ইতালিয়ান ফুটবলে দুর্দশার জন্য রাজনীতিবিদদের সমালোচনায় বুফন

চারবারের ফিফা বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ইতালি। ২০০৬ সালে জিনেদিন জিদানের ফ্রান্সকে হারিয়ে শেষবার শিরোপা জিতেছিল তারা। তারপর থেকে দেশটির ফুটবলে পতন দেখা গিয়েছে। পরের দুই আসরে গ্রুপ পর্বে বিদায় নিয়েছে। আর শেষ দুটি আসরে তো খেলতেই পারেনি। টানা তৃতীয়বার বিশ্বকাপে না ওঠার ঝুঁকিতে আজ্জুরিরা। আর ইতালির ফুটবলের অধঃপতনের জন্য আত্মতুষ্টি ও রাজনীতিবিদদের দুরদর্শিতার অভাবকে দায়ী করেছেন জিয়ানলুইজি বুফন।
ইতালির জাতীয় দলের হেড অব ডেলিগেশন বুফন ইতালিয়ান ফুটবলের দুর্দশার মূল্যায়ন করেছেন। গাজেত্তা দেল্লো স্পোর্তকে এক সাক্ষাৎকারে নিজের মতামত জানান সাবেক কিপার।
২০১০ সালের বিশ্বকাপ থেকে ফেরার পর বুফন বলেছিলেন, জাতীয় দলের ভোগান্তি কেবল শুরু। তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা কিছু ভুল করেছিলাম, কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু সাবধান: আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আমরা বিশ্বকাপ নয়, কোয়ালিফিকেশন জেতাটাই উদযাপন করতে যাচ্ছি।’
সেটা কোনো ভবিষ্যদ্বাণী ছিল না, পরিস্থিতিটা বুঝতে পেরেছিলেন বুফন, ‘আমি বুঝেছিলাম কী হতে যাচ্ছে। প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত সবকিছু বদলে গেল।’
ইতালি ও অন্য ইউরোপিয়ান প্রতিদ্বন্দ্বীর পার্থক্য করে বুফন জানালেন, ইতালি এখনো অতীতের ভারে ভারাক্রান্ত। যেখানে অন্য বড় দেশগুলো বর্তমান নিয়ে ভাবছে। তিনি বললেন, ‘সমস্যা হলো দুটি পৃথিবীতে বাস করা। একদিকে আমরা আমাদের ইতিহাস নিয়ে অহংকার করি, আমরা ভাবি সবকিছু আমাদের ঐশ্বরিক আশীর্বাদ।’
বুফন বলে গেলেন, ‘ত্রিশ বছর ধরে ফ্রান্স সেরা দল, স্পেন প্রায় ২০ বছর। তারা বর্তমানে বাস করে।’
ইতালির দুর্দশার কারণ বলতে গিয়ে বুফনের কথা, ‘২০ বছর আগের ফল এখন পাচ্ছি, যখন আমরা আমাদের শক্তি, বুফন, ক্যানাভারো, টট্টিকে নিয়ে আমরা আত্মতৃপ্তিতে থাকতাম। ভাবতাম সবকিছু এমনই থাকবে। অথচ তখন আমাদের টেকনিক্যাল ও ট্যাকটিকাল মডেল নিয়ে ভাবা উচিত ছিল।’
দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুরদর্শিতার অভাবের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। বড় ধরনের সংস্কার করার জন্য রাজনীতিবিদদের মধ্যে সদিচ্ছার অভাব রয়েছে মনে করেন তিনি। এই লিজেন্ডারি গোলকিপার বললেন, ‘সংস্কার করতে সাহসিকতা লাগে। রাজনীতিবিদরা সেই কাজটা করতে পারেন না, তারা কেবল ভোটের দিকে মনোযোগ দেন। কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের মধ্যে।’
ইতালিয়ান ফুটবলে লাগাতার স্থবিরতার ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন বুফন। তার মতে স্থিতিশীল ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা না হলে এই ব্যর্থতা চলতেই থাকবে। তিনি বললেন, সহজ কথা: দশ ব ছরের মধ্যে আপনি আমার জায়গায় আরেক বুফনের সাক্ষাৎকার নিবেন। কিন্তু প্রশ্ন ও উত্তর হবে একই।’
এফএইচএম/