাওয়ার আগে বলটি তিনি উপরের দিকে ছুড়ে দেন। এরপর সেটি আবার ক্যাচ বানিয়ে নেন শার্দুল। ৩ চার ও ১ ছক্কায় গুরবাজ করেন ২১ রান (২৮ বল)। দ্বিতীয় উইকেটে গুরবাজ-রহমতের জুটি ছিল ৩৭ বলে ৩১ রানের।
এরপর দলীয় ৬৩ রানেই বিদায় নেন রহমতও। শার্দুল ঠাকুরের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে তিনি ফেরেন মাত্র ১৬ রানে। ভারতীয় বোলিংয়ের চিন্তা বাড়িয়ে ১২১ রানের জুটি গড়েন শহিদী-ওমরজাই। ওমরজাইয়ের শুরুটা ধীরস্থির হলেও পরে তিনি বাউন্ডারির দিকে মনোযোগ দেন। চারের চেয়ে ছয় হাঁকানোতেই যেন তিনি বেশি পারদর্শী। ২টি চার ও ৪ ছক্কায় ৬৯ বলে তিনি ৬২ রানের ইনিংস খেলেন। রানের গতি আরও বাড়াতে গিয়ে ওমরজাই পান্ডিয়ার বলে বড় শট খেলতে যান, কিন্তু আউটসাইড এডজ হয়ে সেটি তার স্টাম্প ভেঙে দেয়।

ওমরজাই ফিরতেই রানের গতি কমতে থাকে আফগানদের। একপ্রান্তে সেট-ব্যাটসম্যান শহিদী সেঞ্চুরির দিকে এগোচ্ছিলেন, অন্যপ্রান্তে মোহাম্মদ নবির ব্যাটে একের পর এক বল ডট হতে থাকায় চাপ বাড়তে থাকে। ফলে ছন্দে থাকা শহিদীও খেই হারান। কুলদীপ যাদবের বল রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে আটকান আফগান অধিনায়ক। সেঞ্চুরি পাওয়া হলো না তার। ৮টি চার ও এক ছক্কায় শহিদী ৮০ রান (৮৮ বল) করেন।
শেষদিকে বুমরাহ একাই আফগান তিন ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন। টানা রানখরায় ভোগা নাজিবুল্লাহ জাদরান এদিন ফেরেন মাত্র ২ রানে। এছাড়া নবি ১৯, রশিদ খান ১৬ এবং মুজিব-উর-রহমান করেছেন ১০ রান।

ভারতের হয়ে ৩৯ রানে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন বুমরাহ। এছাড়া পান্ডিয়া দুই উইকেট, শার্দুল ও কুলদীপ শিকার করেন একটি করে উইকেট।
এএইচএস