স্থপতি বরুণ চেয়েছিলেন সিনেমা বানাতে, যেভাবে ক্রিকেটার হলেন

ভারতীয় ক্রিকেটে যেন পুনর্জন্ম হয়েছে বরুণ চক্রবর্তীর। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দাপটের পর আন্তর্জাতিক ওয়ানডে অভিষেকেই সাফল্য পাচ্ছেন ভারতের এই স্পিনার। অথচ, স্থাপত্যবিদ্যায় স্নাতক সম্পন্ন করা বরুণের ক্রিকেটার হওয়ার তেমন ইচ্ছাই ছিল না একটা সময়। স্থপতি হিসেবে চাকরি করেছিলেন কিছুদিন। অভিনয়ও করেছেন, চেয়েছিলেন সিনেমা বানাতে। ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শুরুতে কম চড়াই উৎড়াই ছিল না।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দুর্দান্ত পারফর্ম করে দ্বিতীয় বয়স্কতম ক্রিকেটার হিসেব ওয়ানডের স্কোয়াডে জায়গা করে নেন বরুণ চক্রবর্তী। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরুর আগমুহূর্তে জায়গা করে নেন ১৫ সদস্যের স্কোয়াডে।
যদিও ভারতের প্রথম দুই ম্যাচের দলে সুযোগ পাননি। গতকাল (রোববার) নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একাদশে সুযোগ পেয়েই পাঁচ উইকেট শিকার করেছেন বরুণ। ক্যারিয়ারের মাত্র দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচেই পাঁচ উইকেটের কীর্তি গড়েছেন তিনি। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে নিজের ক্যারিয়ারের নানা কথা জানিয়েছেন বরুণ।

বলছিলেন, ‘আমি ক্রিকেট অনেক দেরিতে শুরু করেছি। ২৬ বছর বয়সে মন দিয়ে ক্রিকেট খেলা শুরু করি। তার আগে আমার অন্য স্বপ্ন ছিল। স্থপতি হতে চেয়েছিলাম। সিনেমা বানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ২৬ বছরের পর থেকে শুধু ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নই দেখেছি। সেই স্বপ্নই ধীরে ধীরে সত্যি হচ্ছে।’
২০২১ সালে আইপিএলের পারফরম্যান্সের জন্য সেবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন বরুণ। কিন্তু গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচে একটিও উইকেট পাননি। ভারতও গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে গিয়েছিল। সেবারের সঙ্গে এবারের পরিবেশের যে কোনো মিল নেই তা স্বীকার করেছেন ভারতীয় স্পিনার।
বরুণ চক্রবর্তী বলছিলেন, ‘সেবার খুব শিশির পড়ছিল। রাতে বল ধরতে সমস্যা হচ্ছিল। আমি যে খুব খারাপ বল করেছিলাম, তা নয়। কিন্তু আমরা জিততে পারিনি। কিন্তু এ বার আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি। জিতছি। তাই ভালো লাগছে।’

কিউইদের বিপক্ষে যখন প্রথমবার বল করতে গিয়েছিলেন, তখন চার বছর আগের স্মৃতি মনে পড়ছিল বরুণের। আত্মবিশ্বাসটা একটু কম ছিল। কিন্তু অধিনায়ক রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা তাকে ভরসা দেন। বরুণ বলেন, ‘প্রথম স্পেল করতে যাওয়ার সময় আত্মবিশ্বাস একটু কম ছিল। চার বছর আগে এই মাঠে কী হয়েছিল, সেই কথা মনে পড়ছিল। নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যা হচ্ছিল। সেই সময় রোহিত ভাই, বিরাট ভাই ও হার্দিক ভাই এসে বলে, নিজেকে শান্ত রাখতে। ওরা বার বার এসে কথা বলছিল। সেটা কাজে লেগেছে। আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।’
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পরেও হাল ছাড়েননি। ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছেন। নিজের বোলিং নিয়ে পরিশ্রম করেছেন। নতুন বল শিখেছেন। ফলে এখন অনেক বেশি অস্ত্র তার কাছে রয়েছে। গতবারের আইপিএলে কেকেআরকে চ্যাম্পিয়ন করতে বড় ভূমিকা রেখেছেন বরুণ। সেই পারফরম্যান্স ভারতীয় দলে তার জায়গা করে দিয়েছে।
এফআই