আবাহনীর জয়ের দিনে মোহামেডানের বড় হার

ঘরোয়া হকিতে মৌসুমের প্রথম বড় ম্যাচ ছিল আজ। বিকেলে মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে মোহামেডান-মেরিনার্স আর সন্ধ্যায় আবাহনী-উষা মুখোমুখি হয়। ঐতিহ্যবাহী আবাহনী ৬-২ গোলে উষার বিপক্ষে জিতলেও মোহামডোন ১-৫ গোলে হেরেছে মেরিনার্সের বিপক্ষে। চার দলেরই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে এক ম্যাচ আগেই। আজকের ম্যাচগুলো ছিল গ্রুপ সেরা হওয়ার। গ্রুপ সেরা হয়ে আবাহনী সেমিতে মোহামেডানের বিপক্ষে আর মেরিনার্স লড়বে উষার বিরুদ্ধে।
মোহামেডান গত পরশু দিন অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও হল্যান্ড থেকে খেলোয়াড় আনে। তিন মহাদেশের তিন খেলোয়াড় এনেও মোহামেডান মেরিনার্সকে হারাতে পারেনি। মেরিনার্সের বিপক্ষে ৫ গোল হজমের রেকর্ড মনে নেই মোহামেডান সংশ্লিষ্ট অনেকের। মোহামেডানের এমন হার ক্রীড়াঙ্গনে আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। তবে মোহামেডানের কোচ শহিদুল্লাহ টিটু অবশ্য আস্থা রাখতে চান খেলোয়াড়দের উপর, 'বিদেশি খেলোয়াড়রা মাত্র এসেছে। তাদের দলের সঙ্গে সমন্বয় হতে একটু সময় লাগবে। পরের ম্যাচেই ঘুরে দাড়ানো সম্ভব হবে।'
মেরিনার্সে খেলেছে ভারতীয় তিন বিদেশি। একজন মাত্র জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাদের দিয়ে মোহামেডানের কুপোকাত করার কৌশল সম্পর্কে মেরিনার্সের কোচ মামুনুর রশীদ বলেন, 'আসলে ঢাকার মাঠে ভারতীয় ও পাকিস্তানীরাই মূলত প্রাধান্য করে। আমাদের লক্ষ্য ছিল পজিশন নিয়ে খেলে সুযোগ কাজে লাগানো। সেটা সম্ভব হয়েছে। সেমিফাইনাল আগে নিশ্চিত হলেও চেষ্টা ছিল আবাহনীকে সেমিতে এড়ানো। সেটা সফল হয়েছে।'

ম্যাচের অষ্টম মিনিটে ভারতীয় প্রদীপ মোরের গোলে এগিয়ে যায় মেরিনার্স। দারুণ ফিল্ড গোলে দলকে এগিয়ে নেন প্রদীপ (১-০)। সমতায় ফিরতে সময় নেয়নি সাদা-কালোরা। নিউজিল্যান্ডের চার্ল উলরিচের গোলে সমতায় ফেরে মোহামেডান (১-১)। পরের মিনিটেই আবারো এগিয়ে যায় মেরিনার্স। অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড মাঈনুল ইসলাম কৌশিকের গোলে ২-১ ব্যবধানে লিড মেরিনার্সের। দ্বিতীয় কোয়ার্টার ছিল গোলশূন্য। তৃতীয় কোয়ার্টারের প্রথম মিনিটেই আবারো গোলমুখ খোলে মেরিনার্স। ৩১ মিনিটে দারুণ এক ফিল্ড গোলে দলের ব্যবধান ৩-১ এ বাড়িয়ে নেন মিলন। ৩৭ মিনিটে আবারো গোল উৎসব মেরিনার্সের। পিসি থেকে এবার গোল করেন দলের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় ডিফেন্ডার সোহানুর রহমান সবুজ (৪-১)। এরপর খেলার চতুর্থ ও শেষ কোয়ার্টারে মাঈনুল ইসলাম কৌশিক মেরিনার্সের হয়ে আরো একটি গোল করে দলের ব্যবধান ৫-১ ব্যবধানে বাড়িয়ে নেয়ার পাশাপাশি মোহামেডানে কফিনে হারের শেষ পেরেক ঠুকে দেন।
দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে আবাহনী প্রত্যাশিত জয় তুলে নিয়েছে। খানিকটা খর্ব শক্তির হলেও উষা ভালোই লড়াই করেছে। ম্যাচের প্রথম দুই কোয়ার্টার ছিল গোলশূন্য। তৃতীয় কোয়ার্টারে প্রথম মিনিটে রাকিবুল হাসান রকির ফিল্ড গোলে এগিয়ে যায় আবাহনী (১-০)। চার মিনিট পরেই আবাহনীর বিদেশি খেলোয়াড় আব্রাহাম বেলিমঙ্গার ফিল্ড গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ হয় (২-০)। যুবরাজ বাল্মিকীর ফিল্ড গোলে ব্যবধান ৩-০ তে এগিয়ে নেয় আবাহনী। ৪০ মিনিটে মাহবুব হোসেনের ফিল্ড গোলে ব্যবধান ৩-১ এ নামিয়ে আনে ঊষা। ৪৩ মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করে আবাহনীকে আরো এগিয়ে দেন আশরাফুল ইসলাম (৪-১)। ৪৮ মিনিটে পেনাল্টি স্ট্রোক পায় ঊষা। গোল করেন মাহবুব হোসেন (৪-২)। ৫১তম মিনিটে আবাহনী আব্রাহাম দলের পক্ষে পঞ্চম এবং নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করেন (৫-২)। ৫৫তম মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে ম্যাচের সব শেষ গোল করেন আবাহনীর ডিফেন্ডার ফরহার আহমেদ শিতুল (৬-২)।
এজেড/এইচজেএস