টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির ২৫ বছর : অভিষেকের ১১ জন কে কোথায়

২৬ জুন, দিনটিকে দেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে ঐতিহাসিক মুহূর্তই বলা যায়। ২০০০ সালের এই দিনেই ৯টি টেস্ট খেলুড়ে দেশের ভোটে টেস্ট ক্রিকেটের অভিজাত ক্লাবে দশম সদস্য হিসেবে যোগ দেয় বাংলাদেশ। টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্তির মিশনে কেবল মাঠের পারফরম্যান্সই ভূমিকা রাখেনি, এর পেছনে ছিল অনেক কূটনৈতিক যুদ্ধও। চলতি বছর বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির ২৫ বছর পূর্তি হতে যাচ্ছে।
টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির পর একই বছরের ১০ নভেম্বর বাংলাদেশ দল প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেট খেলতে বাইশগজে নেমেছিল। অভিষেক ম্যাচেই শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে দারুণ আশা জাগালেও এখনও সেই টেস্টের আঙ্গিনায় রীতিমতো ধুঁকছে বাংলাদেশ।
অভিষেক টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান ছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। কিছুদিন আগে তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন। দেশের টেস্ট ক্রিকেটে বইছে বড় এক উপলক্ষ্য—টেস্ট মর্যাদাপ্রাপ্তির রজত জয়ন্তী। এ উপলক্ষ্যে নানা আয়োজন রেখেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। চলতি মাসের ২১ থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত বিশেষ আয়োজন অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। এর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি, প্রসার এবং সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে অনাবিল আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়াই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।
টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির দিন ২৬ জুনকে স্মরণীয় করে রাখতে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট দলের সদস্যদেরকে সঙ্গে নিয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের নর্থ প্লাজায় একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। স্মারক ব্লেজার ও ক্যাপ উদ্বোধনী টেস্ট দলের সদস্যদের হাতে হস্তান্তর এবং সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণ করা হবে।
ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টের ১১ জন বাংলাদেশি ক্রিকেটার এখন কে কোথায় এমন প্রশ্ন জাগে ভক্তদের মনে। সেই উত্তর খুঁজতে চেষ্টা করেছে ঢাকা পোস্ট।
নাঈমুর রহমান দুর্জয়
ক্রিকেট থেকে অবসরের পর যোগ দেন বিসিবির পরিচালনা পর্ষদে। কাজ করেছেন ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান হিসেবে। বাংলাদেশ হাই-পারফরম্যান্স (এইচপি) ইউনিটের হয়েও দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া ছিলেন আগের সরকারের সংসদ সদস্যও।
আকরাম খান
ক্রিকেট থেকে অবসরের পর দায়িত্ব গ্রহণ করেন বিসিবির প্রধান নির্বাচকের। পরে পরিচালক পদে যোগ দেন। দায়িত্ব সামলেছেন ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান পদে। বর্তমানে পরিচালক হিসেবে বিসিবিতে রয়েছেন তিনি।
আমিনুল ইসলাম বুলবুল
অবসর গ্রহণের পর চাকরি শুরু করেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থায় (আইসিসি)। এশিয়া অঞ্চলের ক্রিকেট উন্নয়নের জন্য কাজ করছিলেন তিনি। গেল মাসে তিনি বিসিবির অন্তর্বর্তী সভাপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন
হাবিবুল বাশার
সাবেক এই অধিনায়ক নির্বাচকের দায়িত্ব সামলেছেন গেল এক দশকেরও বেশি সময় ধরে। পরে নারী দলের অপারেশন্সের দায়িত্ব সামলান বাশার। বর্তমানে বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগে কর্মরত রয়েছেন তিনি।
খালেদ মাসুদ পাইলট
ক্রিকেট থেকে অবসরের পর কোচের ভূমিকায় দেখা গেছে পাইলটকে। কখনও আবার ম্যানেজার হিসেবেও তিনি দায়িত্ব সামলেছেন। বর্তমানে ক্লেমন ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন পাইলট।
আল শাহরিয়ার রোকন
খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর রোকন পাড়ি জমান প্রবাসে। বর্তমানে নিউজিল্যান্ডের নেপিয়ারে রয়েছেন পরিবারকে নিয়ে, সেখানে টুকটাক কোচিংয়ের কাজও চালান।
মেহরাব হোসেন অপি
ক্রিকেট থেকে অবসরের পর কোচিং দিয়ে শুরু করেন নতুন ক্যারিয়ার। পরে বয়সভিত্তিক দলের নির্বাচকের দায়িত্বে আসেন। মাঝেমধ্যে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কোচিংয়েও দেখা যায় তাকে।

শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ
অবসর গ্রহণের পর বিসিবি কিংবা কোচিং পেশায় যুক্ত হননি বিদ্যুৎ। সোজাসুজি যোগ দেন পারিবারিক ব্যবসায়ে, বর্তমানেও সেটি চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তবে বছরের বিশেষ ক্রিকেট ম্যাচগুলোতে দেখা যায় বিদ্যুৎকে।
মোহম্মদ রফিক
ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর রফিক কোচিং পেশা শুরু করেন। বিভিন্ন সময় বিসিবির কোচ হওয়ার কথা বললেও দেখা যায়নি তাকে। বর্তমানে ঘরোয়া লিগ বিপিএলে নিয়মিত কোচিং করিয়ে যাচ্ছেন রফিক।
হাসিবুল হোসেন শান্ত
ক্রিকেট ছাড়ার পর বর্তমানে বয়সভিত্তিক দলের নির্বাচক হিসেবে কাজ করছেন হাসিবুল হোসেন শান্ত।
বিকাশ রঞ্জন/মাহমুদুর রহমান
ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর ধর্ম পরিবর্তন করেন তিনি। নতুন পরিচয়ে বর্তমানে একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত রয়েছেন সাবেক এই ক্রিকেটার।
রাজিন সালেহ
বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট দলের দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছিলেন রাজিন। ক্রিকেট ছাড়ার পরে পুরোদস্তুর কোচিংয়ে মন দিয়েছেন তিনি। বিপিএল–ডিপিএলসহ ঘরোয়া প্রতিযোগিতার সব লিগে সরব উপস্থিতি রয়েছে তার। বর্তমানে বিসিবির হাই পারফরম্যান্স বিভাগের ব্যাটিং কোচের দায়িত্বে রয়েছেন রাজিন।
এসএইচ/এএইচএস/এফআই
