ফাইনালের মঞ্চে বাফুফের একজন, মাঠেই যান না অনেকে

ফেডারেশন কাপ দেশের ঘরোয়া ফুটবলে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্ট। সেই টুর্নামেন্টের ফাইনালে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বাফুফের একজন নির্বাহী সদস্য উপস্থিত ছিলেন। আজ (মঙ্গলবার) ময়মনসিংহ স্টেডিয়ামে অবশিষ্ট ফাইনাল (অতিরিক্ত ১৫ মিনিট ও টাইব্রেকার) দেখতে ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির ২১ জনের মধ্যে ছিলেন কেবল জাকির হোসেন চৌধুরি। আরেক নির্বাহী সদস্য সত্যজিৎ দাশ রুপু অবশ্য আবাহনী ক্লাবের ম্যানেজার হিসেবে ছিলেন।
২২ এপ্রিল ময়মনসিংহে ঝড় ও আলোক স্বল্পতায় ফেডারেশন কাপের ফাইনাল সমাপ্ত হয়নি। সেদিন বাফুফের ছয়-সাত জন কর্মকর্তা থাকলেও সভাপতি তাবিথ আউয়াল ছিলেন না। তাবিথ বাফুফে সভাপতি হওয়ার পর ২২ নভেম্বর চ্যালেঞ্জ কাপ হয়েছিল। সেই ম্যাচের ট্রফি প্রদানের জন্য যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না ফেডারেশনের সভাপতি। কিংস অ্যারেনা, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ ও ময়মনসিংহ ভেন্যুতে ঘরোয়া লিগের কোনো ম্যাচেই সভাপতি তাবিথকে খেলার জন্য মাঠে যেতে দেখা যায়নি।
২২ এপ্রিল ময়মনসিংহে অনেক ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনাবহুল দিনে স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন না লিগ কমিটির চেয়ারম্যান ও ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইমরুল হাসানও। তিনি আজও উপস্থিত হননি। লিগ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে যা তার আনুষ্ঠানিক দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় অনুষ্ঠিত কিছু ম্যাচে থাকেন ইমরুল। ফেডারেশনের সবচেয়ে সক্রিয়দের মধ্যে সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম অন্যতম। মিডিয়ার সামনে ও বিভিন্ন জায়গায় তার সরব উপস্থিতি থাকলেও ঘরোয়া ফুটবলে মাঠে তার উপস্থিতি শূন্যের কোঠায়।
আরও পড়ুন
অন্য তিন সহ-সভাপতির মধ্যে সাব্বির আহমেদ আরেফ শুধুমাত্র ব্রাদার্স ইউনিয়নের খেলায় যেতেন (শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন এক মাসের বেশি সময়) স্টেডিয়ামে, কারণ তিনি সেই ক্লাবের সদস্য সচিব। ওয়াহিদউদ্দিন চৌধুরি হ্যাপী ঘরোয়া কিছু ম্যাচে উপস্থিত হলেও, আরেক সহ-সভাপতি নাসের শাহরিয়ার জাহেদীকে মাঠে দেখা যায় না।
১৫ নির্বাহী সদস্যের মধ্যে ছাইদ হাসান কানন, সাইফুর রহমান মনি, সত্যজিত দাশ রুপু, মঞ্জুরুল করিম, টিপু সুলতান সরাসরি ক্লাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তারা ক্লাবের স্ব স্ব দায়িত্বে পালন করতেই নির্দিষ্ট ম্যাচে থাকেন। অন্য ম্যাচ দেখার সময়-সুযোগ সেভাবে মেলে না তাদের। অন্য সদস্যদের মধ্যে জাকির হোসেন চৌধুরি, সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া শাহীনই মূলত প্রতি সপ্তাহেই বিভিন্ন ভেন্যু ঘুরে ঘুরে খেলা দেখেন। সাবেক দুই জাতীয় ফুটবলার ইকবাল হোসেন ও গোলাম গাউস তাদের সঙ্গী হন কালেভদ্রে। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনে থাকা মাহফুজা আক্তার কিরণও সাম্প্রতিক সময়ে ঘরোয়া ফুটবল দেখতে স্টেডিয়ামে যাননি। এবার ভেন্যু নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। এ ছাড়া ম্যাচ ব্যবস্থাপনায় অনেক সংকট-সীমাবদ্ধতা থাকে। ফেডারেশন কর্তাদের অধিকাংশ সরেজমিনে না যাওয়ায় অজ্ঞাতই থাকেন সেসব বিষয়ে।
ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তারা জেলায় জেলায় গিয়ে ঘরোয়া লিগ দেখার সময় পান না। অথচ ভারতের শিলংয়ে জাতীয় দলের ম্যাচ দেখতে ঠিকই গেছেন অনেকে। আবার অনেকে সৌদি, দুবাইয়ে দলের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত না থাকলেও ভিসা করিয়ে রাখেন ফেডারেশনের মাধ্যমেই। ফেডারেশনের প্রশাসনিক প্রধান বেতনভুক্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার ফিফা-এএফসি’র নানা সভা-সেমিনারে যোগ দিতে কয়েকবার বিদেশ সফর করলেও তারও ঘরোয়া ফুটবল দেখতে জেলায় যাওয়ার সময় হয়ে উঠে না।
ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন আসলে ফুটবলপ্রেম ও নিবেদনের অনেক বুলি শোনান সাবেক খেলোয়াড় ও সংগঠকরা। তাদের অনেককেই পরবর্তী সময়ে ঘরোয়া লিগ চলার সময় মাঠে পাওয়া যায় না।
এজেড/এএইচএস