আইপিএল ফাইনালে টস–শিশির কতটা প্রভাব ফেলবে

জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট আইপিএলের জমজমাট আসর শেষ হচ্ছে আজ (রোববার)। বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় চেন্নাইয়ের চিপকে এম চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। চেন্নাইয়ের পিচ কিছুটা স্লো বলেই পরিচিত ক্রিকেটমহলে। তার ওপর রাত যত বাড়বে, এখানে শিশিরও বেশ ভালো প্রভাব ফেলতে পারে। একইসঙ্গে টসও ফাইনালে বড় ফ্যাক্টর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে!
টস কতটা ফ্যাক্টর হবে– তা জানার আগে কিছু পরিসংখ্যান দেখে নেওয়া যেতে পারে
চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত ম্যাচের পরিসংখ্যান বলছে, এখানে রান তাড়া করা তুলনামূলক সহজ। ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে শিশির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, পরে ব্যাট করা দলে আটটি খেলায় মাত্র তিনটিতে জিততে পেরেছে। যদিও শিশিরের প্রভাব দুদিন আগে হওয়া সানরাইজার্স হায়দরাবাদ এবং রাজস্থান রয়্যালসের মধ্যে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে দেখা যায়নি। হায়দরাবাদ স্পিনারদের দাপুটে পারফরম্যান্সে ১৭৫ রান করেও মোটে ১৩৯ রানে আটকে দেয় রাজস্থানকে।
তাহলে টসজয়ী দল আগে ব্যাটিং নাকি ফিল্ডিং, কোনটি বেছে নেওয়া উচিত হবে? গতকাল (শনিবার) ফাইনাল পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে দুই দলের অধিনায়করা দাবি করেছিলেন যে, চেন্নাইয়ে প্রথমে ব্যাটিং বা বোলিং নিয়ে তারা ভাবছেন না। তবে উভয় দলই আগে ব্যাট করাকেই বেছে নেবে বলে জানান হায়দরাবাদ অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ও কলকাতার দলপতি শ্রেয়াস আইয়ার। হায়দরাবাদ চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত রান তাড়া করতে গিয়ে তাদের ছয় ম্যাচের মধ্যে তিনটিতে হেরেছে, অন্যদিকে কলকাতা দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে অপরাজিত রয়েছে।
— ESPNcricinfo (@ESPNcricinfo) May 26, 2024
ক্রিকেটের হাইভোল্টেজ ম্যাচের ধারণা অনুযায়ী বলা যায়– ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে প্রতিপক্ষকে রান তাড়া করতে দিয়ে চাপে রাখা তুলনামূলক সহজ। আইপিএলের বিগত ১৬ আসরের ফাইনালে প্রথম ব্যাট করা দল জয়ের দিক থেকে ৯-৭ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে। তবে ২০২২ এবং ২০২৩ সালে পরপর দুইবারই প্রথম ব্যাট করা দলকে হারতে হয়েছে।
আরও পড়ুন
পিচ ও শিশিরের বিষয়ে আইয়ার বলেন, ‘গতকাল (শুক্রবার) হায়দরাবাদের খেলা পিচের চেয়ে ফাইনালে ভিন্ন হতে পারে মনে হচ্ছে। সেদিন তারা লাল মাটির পিচে খেলেছিল, এখনকারটা কালো মাটির মনে হচ্ছে। আমরা জানি না আসলে কেমন হতে পারে পিচ। হয়তো শিশির ভালো ভূমিকা রাখতে পারে, তবে গত ম্যাচে তেমনটা হয়নি, স্পিনাররা ভালো সহায়তা পেয়েছে।’ তখনই পাশ থেকে মজার সুরে হায়দরাবাদ অধিনায়ক কামিন্স বলে ওঠেন, ‘না, এখানে শিশিরের স্তুূপ রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পরিসংখ্যান মূলত সিদ্ধান্ত নিতে ব্যবহার করা হয়, আমি মনে করি মাঠে পরিস্থিতি অনুসারে সিদ্ধান্ত নিতে পারাই বড় প্রভাব রাখে।’
ম্যাচের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে পাওয়ার-প্লে
হায়দরাবাদ-কলকাতার লড়াই কোন দিকে গড়াবে, সেটা সংশ্লিষ্ট ইনিংসের প্রথম ছয় ওভার (পাওয়ার প্লে) দেখলেই বোঝা যেতে পারে। নতুন বলের বিপরীতে হায়দরাবাদ (গড় ১১.৫) এবং কলকাতা (গড় ১১) উভয়ই ঝোড়ো স্ট্রাইকরেটে রান করে। তবে আইপিএলের শেষদিকে সানরাইজার্সের (১০.৩২) রানরেট সামান্য কিছুটা হ্রাস পায়, অন্যদিকে কমেছে কলকাতারও (৯.২৪)। তবে ব্যাট হাতে পাওয়ারপ্লেতে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক দলগুলোর মধ্যে হায়দরাবাদ এবং কলকাতা দুই দলই রয়েছে। পাওয়ারপ্লে তে উভয়েই প্রায় সমান ইকোনমি রেটে ৮.৭ রেটে রান দিয়েছে। ফাইনালে কি হয় সেটাই দেখার বিষয়।
এর আগে প্রথম কোয়ালিফায়ারে দেখা হয়েছিল লিগপর্বে যথাক্রমে শীর্ষ দুইয়ে থাকা কলকাতা ও হায়দরাবাদের। মিচেল স্টার্কের সঙ্গে ট্রাভিস হেডের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিলেন কেকেআর পেসার। হেডকে শূন্য রানে ফিরিয়েছিলেন স্টার্ক। অন্যদিকে, বিস্ফোরক অভিষেক শর্মাকে আউট করেছিলেন বৈভব অরোরা। এবারও হায়দরাবাদের বড় রান নির্ভর করবে এই দুই ওপেনারের ওপর। অন্যদিকে, কলকাতার ওপেনার সুনীল নারিন এবং রহমানউল্লাহ গুরবাজ পাল্টা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করবেন। তাদের সঙ্গে প্যাট কামিন্স, জয়দেব উনাদকাট ও টি নাতারাজন এবং হেইনরিখ ক্লাসেন ও মার্করামের বিপক্ষে কলকাতার স্পিনারদের লড়াই দেখা যাবে।
এএইচএস