নির্বাচন শেষ, ২৯ ডিএফএ ভেঙে প্রশ্নের মুখে বাফুফে

বাফুফে নির্বাচনে জেলা-বিভাগীয় কাউন্সিলরশিপ নিয়ে ছিল বিস্তর অভিযোগ। ৫ আগস্ট পরবর্তী সভায় অনেক জেলায় সভাপতি ও অন্য কর্মকর্তারা ছিলেন লাপাত্তা। এ রকম অনেক জেলায় সভা না করেই কাউন্সিলর নাম এসেছিল এবং বাফুফে সেটা অনুমোদনও দিয়েছিল। এ নিয়ে সমালোচনা হয়েছে প্রচুর।
জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠকদের অনেকে ভোটার তালিকা নিয়ে প্রতিবাদ করেছে মনোনয়ন প্রত্যাহার পর্যন্ত। বাফুফের তৎকালীন নির্বাহী কমিটি সেটা আমলে নেয়নি। নতুন নির্বাহী কমিটি এসে দুই মাসের মধ্যে ২৯ জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের নির্বাচিত কমিটি ভেঙে দিয়েছে। অচিরেই অ্যাডহক কমিটি করে ৯০ দিনের জন্য নির্বাচনের নির্দেশনা প্রদান করবে।
জেলা-বিভাগীয় ফুটবল এসোসিয়েশনের নির্বাচন ৫ আগস্টের আগে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পট পরিবর্তনের পর অনেক জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা ছিলেন নিখোঁজ। আবার অনেক জেলায় নির্বাচন প্রক্রিয়াও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। তাই সেই সময় জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনে পুনরায় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছিলেন সাবেক ফুটবলার-সংগঠকদের একাংশ এবং জাতীয়বাদী ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদও। বাফুফে নির্বাচনের আগে জেলা-বিভাগীয় ফুটবল এসোসিয়েশনের পুনরায় নির্বাচন দিতে চায়নি। সেই বাফুফে কর্তারাই এখন জেলা-বিভাগীয় ফুটবল এসোসিয়েশনের পুনরায় নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েছেন।
আকস্মিকভাবে ২৯ জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের নির্বাচিত কমিটি ভেঙে দেয়ায় জোর প্রশ্ন উঠেছে। বাফুফের অনুমোদন নিয়েই কয়েক মাস আগে এই জেলাগুলো নির্বাচন করেছে এবং সেখান থেকে প্রতিনিধি এসেছে বাফুফে নির্বাচনে। তাহলে হঠাৎ কমিটি বিলুপ্ত কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বাবু বলেন, 'আমাদের ডিএফএ মনিটরিং কমিটি ৩৫ জেলা-বিভাগীয় ফুটবল এসোসিয়েশন নিয়ে তদন্ত করেছে। সেই তদন্ত আলোকে ২৯ টি সংস্থা বিলুপ্তির সুপারিশ এসেছে। নির্বাহী কমিটি সেই সুপারিশ গ্রহণ করেছে। সামনে অন্য জেলাগুলো নিয়েও তদন্ত হবে।'
জেলা-বিভাগীয় ফুটবল এসোসিয়েশন বাফুফের নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের চাবিকাঠি। জেলা-বিভাগীয় ফুটবল এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা বাফুফে নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করল। এখন এমন কি হলো কমিটি ভাঙতে হচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তরে মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যানের উত্তর, 'সামনে অনূর্ধ্ব-১৫ জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য অনেক জেলায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। কোন জেলায় কোন বছরে কয়টি লিগ হয়েছে। এ রকম একটি ফরম্যাট ছিল। অনেক জেলায় না এসেছে।'
বাফুফের নির্বাহী সদস্য ও সিরাজগঞ্জ জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি কামরুল ইসলাম হিল্টন বলেন, 'অনেক জেলায় সভাপতি নেই আবার কেউ পদত্যাগও করেছেন।'
লিগ অনিয়মিত ও অন্যান্য অসঙ্গতি যদি থাকে তাহলে সেই সংস্থা থেকে কাউন্সিলর নিয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া বাফুফের নির্বাচনও তাহলে প্রশ্নবিদ্ধ। এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান, 'ভোটার তালিকা আগের কমিটির সময় হয়েছে। আমরা এই বিষয়টি জানি না।’ আজ মিডিয়া ব্রিফিংয়ের সময় কয়েকজন নির্বাহী সদস্য এসেছিলেন। তারা সবাই এবার নির্বাচিত হয়েছেন বিগত কমিটিতে ছিলেন না।
৯ নভেম্বর বাফুফে নির্বাহী কমিটির সভায় ডিএফএ মনিটরিং কমিটির চেয়ারম্যান মনোনীত হয়েছিলেন রাজবাড়ী জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি দুলাল। ঐ দিন শুধুই কমিটির চেয়ারম্যান মনোনীত হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি পরবর্তীতে অনুমোদিত হবে এমনটি জানিয়েছিলেন মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান। আজ ব্রিফের সময় অবশ্য সেই কমিটির চেয়ারম্যান সহ আরো দুই-তিন জন সদস্যের নাম উল্লেখ করেছেন। ফলে এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি আরেকটি বড় প্রশ্ন ডিএফএ মনিটরিং কমিটির সুপারিশে ২৯ ডিএফএ ভাঙার সুপারিশ গৃহীত হলেও সেই ডিএফএ মনিটরিং কমিটিই আবার ভেঙে দেয়া হয়েছে। ঐ কমিটি যদি বিলুপ্ত হয় তাহলে সেই কমিটির সিদ্ধান্ত কেন গৃহীত হলো এর কোনো উত্তর মেলেনি।
এজেড/এইচজেএস