‘আকাশের চাঁদ’ হাতে পেলেন শরিফুল-ইমন!

জানুয়ারির ২০ তারিখ থেকে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি বাংলাদেশ দল। যেখানে শুরুতে ৩টি ওয়ানডে ও ২টি টেস্ট সিরিজ খেলবে টাইগাররা। এই সিরিজের প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন বেশ কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটার। প্রথমবার বাংলাদেশ দলে সুযোগ পেয়ে ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন নিজেদের অনুভূতির কথা। যেন ‘আকাশের চাঁদ’ হাতে পেয়েছেন তারা।
গত ফেব্রুয়ারিতে দেশের ক্রিকেট ও ক্রীড়া ইতিহাসের প্রথম বিশ্বকাপ এনে দিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। সেই দলের দুই সদস্য পেসার শরিফুল ইসলাম ও ব্যাটসম্যান পারভেজ হোসেন ইমন। বিশ্বকাপে আলো ছড়ানোর পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করছেন এই দুই ক্রিকেটার। যার প্রতিদান হিসেবে উইন্ডিজ সিরিজের ওয়ানডে স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন।
যদিও প্রাথমিক স্কোয়াড, তবুও টাইগার শিবিরে ডাক পাওয়া অপ্রত্যাশিত বলছেন ইমনরা। স্কোয়াডে নাম ওঠার পর ঢাকা পোস্টকে ইমন জানান, ‘এটি একদমই অপ্রত্যাশিত। আমি কখনো আশা করিনি যে এভাবে এতো তাড়াতাড়ি ডাক পাবো। সবকিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ্।’
সদ্য সমাপ্ত বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েছেন ইমন। ফরচুন বরিশালের হয়ে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর বিপক্ষে মাত্র ৪২ বলে সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে রেকর্ড করেন বাংলাদেশের দ্রুততম টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরির। শুধু দ্রুততমই নয়, ১৮ বছরের বয়সী ইমন সেদিন বনে যান বাংলাদেশের কনিষ্ঠতম টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরিয়ান।
তবুও এতো দ্রুত ডাক আসবে এমনটা ভাবেননি ইমন, ‘এটা ঠিক যে আমি বঙ্গবন্ধু কাপে পারফর্ম করেছিলাম। তবে এভাবে ভাবনি যে এতো দ্রুত ডাক আসবে। একদমই প্রত্যাশিত ছিল আমার জন্য। জাতীয় দলের স্বপ্ন তো সবারই থাকে, আমিও প্রস্তুত ছিলাম। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই যে ডাক আসবে, সেটি ভাবিনি।’
‘আপাতত প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পেয়েছি। জানি না মূল স্কোয়াডে ডাক আসবে কীনা। সেটি নিয়ে আপাতত ভাবনা নেই। যদি সুযোগ পাই, তাহলে সামর্থ্যের সেরাটা প্রয়োগ করবো।’ বলেন তিনি।
একই টুর্নামেন্টে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের হয়ে খেলেছেন শরিফুল। বাঁহাতি বোলিংয়ে আগুন ঝরিয়েছেন বাইশ গজে। টুর্নামেন্টের ১০ ম্যাচে শরিফুল শিকার করেন ১৬ উইকেট। পাশাপাশি হাই পারফরম্যান্স ক্যাম্প ও এ দলের হয়েও নিজের সামর্থ্য জানান দিয়েছেন তিনি। এই ধারাবাহিকতাই তাকে জায়গা করে দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের ওয়ানডে সিরিজের প্রাথমিক দলে।
শরিফুল বলেন, ‘দুটি স্বপ্ন ছিল। সেগুলো পূরণের কাছাকাছি চলে এসেছি জাতীয় দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পেয়ে। চেষ্টা করব নিজের সেরাটা দিয়ে দলে থাকার জন্য। যেভাবে খেলে আসছি, সেভাবেই খেলে, ভালো পারফর্ম করে জাতীয় দলে থাকা। আশা-নিরাশার কোন কিছুই বলতে পারছি না। আমার সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করব, এরপর নির্বাচকরা যা করবেন তাই।’
ইমন-শরিফুলরা প্রথমবার ডাক পেলেও বাংলাদেশ দলের জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন পেসার হাসান মাহমুদ। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) দিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে ১টি টোয়েন্টিও খেলেছেন। তবে এবার সুযোগ পেয়েছেন ভিন্ন এক সংস্করণে ওয়ানডের পাশাপাশি টেস্ট স্কোয়াডেও নাম আছে তার।
ঢাকা পোস্টকে মাহমুদ জানান, ‘এভাবে টেস্ট দলে ডাক আসবে এটা ভাবিনি। সব ক্রিকেটারের ইচ্ছে বা স্বপ্ন থাকে দেশের হয়ে টেস্ট খেলা। এর আগে দেশের হয়ে তো আমি সাদা বলে খেলার সুযোগ পেয়েছি একবার। এবার ওয়ানডে ও টেস্ট দলের প্রাইমারি স্কোয়াডে ডাক পেলাম। সত্যি বলতে খুব রোমাঞ্চিত।’
মাহমুদ আরও বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট তো আসলে একটি স্বপ্ন। বিশ্ব ক্রিকেট যদি দেখেন, সবাই টেস্ট খেলতে চায়। সেই সুযোগটা পেলে আমি অবশ্যই কাজে লাগানোর চেষ্টা করবো। আপাতত লাল বলে যে দুর্বলতাগুলো আছে, সেগুলি নিয়ে কাজ করছি। বাকিটা দেখা যাক। আসলে যেই ফরম্যাটে সুযোগ আসবে, সেখানেই ভালো করতে হবে। সুযোগ আসলে সেটি কাজে লাগাতে হবে। টেস্ট ক্রিকেট তো রোমাঞ্চের একটি জায়গা।’
টিআইএস/এটি