‘খারাপ লাগলেও কিছু করার নেই’
বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছিল দুর্দান্ত ঢাকা। তবে এরপর আর জয়ের দেখা পায়নি ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। ১২ ম্যাচে কেবল এক জয়ে বিপিএল ইতিহাসে লজ্জার নজির গড়ে আসর শেষ করেছে তারা। দলগত ভরাডুবি হলেও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে উজ্জ্বল ছিলেন ঢাকার বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। টুর্নামেন্টের শেষদিকে এসে সেরা পাঁচ রানসংগ্রাহকের তালিকায় দুজন আছেন ঢাকার। আর সেরা বোলারের তালিকাতেও আছেন দুজন।
আসরজুড়ে বল হাতে দ্যুতি ছড়িয়েছেন ঢাকার পেসার শরিফুল ইসলাম। বল হাতে ১২ ম্যাচে সংগ্রহ করেছেন ২২ উইকেট। যা টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট এখন পর্যন্ত। তালিকার দুইয়ে থাকা শেখ মেহেদী তার থেকে পিছিয়ে ৭ উইকেটের ব্যবধানে।
গতকাল আসরে নিজেদের শেষ ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের কাছে ১০ রানে হেরে ঢাকা দলের বিপিএল যাত্রা শেষ হয়েছে। আর বিপিএল শেষেই ঢাকাপোস্টের মুখোমুখি হয়েছিলেন পেসার শরিফুল ইসলাম। আলাপে উঠে এসেছে নিজের ব্যক্তিগত সাফল্য, দলের ব্যর্থতা ও অন্যান্য বিষয়। পাঠকদের উদ্দেশে তুলে ধরা হলো....
ঢাকা পোস্ট : বছরের শুরুটা দুর্দান্ত করলেন...
শরিফুল : আলহামদুলিল্লাহ। গতবছর শেষটা যেরকম হয়েছিল, এবছর শুরুতে তেমন কিছুর চেষ্টা করেছিলাম। ভালো সফলতা পেয়েছি। এটা আগামী দিনেও ধরে রাখার চেষ্টা করব।
ঢাকা পোস্ট : লম্বা সময় পর কিছুদিন বিশ্রাম পাচ্ছেন, স্বস্তি লাগছে কি না...
শরিফুল: জ্বি অবশ্যই, কারণ দেখেন সবসময় খেলা থাকলে কিন্তু বোরিং লাগে কিছুটা। যেহেতু পরিবার আছে খেলা শেষ এখন পরিবারের সাথে সময় কাটালে হালকা লাগে। সেক্ষেত্রে এই ফাঁকা সময়ে তো পরিবারের সাথেই থাকতে হবে।
ঢাকা পোস্ট : বিপিএলের শুরুতে কি ভেবেছিলেন সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকের তালিকায় থাকবেন, যদিও টুর্নামেন্ট শেষ হয়নি এখনও...
শরিফুল: না দেখেন এটা বলা মুশকিল। আমি ওরকম কিছুই ভাবিনি। যখন টুর্নামেন্ট শুরু করেছি চেষ্টা ছিল যে আমি আমার সেরাটা দিতে পারি। আর শেষ বছরটি যেমন শেষ করেছি ওরকম ফ্লোতেই যাতে খেলতে পারি এটাই চিন্তা ছিল।
ঢাকা পোস্ট : পাওয়ার প্লে নাকি ডেথ ওভার কোনটা বেশি এনজয় করলেন....
শরিফুল: দুইটাই এনজয় করেছি আসলে। তবে আলাদা করে যদি বলেন তাহলে পাওয়ার প্লেতে এনজয়ের কথা বলব। ডেথ ওভারেও উপভোগ করেছি অবশ্যই।
ঢাকা পোস্ট : ২২ উইকেটের মধ্যে আপনার কাছে স্পেশাল ছিল কার উইকেট...
শরিফুল: দেখেন একজন ক্রিকেটারের কিন্তু এটা বলা মুশকিল। আমার কাছে সবগুলো উইকেটই ভালো লেগেছে, প্রতিটি উইকেটই। কারণ একটা উইকেট নিতে কিন্তু অনেক কষ্ট হয়। যে কারণে কোনো উইকেটকে ছোট করে দেখব না। প্রতিটি উইকেটই খুবই ভালো লেগেছে।
ঢাকা পোস্ট : বল যেভাবে সুইং করিয়েছেন, কেমন লেগেছে...
শরিফুল : আপনি যখন একটা জিনিস নিয়ে অনুশীলন করবেন তখন যদি সেটা কাজে লাগে ভালো লাগে। আমি ওইভাবেই অনুশীলন করেছি, যে কারণে সফলতাও পেয়েছি।
ঢাকা পোস্ট : সুইংয়ের জন্য আলাদা করে কোনো কাজ করেছেন কি না...
শরিফুল: জ্বি অবশ্যই। আলাদা করে কাজ করেছি দেখেই তো এমন সুইং হয়েছে। দেশিদের মধ্যে খালেদ মাহমুদ সুজন স্যারের সঙ্গে কাজ করেছি। এছাড়া হাথুরুসিংহের সঙ্গেও কাজ করেছি। অ্যালান ডোনাল্ডের সঙ্গে সুইং নিয়ে কাজ করেছি। সবার সঙ্গেই মোটামুটি করা হয়েছে।
ঢাকা পোস্ট : বিপিএলে সর্বোচ্চ রান বা উইকেটশিকারি আপনার দলের, তবুও দল হিসেবে ব্যর্থতার কারণ কি...
শরিফুল: আসলে ক্রিকেট খেলা তো এগারোজন খেলে। টিম গেম হিসেবে আমরা ভালো করতে পারিনি। দলের হয়ে সবাই যদি ছোট ছোট কনট্রিবিউটও করতে পারত তাহলে আরও ভালো হতো। আমার মনে হয় আমরা এখানেই পিছিয়ে গেছি। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স দিয়ে তো ম্যাচ উইন সহজে হয় না। যে কারণে দলগত পারফরম্যান্স গুরুত্বপূর্ণ।
ঢাকা পোস্ট : যেভাবে পারফর্ম করলেন আবার সবার আগে ছিটকেও গেলেন খারাপ লাগা আছে নিশ্চয়ই...
শরিফুল: খারাপ লাগা থাকলেও আসলে কোনো কিছু করার নেই। কারণ এটা মেনে নিতে হবে। আমরা ভালো করতে পারিনি তাই বাদ পড়ে গেছি।
ঢাকা পোস্ট : অনেক বিদেশি ক্রিকেটার এসেছেন বিপিএল খেলতে, আলাদা করে কেউ বোলিংয়ের প্রশংসা করেছে কি না...
শরিফুল: হ্যাঁ, বাবর আজম ভাই বলেছে। ওনার সাথে কথা হয়েছে। বলেছে খুব ভালো হচ্ছে। ‘কন্টিনিউ করো’-এগুলোই। ওনি ভালো পরামর্শ দিয়েছেন বিদেশি ক্রিকেটার হিসেবে। এ ছাড়া যাদের সঙ্গে ফ্রি তারা সবাই এসে কথা বলেছে ভালো বলেছে।
ঢাকা পোস্ট : বিপিএলের পরপরই ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কা সিরিজ, কেমন পরিকল্পনা?
শরিফুল: এখনো পরিকল্পনা শুরু করিনি। যখন খেলার সময় আসবে বা হবে যখন অনুশীলন শুরু করব তখন থেকেই শুরু করব পরিকল্পনা ইনশাআল্লাহ।
এসএইচ/এফআই