জাতীয় সাঁতারে বেড়েছে ইভেন্ট, বেড়েছে ব্যয়ও

ম্যাক্স গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় আগামী ২০-২৩ অক্টোবর মিরপুরে জাতীয় সুইমিং কমপ্লেক্সে শুরু হচ্ছে ৩৪তম জাতীয় সাঁতার, ডাইভিং ও ওয়াটার পোলো প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় প্রথমবারের মতো জাতীয় পর্যায়ে নারীদের ৩টি ডাইভিং ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
ওয়ার্ল্ড অ্যাকোয়াটিকসের ইভেন্ট অনুযায়ী এই প্রথমবার পুরুষ বিভাগে ৮০০ মি. ফ্রি স্টাইল, মহিলা বিভাগে ১৫০০মি. ফ্রি স্টাইল এবং ৪x১০০ মিক্সড ফ্রি স্টাইল রিলে (পুরুষ ও মহিলা) এবং ৪x১০০ মিক্সড মিডলে রিলে (পুরুষ ও মহিলা) ইভেন্টগুলো জাতীয় সাঁতারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
নতুন ইভেন্টগুলোসহ সাঁতারে (পুরুষ-২০টি, নারী-২০টি ও মিক্সড রিলে- ২টি) মোট ৪২টি ইভেন্ট, ডাইভিংয়ে (পুরুষ-৩টি, নারী-৩টি) মোট ৬টি ইভেন্ট এবং ওয়াটার পোলোসহ সর্বমোট ৪৯টি ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় প্রতিযোগিতায় এবার বাজেট ধরা হয়েছে ৪২ লাখ টাকা। পৃষ্ঠপোষক ম্যাক্স গ্রুপ প্রদান করবে ২৫ লাখ টাকা। বাকি টাকা ফেডারেশনের তহবিল থেকে খরচ হবে। বিগত সময়ে জাতীয় সাঁতার ২০-৩০ লাখ টাকার মধ্যে সম্পন্ন হতো। এবার প্রায় ১০-১২ লাখ টাকা বেশি ব্যয় হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শাহীন বলেন, 'এবার আমরা প্রতিটি পদকে অর্থ প্রদান করছি। রেকর্ডধারীরা ৫ হাজার টাকা করে পাবেন। তাছাড়া টিএ/ডিএ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে সামগ্রিকভাবে ব্যয়ের পরিমাণ বেড়েছে।'
জাতীয় সাঁতারের সংবাদ সম্মেলন মানেই স্কোরবোর্ড ইস্যু। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে স্কোরবোর্ড লাগালেও সেটা সাঁতার ফেডরেশন ব্যবহার করতে পারে না। ফলে হ্যান্ডটাইমিংয়েই চলছে কর্মকান্ড। মাঝে সেরা সাঁতারু অন্বেষণ সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্কোরবোর্ড নিয়ে আশারা বাণী শোনালেও আজ অবশ্য অসহায় আত্নসমর্পণ করেছেন, 'আপনাদের মতো আমরাও চাই ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ডে খেলা হোক কিন্তু আমাদের ফেডারেশনের সামর্থ্য নেই এত টাকা ব্যয়ে স্কোরবোর্ড স্থাপনের। ফলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রতি আমরা নির্ভরশীল। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদও ঠিকাদারের কাছ থেকে কাজ আদায় করতে পারছে না।'
আগামী বছর জানুয়ারিতে এসএ গেমস অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এজন্য সাঁতার ফেডারেশন সবার আগে বিদেশি কোচ এনেছিল। মিশরীয় কোচ সাঈদ ম্যাকডি সাঁতারুদের নিয়ে কাজ করছেন। যে উদ্দেশ্যে আনা হয়েছিল সেই এসএ গেমস অনিশ্চিত। মিশরীয় কোচের ভবিষ্যত নিয়ে সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'তার চুক্তি জানুয়ারি পর্যন্ত। সে ভালো মানের কোচ। তার মাধ্যমে সাঁতারুদের উন্নতি হচ্ছে। আমরা চাই গেমস না হলেও তাকে রাখতে। এজন্য অলিম্পিক ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সহায়তা প্রত্যাশা করব।'
বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) ভবনের ডাচ বাংলা ব্যাংক অডিটরিয়ামে রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিযোগিতার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন সুইমিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শাহীন। এবারের প্রতিযোগিতায় বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা, জেলা ক্রীড়া সংস্থা, সুইমিং ক্লাব, বিকেএসপি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ ও বাংলাদেশ আনসারসহ মোট ৬৭টি টিম অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় ৫১৬ জন পুরুষ ও ৭৯ জন নারী সাঁতারু, ১০৫ জন টিম অফিসিয়াল এবং ১২০ জন মিট অফিসিয়ালসহ সর্বমোট ৮১৬ জন অংশ নিচ্ছেন। নারীদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। এ নিয়ে সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্য, 'গত কয়েক বছর ধরেই নারী সাঁতারুর অংশগ্রহণ কম। বাংলাদেশের নানা পারিপার্শ্বিকতায় নারী সাঁতারুরা সেভাবে আসছেন না। আমরা সেভাবে সুযোগ-সুবিধা এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দিতে পারি না ফলে সাঁতারে খেলোয়াড় আকৃষ্ট কম হচ্ছে।'
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সুইমিং ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক নিবেদিতা দাস, কোষাধ্যক্ষ মেজর (অবঃ) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, নৌবাহিনীর কমান্ডার আলিমুল ইসলাম এবং স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স গ্রুপের প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল পলাশ।
এজেড/এইচজেএস