আইন কর্মকর্তাকে অব্যাহতি, ১৩ স্টাফকে বদলি

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আইন কর্মকর্তা কবিরুল হাসানকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। আইন কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন স্টেডিয়ামের প্রশাসক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা বদলি হয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার) ও পরশু (সোমবার) জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম এই সংক্রান্ত তিনটি অফিস আদেশ স্বাক্ষর করেন।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আইন কর্মকর্তা কবিরুল হাসান ক্রীড়াঙ্গনে বেশ পরিচিত মুখ। এনএসসির আইন কর্মকর্তার পাশাপাশি বিভিন্ন ফেডারেশনের নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনেও কাজ করেছেন। সাতার ফেডারেশনে বিগত মেয়াদে এনএসসি’র মনোনীত সদস্য ছিলেন। দুই যুগের বেশি সময় এনএসসির আইন কর্মকর্তা হিসেবে কাজের পর গতকাল তাকে অব্যাহতির নোটিশ প্রদান করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীই স্থায়ী নন। আইন কর্মকর্তা কবিরুল হাসানও স্থায়ী ছিলেন না। এমনকি আইন কর্মকর্তা নামে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে কোনো আনুষ্ঠানিক পদও ছিল না। আইন কর্মকর্তা কবিরুল হাসান পদ স্থায়ীকরণের জন্য মামলা লড়েছিলেন অনেক দিন থেকেই। আপিল বিভাগের আদেশে মামলাটি গ্রহণযোগ্য হয়নি। সম্প্রতি আপিল বিভাগের আদেশ ও কবিরুল হাসানের বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অসন্তোষ হওয়ায় তাকে অব্যাহতি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
আরও পড়ুন
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত অব্যাহতি নোটিশে মামলার বিভিন্ন বিষয়ের পাশাাপশি কবিরুল হাসানের দায়িত্বে অনুপিস্থিতির বিষয়টিও প্রগাঢ়ভাবে উঠে এসেছে। বিভিন্ন সময় তিনি বিনা নোটিশে ছুটি কাটিয়েছেন। এর বিপরীতে শোকজ করা হলেও উত্তর দেননি। বিগত সেই বিষয়গুলো আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট বাছাই কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে কবিরুল হাসানকে চাকরি থেকে অবসানের সুপারিশ প্রদান করে। চাকরি থেকে অব্যাহতি দিলেও তিন মাস বেতন সমপরিমাণ অর্থ তাকে প্রদান করবে এনএসসি।
কবিরুল হাসান প্রায় দুই দশক ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন আইনি বিষয়ে মতামত ও ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। অথচ তার নিজেরই আইনগত ভিত্তি সেভাবে ছিল না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক এই ছাত্রের অব্যাহতি নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
আইন কর্মকর্তাকে অব্যাহতির পাশাপাশি বেশ কয়েকটি পদে বদলির আদেশও হয়েছে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের প্রশাসক মোবারক করিম লিটনকে রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামের প্রশাসকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কমলাপুর স্টেডিয়ামের প্রশাসক রুহুল আমিনকে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রশাসক করা হয়েছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনে সাধারণ সেবা শাখায় কাজ করা মাসুদুর রহমানকে সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে প্রশাসক করে পাঠানো হয়েছে।
মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামের প্রশাসক মশিউর রহমানকে রংপুর জেলা স্টেডিয়ামে নিরাপত্তা অফিসার হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। এনএসসির ক্রীড়া শাখার কর্মকর্তা মাকসুদ ভূইঞাকে সহকারী স্টেডিয়াম প্রশাসক হিসেবে বরিশালে প্রেরণ করা হয়েছে। শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামের প্রশাসক সাজিয়া আফরিনকে এনএনসির সহকারী ক্রীড়া পরিচালকের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে স্টেডিয়ামের প্রশাসকও রাখা হয়েছে। সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করা সামিম আরা খানমকে ধানমন্ডি মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের প্রশাসক করা হয়েছে।
মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামের প্রশাসক শিহাব উদ্দিনকে সহকারী পরিচালক প্রশাসন সাধারণ সেবায় পদায়ন করা হয়েছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ভলিবল কোচ ইমদাদুল হক ও ভারত্তোলন কোচ শাহরিয়া সুলতানা কোচিংয়ের পাশাপাশি যথাক্রমে কমলাপুর ও মিরপুর সুইমিং কমপ্লেক্সের সহকারী প্রশাসকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া ক্রীড়াঙ্গন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। ফেডারেশন সংস্কারের পাশাপাশি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদেও পরিবর্তন আনছেন। এরই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে তার একান্ত ব্যক্তিগত সচিব পদে বদল এনেছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন স্টাফদের রদবদল এবং অব্যাহতি/সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করছেন।
এজেড/জেএ