‘১০০’ ছুঁয়েই ছোটনের কাছে ছুটলেন সাবিনা

‘একশ, এক..শো, সাবিনা, হানড্রেড হান..ড্রেড সাবিনা’ -কোরাসে গাইছিলেন বসুন্ধরা কিংসের নারী ফুটবলার থেকে শুরু করে কোচিং স্টাফের সবাই। কিংসের স্ট্রাইকার সাবিনা খাতুন নারী ফুটবল লিগে শততম গোলের মাইলফক পূর্ণ করেছেন আজ রোববার। প্রথম নারী ফুটবলার হিসেবে সাবিনা এই কীর্তি গড়েন।
আজ থেকে নারী ফুটবল লিগের দ্বিতীয় লেগ শুরু হয়েছে। নারী লিগে নিজের শততম গোল করতে আজ প্রয়োজন ছিল মাত্র দুই গোল। সদ্য পুষ্করণীর বিপক্ষে প্রথমার্ধেই দুই গোল পূরণ করেন সাতক্ষীরার এই নারী ফুটবলার। সাবিনার শততম গোল স্পর্শ করা ম্যাচে কিংস জেতে ৫-০ গোলে।

ঘরোয়া ফুটবলে কিংস নতুন এক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করছে মাঠে ও মাঠের বাইরে। সাবিনার ১০০ তম গোলের বরণে সেটা আরেকবার প্রমাণ হলো। সাবিনা খাতুন এবার বসুন্ধরা কিংসে খেলায় কিংসও এই ইতিহাসের সঙ্গী হলো অনেক ক্ষেত্রে। তাই সাবিনার এই বিশেষ রেকর্ড উদযাপনে কিংসের প্রস্তুতিও ছিল যথেষ্ট। আগে থেকেই ‘ ১০০ গোল সাবিনা’ লেখা জার্সি ছিল, পাশাপাশি ‘ লাল অক্ষরে ইংরেজিতে ১০০ লেখা একটি ক্রেস্টও ছিল সাবিনার জন্য।
আন্তর্জাতিক, ঘরোয়া বিভিন্ন পর্যায়ে জুনিয়র সিনিয়র মিলিয়ে সাবিনার গোল সংখ্যা সব মিলিয়ে ৩০০ ছাড়িয়ে আগেই। এরপরও আজ শুধু লিগের এই ১০০ গোল উদযাপনকে বিশেষভাবে দেখছেন দেশের নারী ফুটবলের প্রতিচ্ছবি,‘ প্রথমেই ধন্যবাদ জানাতে চাই ক্লাবকে। এমন বিশেষ একটি মুহূর্ত আমাকে উপহার দেয়ার জন্য। যখন ২৫০ গোল হয়েছিল (সামগ্রিকভাবে) তখনও আমাকে সম্মান জানিয়েছিল ক্লাব। বিশেষ করে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা ইমরুল স্যারকে (ইমরুল হাসান সভাপতি বসুন্ধরা কিংস) যার সুন্দর পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় আমরা এভাবে খেলতে পারছি’।
বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটে নারীদের ফুটবল খেলাটা এখনও বেশ চ্যালেঞ্জিং। ২০০৯-১০ সালের দিকে সাবিনারা যখন শুরু করেছিলেন তখন সেই চ্যালেঞ্জ ছিল আরো বেশি। লিগে ১০০ তম গোল স্পর্শ করার দিনে স্মরণ করলেন সেই দিনগুলো,‘ শুরুর দিকে অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল। ২০১০ সালে কক্সবাজারে যখন নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ হয় তখন আমি সেরা ফুটবলার হই। তখনই সিদ্ধান্ত নেই দেশের নারী ফুটবলের সঙ্গে থাকব এবং কিছু একটা করব।’

বসুন্ধরা কিংসের নারী ফুটবল দলের ম্যানেজার পিংকী। যিনি ২০০৯-১০ সালে স্কুল ফুটবলে ভিকারুননিসার হয়ে খেলেছেন লিগ খেলতে পারেননি। পড়াশোনা শেষ করে আবার ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। ম্যানেজার হিসেবে সাবিনার এই কৃত্তিত্বকে মূল্যায়ন করলেন এভাবে, ‘সাবিনার সাথে নারী ফুটবলে অনেকেই ছিলেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশ ঝরে পড়েছেন আবার কয়েকজন থাকলেও পারফরম্যান্স সেভাবে নয়। ধারাবাহিকভাবে পারফরম্যান্সের পাশাপাশি নিজেকে সচেতন রেখে ক্যারিয়ার সঠিক পথে রাখাটা খুব সহজ নয়। সাবিনা সেই কাজটা দারুণভাবেই করেছে।’
ঘরোয়া ফুটবলে লিগ অনিয়মিত । জাতীয় দলের ক্যাম্পেই অধিকাংশ সময় কেটেছে সাবিনার। তার ক্যারিয়ার অধিকাংশ সময় কেটেছে জাতীয় দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের কোচিংয়ে। আজ লিগে শততম গোলের স্পর্শ করার দিনেও শত আনন্দ ও ব্যস্ততার মধ্যেও তার ‘ছোটন স্যার’ এর কাছ থেকে দোয়া নিতে ছুটেছেন বিশেষ এই দিনেও।
এজেড/এটি