ফিরলেন ‘সেই’ মেসি, বার্সার বিলবাও-জয়

চলতি মৌসুমে দলের পারফর্ম্যান্স এই ভালো তো এই খারাপ। লিওনেল মেসি নিজেও বেশ কিছুদিন ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। মাঝে সাঝে গোল পেলেও পাচ্ছিলেন না হ্যাটট্রিক কিংবা জোড়া গোলের দেখা। ৯ ম্যাচের সে খরা অবশেষে কাটলো অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের মাঠে। মেসির জোড়া গোলে বার্সেলোনা পেয়েছে ৩-২ ব্যবধানের জয়, তিন বছর পর সান মামেসে পূর্ণ তিন পয়েন্ট পায় কাতালানরা।
শেষ দুই মৌসুমে অ্যাথলেটিকের মাঠে জয় পাননি মেসিরা। গেল মৌসুমে লিগের শুরুর ম্যাচেই ১-০ ব্যবধানে হেরেছিল দলটি। এর আগের মৌসুমে পয়েন্ট খুইয়েছিল হোম-অ্যাওয়ে দুই লেগেই। তার ওপর যোগ হয়েছিল দলটির সাম্প্রতিক ফর্ম। সব মিলিয়ে বিলবাও থেকে জয় নিয়েই ফিরবে বার্সা, এ পক্ষে বাজি ধরতে চাইতেন না কোনো পাঁড় বার্সা সমর্থকও।
শুরুর দশ মিনিটের পারফর্ম্যান্সে আবারও পয়েন্ট হারানোর শঙ্কা মাথাচাড়া দেয় আরও। তৃতীয় মিনিটে প্রতি-আক্রমণ থেকে ইনাকি উইলিয়ামসের গোল এগিয়ে দেয় বিলবাওকে। এর মিনিট চারেক পর আবারও বিপদে পড়ে বার্সা রক্ষণ। প্রতি-আক্রমণ থেকে উইরি বের্চিচের শটটা লক্ষ্যে থাকলে হয়তো শুরুর দশ মিনিটেই দুই গোলে পিছিয়ে পড়তো কাতালানরা।
নবম মিনিটে সুযোগ আসে বার্সার সামনে। সের্জিনো ডেস্টের শটটা ঠেকিয়ে প্রতিপক্ষকে সে যাত্রায় গোলবঞ্চিত রাখেন বিলবাও গোলরক্ষক উনাই সিমন। এর মিনিট চারেক পর উসমান দেম্বেলের শটও ঠেকিয়ে দেন তিনি।
তবে ‘ব্লাউগ্রানাদের’ গোলের অপেক্ষা করতে হয়নি খুব বেশিক্ষণ। পরের মিনিটেই বাইলাইনের কাছ থেকে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের বলে মাথা ছুঁইয়ে দলকে সমতায় ফেরান পেদ্রি গঞ্জালেজ।
পরের গোলেও ছিলো তরুণ পেদ্রির ছোঁয়া। প্রতি আক্রমণে উঠে আসা তাকে ঠেকাতে গোলমুখ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন বিলবাও গোলরক্ষক। পেদ্রির চার পাশে বিলবাও ডিফেন্ডাররাও ঘিরে ধরেছিল। তখনই দারুণ বিচক্ষণতায় করা এক ব্যাকহিলে মেসিকে খুঁজে পান তিনি। প্রথম স্পর্শে জালে পাঠিয়ে বার্সেলোনাকে এগিয়েই দেন মেসি।
বিরতি আগে আরও গোটা দুই সুযোগ আসে কাতালানদের সামনে। অ্যান্টোয়ান গ্রিজমান ও মেসির দুটো শট রুখে ব্যবধান আর বাড়তে দেননি উনাই সিমন।
৫৩ মিনিটে মেসি একবার বল জালে জড়িয়েও গোলের দেখা পাননি অফসাইডের খড়গে। এর কিছু পরে বক্সের বাইরে থেকে তার বাঁকানো শট প্রতিহত হয় গোলপোস্টে। ৬২ মিনিটে তার শটটাও লেগেছিল পোস্টেই, তবে সে যাত্রায় সেটা জড়ায় জালে, ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ও দলীয় তৃতীয় গোলটিও পান মেসি। এর ফলে নয় গোল নিয়ে লা লিগা গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছেন তিনি। ৭২ মিনিটে তার করা শট আবারও গোলপোস্টে প্রতিহত না হলে হয়তো হ্যাটট্রিকটাও হয়ে যেত। শেষমেশ তা আর হয়নি।
উল্টো তার ভুলেই ম্যাচের ম্যাচের শেষ দিকে দ্বিতীয় গোলটা হজম করে বার্সা। তার ভুল পাস থেকে পাওয়া বলই ধরে ইকার মুনিয়াইনকে বাড়ান বেরেঙ্গুয়ের। ৮৯ মিনিটে মুনিয়াইনের গোলে আরও এক ড্রয়ের শঙ্কাই জাগে বার্সা শিবিরে। তবে, এরপর আর কোন ভুলচুক না করে ৩-২ ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে কাতালানরা। এই জয়ে ১৭ ম্যাচে ৯ জয় ও ৩ ড্রয়ে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে দলটি উঠে এসেছে পয়েন্ট তালিকার তৃতীয় স্থানে। দুই ম্যাচ কম খেলে ৭ পয়েন্টে এগিয়ে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ আছে শীর্ষে। বার্সার সমান ম্যাচে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে রিয়াল মাদ্রিদ।
এনইউ