ভারত-নিউজিল্যান্ড ফাইনালে ৭০০০ কোটি টাকার বাজি, জুয়াড়ি গ্রেপ্তার

ক্রিকেট-ফুটবলসহ জনপ্রিয় ক্রীড়ার ইভেন্টে বাজি ধরা কিংবা অনেক বড় অঙ্কের বেটিংয়ের ঘটনা নতুন কিছু নয়। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালেও তেমনি নজর পড়েছে জুয়াড়িদের। আজ (রোববার) দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। এই ম্যাচে জুয়াড়িদের বেশ কয়েকটি গ্রুপ নাকি ৭০০০ কোটি (৫ বিলিয়ন ভারতীয় রুপি) টাকার বাজি ধরেছে। এসব ঘটনায় অভিযুক্ত কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশ।
এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। তাদের তথ্যমতে, বেটিং প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর পর্যবেক্ষণ চালানো সূত্র জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বুকি বা জুয়াড়িদের কাছে পছন্দের দল ভারত। তাদের অনেকেই আবার আন্ডারওয়ার্ল্ড কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। তারা বলছে, প্রতিটি বড় ম্যাচের জন্যই দুবাইয়ে বিশ্বের বড় বুকাররা জড়ো হন। ভারতীয় মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের গ্যাং ‘ডি কোম্পানি’ও দুবাইয়ের বড় ক্রিকেট ম্যাচের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
ভারত-নিউজিল্যান্ড ফাইনাল ম্যাচের আগেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাজি ধরে আসছে অভিযুক্ত জুয়াড়িরা। ফাইনালের আগেই এমন অন্তত ৫ জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করেছিল দিল্লির অপরাধ বিভাগ। যারা সেমিফাইনাল ম্যাচের সময় জুয়ায় জড়িত ছিলেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরেই অনুসন্ধানী দল দুবাই পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। পুলিশের হাতে ধরা পড়া দুই বুকি পারভিন কোচার ও সঞ্জয় কুমার ভারত-অস্ট্রেলিয়ার সেমিফাইনাল ম্যাচে বেটিং করেছিলেন। এ কাজে ব্যবহৃত মোবাইল-ল্যাপটপসহ তাদের হাতেনাতে ধরে পুলিশ। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট আরও কিছু ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিও জব্দ করা হয় তাদের কাছ থেকে।
আরও পড়ুন
পুলিশের জালে ধরা পড়া এই দুই বুকারের কাজের কৌশলও উল্লেখ করেছে এনডিটিভি। তাদের দাবি– বেটিং ওয়েবসাইট থেকে পারভিন কোচারের মাস্টার আইডি রয়েছে। যার মাধ্যমে বাজিতে অংশগ্রহণকারী অধস্তনদের বেটিং আইডি বানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর প্রতিটি লেনদেনে নির্দিষ্ট সিন্ডিকেট ৩ শতাংশ করে কমিশন নেয়। এর বাইরে অফলাইনেও ফোন কলের মাধ্যমে জুয়ায় প্রবেশ এবং বেটিং রেটের হিসাব রাখা হয়।

সূত্র বলছে, বেটিং ব্যবসা চালু রাখতে পারভিন কোচার ৩৫ হাজার ভারতীয় রুপিতে একটি ঘর ভাড়া করে থাকতেন। প্রতিটি ম্যাচের দিনই তার লাভ থাকে ৪০ হাজার ভারতীয় রুপি। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, জুয়া কার্যক্রমের এই পুরো নেটওয়ার্ক দুবাই থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। সেই শহরেই হতে যাচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল ম্যাচটি।
প্রতিবেদনে আর বলা হয়েছে, পশ্চিম দিল্লির বাসিন্দা চোটু বানসাল কানাডা থেকে একটি বেটিং অ্যাপ প্রস্তুত করেছেন। দুবাইয়ে থেকে তিনি ওই অ্যাপের মাধ্যমে জুয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করেন। দিল্লির মতিনগরের আরেক বাসিন্দা ভিনয়ও থাকেন দুবাইতে। ক্রিকেট মাঠ থেকে তিনি সরাসরি ফিডব্যাক দিয়ে থাকেন। এই সিন্ডিকেটে থাকা দিল্লির আরও কয়েকজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তারা হচ্ছেন– ববি, গোলু, নিতিন জেইন ও জিতু। এ ছাড়া দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার হওয়া মানিশ সাহানি, যোগেশ কুকেজা এবং সুরাজ প্রত্যেকেই দুবাইয়ে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাদের কাছ থেকে নগদ ২২ লাখ ভারতীয় রুপি জব্দ করে পুলিশ।
এএইচএস