সচিব আসেননি, চলেছে অফিস; হয়েছে আন্দোলনও
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) পিবিএক্স সহকারি ছালেহা আক্তার নাজমার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সচিব আমিনুল ইসলামের অপসারণের দাবি তুলেছে কর্মচারী ইউনিয়ন। বৃহস্পতিবার ছালেহার আকস্মিক মৃত্যুর পর এ আন্দোলন শুরু হয়।
আজ রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্ম দিবসে সচিব আমিনুল ইসলাম ক্রীড়া পরিষদের কার্যালয়ে যাননি। আন্দোলনে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে তিনি আজ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিবর্তে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে অবস্থান করেন। সেখানে মাসিক সমন্বয় সভায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রতিনিধিত্ব করেন।
ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন আজ সাভার সিআরপি পরিদর্শনে গেছেন। অন্য কর্মকতাদের অনেকে ঢাকার বাইরে থাকায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মন্ত্রণালয় এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ বা সিদ্ধান্ত নেয়নি।
সচিব গতকাল রাতেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বার্তা পাঠিয়েছিলেন—রোববার তিনি আসবেন না এবং অফিস যেন তালাবদ্ধ না থাকে, সবাই যেন সবার স্বাভাবিক দায়িত্ব পালন করে। সচিব জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে না আসায় কর্মচারী ইউনিয়ন আজ তালা বন্ধ বা কর্ম বিরতির কোনো কর্মসূচি দেয়নি। অন্য দিনের মতো স্বাভাবিক নিয়মেই অফিস চলেছে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের দাপ্তরিক প্রধান যুগ্ম সচিব পদ মর্যাদার সচিব। সচিবের অনুপস্থিতিতে পরিচালক প্রশাসন দেখভাল করেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে শেখ হামিম হাসান পরিচালক প্রশাসন হিসেবে অবসর গ্রহণের পর গত প্রায় পাচ মাস এই পদশূন্য। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে সচিব ও চার জন পরিচালক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পদায়ন করে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে এত বড় সময় পদ শূন্য অবস্থায় থাকেনি ইতোপূর্বে।
তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের সংগঠন ইউনিয়ন। তারা আজ দিন ব্যাপী বিভিন্ন সময় সময় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নিচে জড়ো হয়েছে। সচিব আমিনুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে কখনো স্লোগান, কখনো মানববন্ধন করেছে। তবে সেটা বৃহস্পতিবারের মতো খুব বেশি জোরালো ছিল না।
প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম কঠোর অনুশাসনের মাধ্যমে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পরিচালনার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। নতুন সচিবের আইনের ব্যাপারে কঠোর মনোভাব ও তার আচার-ব্যবহারে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অসন্তোষ মূলত। নাজমার আকস্মিক মৃত্যুকে সামনে এনে সেই অসন্তোষ দূর করতে সচিবের অপসারণ চাইছে কর্মচারীরা, নেপথ্যে রয়েছেন কর্মকর্তারাও।
ইউনিয়নের দাবির প্রেক্ষিতে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী আসেন না। এতে স্পষ্ট ইউনিয়নের প্রভাব ও দৌরাত্ম কতটা। তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণীর এই কর্মচারীদের দুই একজন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের টেন্ডার বাণিজ্যে বড় প্রভাবক। এমনকি ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটিতেও আছেন।
এজেড/এইচজেএস