প্রথমবার বাফুফে কমিটিতে মানিক, মিডিয়া কমিটিতে অচেনা মুখ

২০০৮ সাল থেকে বাফুফে নির্বাহী কমিটি ২১ জনের। নির্বাহী কমিটি নীতি নির্ধারণ ও চূড়ান্ত অনুমোদনের এখতিয়ার থাকলেও ফুটবলের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পাদন হয় বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং ও সাব কমিটির মাধ্যমে। সেই সকল কমিটিতে সাবেক ফুটবলার, সংগঠক, কোচ ও ফুটবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে গঠন হয়। সাবেক জাতীয় ফুটবলার ও কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক কখনোই ফুটবল ফেডারেশনের আনুষ্ঠানিক কোনো কমিটিতে ছিলেন না।
২৬ অক্টোবর বাফুফে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আড়াই মাস পর বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটি প্রকাশ হচ্ছে। গতকাল ঘোষিত ডেভেলপমেন্ট কমিটিতে শফিকুল ইসলাম মানিক সদস্য মনোনীত হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ফুটবল ফেডারেশনের কোনো কমিটিতে আগে কখনো ছিলাম না। চার দশকের বেশি সময় নানা ভূমিকায় সম্পৃক্ত থাকলেও এবারই প্রথম ফুটবল ফেডারেশনে কমিটিতে আসছি।’
১৯৭৯ সাল থেকে ফুটবলার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু মানিকের। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি কোচ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। বেশ দাপটের সঙ্গে দুই দশক কোচিং করিয়েছেন। ফুটবলার ও কোচিংয়ের পাশাপাশি ডাকসু ক্রীড়া সম্পাদক, খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতি, বীচ ফুটবল আয়োজনে সাংগঠনিক দক্ষতাও প্রমাণ করেছেন। ২০২০ সালে বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি ও এবার সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে সহ-সভাপতি পদে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন।
বাফুফের বিভিন্ন কমিটিতে গত কয়েক মেয়াদে মারুফুল হক, জুলফিকার মাহমুদ মিন্টু, জাকারিয়া বাবুর মতো কোচরা থাকলেও শফিকুল ইসলাম মানিক কখনো ছিলেন না। ডেভেলপমেন্ট কমিটির বর্তমান চেয়ারম্যান বাফুফের অন্যতম সহ-সভাপতি নাসের শাহরিয়ার জাহেদী। তার আট সদস্যের কমিটিতে সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছেন কয়েক মাস আগেই তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা শফিকুল ইসলাম মানিককে। এমন সংস্কৃতি বাফুফেতে সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি।
বাফুফে স্ট্যান্ডিং কমিটি নিয়ে ইতোমধ্যে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে। পেশাদার লিগ ও টেকনিক্যাল কমিটি ফেডারেশন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের আগেই ফাঁস হয়েছে। এই দুই কমিটি নিয়ে সমালোচনাও হয়েছে অনেক। প্রকাশিত অন্য কমিটির তুলনায় ডেভেলপমেন্ট কমিটি খানিকটা মানসম্মত হয়েছে।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ডেভেলপেমন্ট কমিটিতে চেয়ারম্যানের পাশাপাশি একজন কো-চেয়ারম্যান ও সাত জন সদস্য মনোনীত হবেন। সাত জন সদস্য মনোনয়ন হলেও কো-চেয়ারম্যান এখনো মনোনয়ন হয়নি। সাত সদস্যের ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির তিন সদস্য মাহফুজা আক্তার কিরণ, ছাইদ হাসান কানন, মঞ্জুরুল করিম। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফুটবল উন্নয়নে কাজ করে। তাই সেই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক প্রশিক্ষণ বাফুফের এই কমিটির সদস্য মনোনীত হয়েছেন। এর বাইরে একজন ব্যবসায়ী সামিদ কাশেম এবং নারী সংগঠক রওশন আক্তার হায়দার (ডেইজি) কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন।
আজ দুপুরে প্রকাশ হয়েছে মিডিয়া কমিটি। টেকনিক্যাল ও লিগ কমিটির মতো এই কমিটিতেও আছে কয়েকটি অচেনা মুখ। মিডিয়া কমিটির সদস্যদের মধ্যে শুধু পরিচিত মুখ দুই জন সাবেক জাতীয় ফুটবলার সাইফুর রহমান মনি ও জাহিদ হাসান এমিলি। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক এমিলি আবার কমিটির চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বাবুর আপন আত্মীয়। এই দুই জনের পর ক্রীড়াঙ্গনে খানিকটা চেনা-পরিচিতি রয়েছে মাহমুদুল আহসান মুরাদের। বাকি চার সদস্য রাশিদ সামিউল ইসলাম, মোবারক হোসেন, গোলাম কবির ও রাহাত মিঠু ফুটবলাঙ্গনে অপরিচিত মুখ। মানিকগঞ্জ জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের কাউন্সিলর রাশিদ সামিউল ইসলাম বাফুফে নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করলেও পরবর্তীতে আর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি।
বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে মিডিয়া কমিটি যে কোনো ফেডারেশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যোগাযোগ, মিডিয়া সম্পর্কে ধারণার পাশাপাশি ফুটবলে আগ্রহী ব্যক্তি এই কমিটিতে থাকা বাঞ্চনীয়। লিগ কমিটিতে কমিউনিকেশন অফিসার থাকা আবশ্যক না হলেও সেখানে আছেন, অথচ মিডিয়া কমিটিতে এমন কেউ নেই। কমিটি চেয়ারম্যান ঘোষণার দুই মাস পর কমিটি পূর্ণাঙ্গ প্রকাশ পেলেও সেগুলোর মান-গভীরতা নিয়ে এখনই প্রশ্ন উঠছে।
এজেড/এফআই