ইতিহাস গড়ে উইম্বলডনের নতুন রানি সিওটেক

একেবারে একপেশে এক ফাইনালে ইতিহাস গড়ে প্রথমবার উইম্বলডনের নারী এককে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন পোল্যান্ডের তারকা ইগা সিওটেক। যদিও এটি তার ষষ্ঠ মেজর গ্র্যান্ড স্ল্যাম ট্রফি। এতদিন কেবল উইম্বলডনটাই বাকি ছিল। অল ইংল্যান্ড ক্লাবের সেন্টার কোর্টে যুক্তরাষ্ট্রের আমান্ডা আনিসিমোভাকে ৬-০, ৬-০ গেমে হারিয়েছেন সিওটেক। ইতিহাসের মাত্র তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে তিনি প্রতিপক্ষকে ‘ডাবল ব্যাগেল’ উপহার দিয়ে ট্রফি জিতলেন।
সিওটেক-আনিসিমোভার ম্যাচটা স্থায়ী হয়েছে মাত্র ৫৭ মিনিট। এত কম দৈর্ঘ্যের শিরোপা নির্ধারণী লড়াই কমই দেখা যায়। ১১৪ বছর পর উইম্বলডনের ফাইনাল এতটা একতরফাভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে। এর আগেও সমান ৬-০, ৬-০ গেমে জয়ের রেকর্ড ছিল অভিজাত এই প্রতিযোগিতায়। ১৯১১ সালে ডরোথি ল্যাম্বার্ট-চ্যাম্বার্স উইম্বলডনের ফাইনালে ডোরা বুথবিকে ৬-০, ৬-০ গেমে হারান। এ ছাড়া সর্বকালের অন্যতম সেরা নারী টেনিস তারকা স্টেফি গ্রাফ ১৯৮৮ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেনে নাতাশা জভেরেভাকে ৬-০, ৬-০ গেমে হারিয়ে জেতেন।
গ্র্যান্ড স্ল্যামে এটি ছিল সিওটেকের শততম জয়। যা সেরেনা উইলিয়ামসের (২০০৪, ১১৬ ম্যাচে ১০০) পর সবচেয়ে দ্রুততম ১০০ ম্যাচ (১২০ ম্যাচের মধ্যে) জয় এবং এদিক থেকে তিনি এই মার্কিন কিংবদন্তির পর সর্বকনিষ্ঠ (২৪ বছর ৩০ দিন)। সবমিলিয়ে তিনি পঞ্চম সর্বকনিষ্ঠ। টানা ১৮ গেম জিতে ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ট্রফি উঁচিয়ে ধরলেন সিওটেক। পোল্যান্ডের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবেও তিনি উইম্বলডন জয়ের অনন্য কীর্তি গড়লেন।
— Wimbledon (@Wimbledon) July 12, 2025
যদিও প্রথমবার উইম্বলডনের ফাইনাল খেলতে নেমেছিলেন র্যাঙ্কিংয়ের এই অষ্টম খেলোয়াড়। প্রথমবার ‘ভেনাস রোজওয়াটার’ নামের ডিশ জিতে সিওটেকের বিশ্বাসই হচ্ছিল না। সেটি হাতে নিয়ে পোলিশ তারকা বলেন, ‘একদমই পরাবাস্তব মনে হচ্ছে। সত্যি বলতে এমন কিছু করার স্বপ্নও দেখিনি। আমার কাছে খুব বেশি মনে হচ্ছে। আগেও গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছি, ফলে নিজেকে অভিজ্ঞ ভাবলেও আমি এটা (উইম্বলডন) আশা করিনি। এখানে দারুণ দুটি সপ্তাহ কাটানোর জন্য প্রথমেই আমান্ডাকে অভিনন্দন জানাই। আশা করছি তুমি এখানে আরও অনেক ফাইনাল খেলবে।’
অন্যদিকে, ব্যক্তিগত জীবন ও ক্যারিয়ারের নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে ফাইনালে উঠেছিলেন আমান্ডা আনিসিমোভাও। তিনি বাবা ও কোচকে ২০১৯ সালে হারিয়ে পুরোদমে ভেঙে পড়েছিলেন। থমকে গিয়েছিল তার আমান্ডা ক্যারিয়ারও। পরবর্তীতে আবার মানসিক অবসাদের কারণে ২০২৩ সালে টেনিস থেকে লম্বা বিরতি নেন। ওই ডাব্লিউটিএ র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে ৪০০ এর বাইরে চলে যান এই মার্কিন টেনিস খেলোয়াড়। পরে কোর্টে ফেরেন গত বছর, চলতি আসর শুরু করেন ১৩তম বাছাই হিসেবে।

জনপ্রিয় ও অন্যতম ফেভারিট আরিয়ানা সাবালেঙ্কাকে সেমিফাইনালে হারানো আমান্ডা ফাইনালে হেরে কেঁদেকেটে একাকার হয়েছেন। পরক্ষণে নিজেকে সামলে নিয়ে ২৩ বছর বয়সী মার্কিন তারকা বলেন, ‘এখানে আসার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। উড়তে পারবেন না—এমন সংস্কার ঝেঁটিয়ে বিদায় করার জন্যও ধন্যবাদ। আমি অবশ্য এসব কারণে আজ হারিনি! আমি জানি আজ বেশি কিছু করতে পারিনি। তবে পরিশ্রম করে যাব। আশা করছি কোনো একদিন আবারও ফিরতে পারব এখানে।’
এএইচএস