ওভালে শেষদিনের রোমাঞ্চের অপেক্ষায় ভারত-ইংল্যান্ড

ইংল্যান্ডকে যখন ভারত ৩৭৪ রানের জয়ের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয়, অনেকেই ভেবেছিলেন ম্যাচটা সহজেই জিতবে শুভমান গিলের দল। চতুর্থ ইনিংসে এই রান তাড়া করে জেতা তো পাহাড় টপকানোর চেয়ে কম নয়। তবে কঠিন সেই কাজই প্রায় সহজ করে ফেলেছিলেন রুট আর ব্রুক। তবে ভারতও হাল ছাড়েনি। আর তাই শেষ বেলায় ম্যাচে ফেরার আভাস দেয় তারা। এর মাঝে আবার বাধ সাধে বৃষ্টি। আর তাই পঞ্চম দিনে গড়ানো ম্যাচে রোমাঞ্চকর শেষ লড়াইয়ের অপেক্ষায় দুই দল।
ওভালে এর আগে কোনো দলই চতুর্থ ইনিংসে ২৬৩ রানের বেশি তাড়া করে জেতেনি। সেই ঘটনাও ঘটেছিল ১৯০২ সালে। আর এই ম্যাচে ইংল্যান্ডের সামনের জয়ের লক্ষ্য ৩৭৪ রান। আর তাই ইনিংসের শুরুতে সবাই ভারতকে ফেবারিট ধরে নিয়েছিলেন। বিপরীতে জো রুট ও হ্যারি ব্রুক যতক্ষণ ব্যাটিং করছিলেন, মনে হচ্ছিল, নতুন রেকর্ড গড়ে হেসেখেলেই জিতে যাবে ইংল্যান্ড।
দুজনের ১৯৫ রানের জুটিতে একসময় ইংল্যান্ডের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ৩০১ রান। দুজনের সামনে অসহায় ভারতীয় বোলাররা। কিন্তু গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলে ক্রিকেটে ম্যাচের রং বদলে যেতে বেশিক্ষণ লাগে না। আর তাই যেন হ্যারি ব্রুককে ফেরালেন আকাশ দীপ। মিড অফে ক্যাচটা নিলেন মোহাম্মদ সিরাজ। যার কারণে বলা যায় এত দূর আসতে পেরেছেন ব্রুক, করতে পেরেছেন ১১১।

মূল ঘটনা, মাত্র ১৯ রানেই ফিরে যেতে পারতেন হ্যারি ব্রুক। তার তোলা ক্যাচটি দারুণভাবেই হাতে জমিয়েছিলেন ভারতীয় পেসার। তবে বিশ্বাসঘাতকতা করল পা। ভারসাম্য হারিয়ে যা ছুঁয়ে ফেলল ফাইন লেগ অঞ্চলের সীমানারেখা। আর তাই ১৯ রানে ফিরে যেতে যেতে ছক্কা উপহার পেয়ে গেলেন ব্রুক। চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে প্রসিধ কৃষ্ণার বলে সিরাজ সেই ক্যাচটি নিতে পারলে ইংল্যান্ডের স্কোর হয়ে যেত ৪ উইকেটে ১৩৭।
৯১ বলে সেঞ্চুরি করা সেই ব্রুক যখন শেষ পর্যন্ত আউট হলেন, তখন ম্যাচে ইংল্যান্ডের জয় নিয়ে বলতে গেলে তেমন কোনো সংশয়ই নেই। প্রয়োজন ৭৩ রান। উইকেটে রাজত্ব করছেন রুট। কিন্তু ওই ৭৩ রানের ৩১ যোগ হওয়ার পর হঠাৎই ম্যাচে ফিরে এল ভারত। ৫ রানের মধ্যে আরও ২ উইকেট শিকার করার মাধ্যমে।

প্রথমে বেথেলকে ফেরান প্রসিধ কৃষ্ণা। রুটের উইকেটটিও নিয়েছেন তিনি। এর আগে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩৯তম সেঞ্চুরি (১০৫) করে ফিরেছেন রুট। ইংল্যান্ডের স্কোর তখন ৬ উইকেটে ৩৩৭, তখনো দরকার ৩৭ রান। যে সিরিজ এত নাটকীয়তা উপহার দিয়েছে, শেষটায় কি আর তাতে আরেকটু নাটক যোগ হবে না! আলোকস্বল্পতার কারণে তাই বন্ধ হয়ে গেল খেলা।
কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি নেমে অকাল সমাপ্তি টেনে দিল দিনের খেলারই। জয় থেকে ইংল্যান্ড তখন ৩৫ রান দূরে। উইকেটে দুই জেমি- স্মিথ ও ওভারটন। আগের চারটি টেস্টই শেষ হয়েছে পঞ্চম দিনে। শেষ টেস্টটিকেও ঠিকই পঞ্চম দিনে টেনে নিয়ে গেল প্রকৃতি! আর এদিন শেষ ৪ উইকেট হাতে রেখে ৩৫ রানের অপেক্ষায় ইংল্যান্ড। ভারতও যে ছেড়ে কথা বলবে না তা নিশ্চিত।
৪র্থ দিন শেষে সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত: ২২৪ ও ৩৯৬।
ইংল্যান্ড: ২৪৭ ও ৭৬.২ ওভারে ৩৩৯/৬ (ব্রুক ১১১, রুট ১০৫, ডাকেট ৫৪, পোপ ২৭; কৃষ্ণা ৩/১০৯, সিরাজ ২/৯৫, দীপ ১/৮৫)।
এএল