তারিকে মুগ্ধ ক্রুইফও

ফিনল্যান্ড প্রবাসী ফুটবলার তারিক কাজী গতকাল বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেছেন। অভিষেক ম্যাচেই ডিফেন্ডিং গুণে মুগ্ধ করেছেন অনেককে। সেই মুগ্ধতার তালিকায় রয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক ডাচ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফও।
বাংলাদেশ আফগানিস্তান ম্যাচ ছাপিয়ে তার দৃষ্টি ছিল বেশি তারিকের উপরই, ‘জামাল আজ অধিনায়ক সে কিন্তু আমার সময়ে প্রথম ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়। তারিকের বয়স কম। মাত্র শুরু করল। সেও একদিন অনেক দুর যাবে। অভিষেক ম্যাচ হলেও তারিক অনেক আত্নবিশ্বাসী ছিল। চাপে কখনো বিচলিত ছিল না।’
তারিকের জাতীয় দলের গুরু জেমি ডে অবশ্য দুই অভিষিক্তকেই ধন্যবাদ দিয়েছেন, ‘জাতীয় দলে প্রথম ম্যাচ হিসেবে তারিক ও জুয়েল উভয়ই দারুণ খেলেছে।’ তারিক অভিষিক্ত ম্যাচেই হলুদ কার্ড দেখেছেন। এটাকে তেমন গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন না কোচ, ‘আমরা এই ম্যাচে কয়েকটি কার্ড দেখেছি। এর মধ্যে দুই একটি কার্ড এড়ানোর মতো ছিল। ফুটবলে এ রকম হতেই পারে৷’
তারিক ফিনল্যান্ডে জাতীয় যুব দলে ছিলেন। সিনিয়র জাতীয় দলে খেলার স্বপ্নেই মুলত তিনি বাংলাদেশে আসেন৷ বাংলাদেশে আসার দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে তার স্বপ্নপূরণ হলো।
জামাল তারিকের দেখাদেখি অনেক প্রবাসী ফুটবলার বাংলাদেশে আসছেন। ফুটবল সংশ্লিষ্টদের ধারণা তাদের সুযোগ দিলে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল আরো শক্তিশালী হবে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য পাবে।
বসুন্ধরা কিংসেই রয়েছেন কাতার ও নরওয়ে প্রবাসী ফুটবলার এবং নাইজেরিয়ান থেকে বাংলাদেশি হওয়া ফুটবলার। তাদের সুযোগ দেয়া প্রসঙ্গে জেমি বলেন, ‘তাদেরকে ক্লাবের হয়ে খেলতে হবে। ক্লাবে না খেললে আমার পক্ষে সুযোগ দেয়া সম্ভব নয়।’
জাতীয় দলের নিয়মিত ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ ইনজুরিতে। এজন্য দ্বিতীয় লেগে বসুন্ধরা কিংসের নিয়মিত একাদশে ছিলেন ফিনল্যান্ড প্রবাসী ফুটবলার তারিক কাজী। কিংসের কোচ অস্কার ব্রুজনের হাতে রয়েছে আরো দুই জন প্রবাসী ও এক নাগরিকত্ব পাওয়া ফুটবলার। এদের জাতীয় দলের ডাক পাওয়া নির্ভর করছে মূলত কিংসে পারফরম্যান্স প্রদশর্নের উপর। মাহাদী, নবাব ও কিংসলকে খেলানো প্রসঙ্গে ব্রুজনের মন্তব্য, ‘আমি যখন যাকে খেলাই সেটা ক্লাবের স্বার্থে ও প্রয়োজনে। এখন তারিক খেলছে। সামনে ক্লাবের প্রয়োজনে তারাও হয়তো সুযোগ পেতে পারে।’
জামাল ভূঁইয়ার ক্ষেত্রে ঘটেছিল ব্যতিক্রম ঘটনা। জামাল জাতীয় দলে আগে খেলেছেন পরে বাংলাদেশের ক্লাবে এসেছেন। জামালকে সুযোগ দেয়া কোচ ক্রুইফ জেমির মন্তব্যের সঙ্গে পরোক্ষভাবে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, ‘প্রবাসী ফুটবলার হলেই হবে না অবশ্যই যোগ্যতাসম্পন্ন হতে হবে। যোগ্যতার প্রমাণের ক্ষেত্র নিজ ঘরোয়া পর্যায়ে হতে পারে আবার বাইরেও হতে পারে।’
তারিক কাজীর মতো প্রবাসী ফুটবলার জাতীয় দলে খেলায় নিজের চিন্তাকে সফল বলছেন ক্রুইফ, ‘আমি প্রবাসী ফুটবলার ও বিদেশিদের নাগরিকত্ব প্রদান এই দুটো বিষয়ে জোর দিয়েছিলাম। এই দুটোর সমন্বয় হলে বাংলাদেশ এশিয়ার মধ্যে ভালো অবস্থানে যেতে পারবে। বাংলাদেশের ফুটবল সংশ্লিষ্টরা এখন সেটা অনুসরণ করছে।’
জামাল ভূঁইয়ার পর জাতীয় দলে দ্বিতীয় প্রবাসী ফুটবলার এলেন আট বছর পর। তারিক কাজীর উত্তরসূরি পাওয়া যাবে কত দিন পর সেটাই দেখার বিষয়।
এজেড/এনইউ