মেসির সৌভাগ্য রেখা তিনি

‘লাকি চার্ম’! বাংলা অনুবাদ করলে দাঁড়ায়-এমন কিছু, যা সৌভাগ্য বয়ে আনে। আরও ছোট্ট করে বললে- ‘সৌভাগ্যের প্রতীক।’ লিওনেল মেসির জীবনে সেই ‘এমন কিছু’ হলেন আন্তোনেল্লা রোকুজ্জো। তার শৈশবের প্রেমিকা। মনের মানুষ! আর্জেন্টাইন এ তারকার বিশ্বাস-আন্তোনেল্লাই তার জীবনে সব সৌভাগ্য বয়ে এনেছেন, অহর্নিশ আনছেন!
সংস্কার কিংবা কুসংস্কার যা-ই বলুন না কেন, তাতে বার্সেলোনার এই আর্জেন্টাইন এ মহাতারকার কিছু যায় আসে না। তার বিশ্বাসটা একান্তই নিজের। আর সেই আস্থায় কখনও চিড় ধরে না!
চিড় ধরবেই বা কী করে? আন্তোনেল্লার সঙ্গে পরিচয়ের পর সাফল্যের গ্রাফটা যে আকাশ ছুঁই ছুঁই। সাফল্যের কথা যদি বলেন তবে অবশ্যই বলতে হয় তার সঙ্গে পরিচয়ের পর থেকে মেসির শুধুই ‘এগিয়ে চলার গল্প’।
দু’জনই একই শহরের। দূরসম্পর্কের আত্মীয়। বন্ধুর ছোট বোন। পরিচয়টা আগেই ছিল। তবে তাকে প্রেমিকা করার চিন্তাটা অনেক পরে মাথায় এসেছে মেসির। আর্জেন্টিনার রোজারিও ছেড়ে তিনি তখন বার্সেলোনার বাসিন্দা। ন্যু ক্যাম্পের ক্লাবে তার প্রতিভার যত্ন-আত্তি চলছে। এভাবেই একসময় বার্সার মূল দলে উঠে আসলেন। তাকে চিনতে শুরু করল ফুটবল বিশ্ব। আর মেসি বুঝতে শুরু করলেন জীবনে তার বসন্ত এসেছে।
এরই মধ্যে বার্সেলোনা আর রোজারিওতে আসা-যাওয়া চলতে থাকল। কোন ফাঁকে যে বন্ধুর বোনটিকে ভালোবেসে ফেললেন টেরই পাননি। ভালোবাসা বুঝি এভাবেই আসে, নীরবে, গোপনে!
তবে গোপন কথাটি গোপন থাকেনি। ২০০৮ সালে ক্রিসমাসের ছুটি পেয়েই ছুটলেন দেশে। পরিকল্পনা করলেন এবার আন্তোনেল্লাকে ভালোবাসার কথা বলেই ছাড়বেন। যে প্লেমেকার প্রতিপক্ষের ফুটবলারদের কাছে রীতিমতো আতঙ্ক তিনিই কি না নার্ভাস। বুঝতে পারছিলেন না কী করে বলা যায় মনের কথা। কী করে বলা যায়-‘টে আমাও’। মানে ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’।
দুনিয়ার তাবত প্রেমের মতোই গল্প। ঘেমে অস্থির মেসি কাঁপা কাঁপা গলায় ভালোবাসার কথা বলতেই আন্তোনেল্লার মুখে হাসি। ব্যস, শুরু হয়ে গেল আরও একটা প্রেম কাহিনি!
২০০৮ সালেই সংসার শুরু। এরপরই একের পর এক সাফল্য পেয়েছেন মেসি। টানা চারবার হয়েছেন বিশ্বের সেরা ফুটবলার। হাতে উঠেছে ক্লাব ফুটবলের সব বড় শিরোপা। নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য এক উচ্চতায়। জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও ফিরেছেন অপ্রাপ্তি সঙ্গী করে। ২৪ জুন, ৩৪তম জন্মদিনের দিনটাতেও হাল ছাড়েননি।
মেসি তার পরিচ্ছন্ন ফুটবলের মতোই স্বচ্ছ। কলঙ্কমুক্ত। সেটা ব্যক্তিগত জীবনেও। অন্যসব ফুটবলারের জীবনে যেমনটা হয়, ‘পেজ থ্রি’ সেলিব্রেটিদের নিয়ে কতশত রটনা! কিন্তু ৩৪ বছর বয়সী ফুটবলারের ভুবনজুড়ে শুধুই পরিবার। বাবা-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী আর তিন পুত্র সন্তান- থিয়াগো, মাতে আর সিরো।
প্রত্যেক সফল পুরুষের সাফল্যের পেছনে থাকেন এক নারী-বহুল প্রচলিত এ প্রবাদের প্রমাণ তো মেসি নিজেই!
এটি/এমএইচ
