দাবার চালে কাত এনএসসি!

গতকাল থেকেই গুঞ্জন ছিল স্থগিত হচ্ছে দাবা ফেডারেশনের নির্বাচন। আজ বিকেল নাগাদ সেই গুঞ্জনই সত্যি হয়েছে। দেশের সকল ফেডারেশনের নিয়ন্ত্রক সংস্থা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। ক্রীড়া নির্বাচন এই সংস্থা পরিচালনা করলেও অনেক সময় নানা চাপে এবং অনুরোধের ঢোক গিলতে বাধ্য হয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। হকি নির্বাচনে আগে-ভাগে জয়ী ঘোষণার পর এবার দাবা ফেডারেশন নির্বাচন স্থগিত নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী আজ ছিল মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ দিন। ৬০টির বেশি মনোনয়নপত্র বিক্রি করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাচন কমিশন। মনোনয়নপত্র প্রদানের খানিক পরেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক প্রশাসন ও দাবা ফেডারেশনের নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার শেখ হামিম হাসান অনিবার্য কারণবশত নির্বাচন স্থগিত এবং পরবর্তীতে পুনরায় তফসিল প্রদানের নোটিশ জারি করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে অনিবার্যকারণ উল্লেখ থাকলেও নেপথ্যের মূল কারণ হিসেবে জানা গেছে, ক্রীড়া সংগঠকদের অনুরোধেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করেছে। ফুটবল, ক্রিকেট বাদে দেশের বাকি সব ফেডারেশনের নির্বাচনে মূল আকর্ষণ সাধারণ সম্পাদক পদ। ফেডারেশনগুলোর নির্বাচনের জয়-পরাজয়ের চাবিকাঠি জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের ( ফোরাম) উপরই মূলত। সেই ফোরাম গত প্রায় দুই সপ্তাহ যাবৎ দফায় দফায় সভা করেও সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম না কি নতুন প্রার্থী বর্তমান কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শোয়েব রিয়াজ আলম কাকে সমর্থন দেবে এ নিয়ে ঐক্যমতে পৌছাতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে শামীম এবং রিয়াজ আলম দুই জনই প্রার্থী হলে ফোরামের অবস্থা দাড়ায়, 'শ্যাম রাখি না কুল রাখি’ তাই অনেক দৌড়ঝাপ করে পরিস্থিতি আরো পর্যবেক্ষণ এবং নিয়ন্ত্রণ করতে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে বলে খবর বিশ্বস্ত সূত্রের।

সাধারণ সম্পাদক পদে সাধারণত অভিজ্ঞ-দক্ষ ক্রীড়া সংগঠকরারই মূলত প্রতিদ্বন্দিতা করেন। অনেক সাবেক খেলোয়াড়রাও প্রার্থী হন নানা ফেডারেশনের নির্বাচনে। তবে দাবা ফেডারেশনে এবার চমক ছিল বাংলাদেশ পুলিশের অ্যাডিশনাল ডিআইজি শোয়েব রিয়াজ আলমের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থিতা হওয়া নিয়ে। পেশাদার একজন ব্যক্তিকে একটি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক পদে সমর্থন নিয়ে জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠকরা প্রশ্ন তোলেন। আবার শোয়েবের পক্ষে মৌন সমর্থনও ছিল এক শীর্ষ নেতার। অন্য দিকে দাবাসংশ্লিষ্ট অনেকে আবার সৈয়দ শাহাবুদ্দিন আহমেদের সমর্থক। এমন দ্বিধাবিভক্ত পরিস্থিতিতে নির্বাচন স্থগিতের চেষ্টা করেছেন জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং ক্রীড়াঙ্গনের সাম্প্রতিক সময়ের দুই একজন নীতি নির্ধারক।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ নিয়ন্ত্রক সংস্থা হলেও ক্রীড়াঙ্গনে সেই অর্থে নিয়ন্ত্রণ নেই সরকারি এই সংস্থার। কখনো ফেডারেশনের শীর্ষ কর্তাদের আবার কখনো জেলা-বিভাগীয় কর্মকর্তাদের চাপে নানা কর্মকান্ড করতে হয়। ইতোপূর্বে হকি ফেডারেশনের নির্বাচনে ভেন্যু পরিবর্তন, নির্বাচন স্থগিত, ব্যাডমিন্টনে শূন্য ব্যালট সহ আরো অনেক উদাহরণের সঙ্গে যোগ হলো এই দাবার স্থগিততা।
এজেড/এইচজেএস