ভোটের ‘ছুটি’ নেই ফুটবলারদের

আগামী ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সারা দেশ জুড়েই এই নির্বাচন ঘিরে আলোচনা। ক্রীড়াঙ্গনের অনেকেই নির্বাচনে প্রার্থীও হয়েছেন। আবার এখানকার অনেকে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত। অথচ বর্তমান ফুটবলাররা পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা তো দূরের কথা, ভোটই দেওয়ার সুযোগ নেই সেই অর্থে!
নির্বাচনের পরপরই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের তৃতীয় রাউন্ড শুরু হবে। ১২ জানুয়ারির লিগের ম্যাচ উপলক্ষ্যে অনেক ক্লাবই অনুশীলন চালু রেখেছে। লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের ক্যাম্প কয়েকদিন বন্ধ রাখলেও আগামীকাল (শনিবার) থেকে আবার শুরু হচ্ছে। পরশু থেকে তাদের অনুশীলন হওয়ার কথা। তাই তপু-মোরসালিনদের ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
ফুটবলের উঠতি তারকা শেখ মোরসালিন ফরিদপুর-৪ আসনের ভোটার। প্রথমবারের মতো ভোটার হয়ে জাতীয় নির্বাচনে ভোট না দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই ফুটবলার, ‘আমি নিজ এলাকায় ভোটার (ফরিদপুর-৪)। অন্যদিকে, আগামীকাল রাতে ক্লাবে রিপোর্টিং। সামনে খেলা এবং শৃঙ্খলার বিষয় বিবেচনায় আমি আগামীকাল রাতের মধ্যে ক্যাম্পে যোগদান করব।’
কিংস ও জাতীয় ফুটবল দলের সিনিয়র ফুটবলার তপু বর্মণের ভোট দানের সম্ভাবনা অবশ্য খানিকটা থাকছে। তিনি নারায়ণগঞ্জের ভোটার হওয়ায় খানিকটা চেষ্টা করবেন ভোট দেওয়ার, ‘এখন পর্যন্ত জানি আমাদের কালকে থেকে রিপোর্টিং এরপর অনুশীলন। এই সূচি থাকলে ভোট দেওয়াটা কষ্টই হবে। এরপরও চেষ্টা করব যদি ৭ জানুয়ারি সুযোগ পাওয়া যায়।’
তপু বর্মণের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ হলেও অনেক ফুটবলার রাজধানী ঢাকা থেকে অনেক দূরে নিজ জেলার ভোটার। ফলে লিগে খেলা অনেক বড় অংশের ফুটবলারদের পক্ষেই ভোট প্রদান করা সম্ভব হবে না। দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহামেডানের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘এখন অনুশীলন একটা ছন্দে রয়েছে। এর আগে অনুশীলনে ছেদ ঘটলে প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটবে, এর প্রভাব ম্যাচেও পড়তে পারে।’
মোহামেডানের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা আবাহনী অনুশীলনে আরও বেশি মনোযোগী। লিগের প্রথম দুই ম্যাচে তাদের পয়েন্ট মাত্র এক। কিংসের চেয়ে তারা পাঁচ পয়েন্টে পিছিয়ে। তাই অনুশীলন বাতিলের কোনো সুযোগই নেই প্রিমিয়ার লিগের সবচেয়ে সফল এই দলটির। পুরান ঢাকার ক্লাব রহমতগঞ্জ আগে কোনো বিরতি পেলেই ক্যাম্প বন্ধ রাখতো। এখন এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসেছে তারাও। তাদের অনুশীলন চলছে। ১০ দলের লিগে দুই দল অবনমন হবে, তাই স্বল্প বাজেটের দলগুলো এই বিরতিতে ক্যাম্প বন্ধের পথে হাঁটেনি।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র ছিল না জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার। বছর দেড়েক আগে জাতীয় পরিচয়পত্র করায় তিনি এবার ভোটার। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ আসলেও, তিনি ইউরোপে থাকায় এই অধিকার আদায় করতে পারছেন না।
ফুটবলারদের বিপরীত চিত্র ক্রিকেটারদের। জাতীয় ক্রিকেটারদের অনেকেই সাকিব-মাশরাফির নির্বাচনী প্রচারণার অংশ নিয়েছেন। সাবেক তারকা ফুটবলার ও ফেডারেশনের কর্মকর্তারা নির্বাচনে প্রার্থী হলেও তারা কেউই বর্তমান ফুটবলারদের সম্পৃক্ত করেননি। সাবেক তিন তারকা ফুটবলার দেওয়ান সফিউল আরেফিন টুটুল, আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও আরিফ খান জয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন ফুটবল ফেডারেশনের দুই সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ ও আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিকও।
এজেড/এএইচএস