৪৩২ রানের ম্যাচ জিতে টানা অষ্টম সিরিজ ভারতের

টি-টোয়েন্টিতে অপ্রতিরোধ্য ভারত। কুইন্টন ডি কক ও ডেভাল্ড ব্রেভিসের ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে টানা অষ্টম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জিতল তারা। শিশিরের সুবিধা নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই টপ অর্ডার ব্যাটার দশ ওভারের মধ্যে ১ উইকেটে স্কোর ১১৮ তে নেন। তবে বল পাল্টাতে ম্যাচ ঘুরে যায়। রান তাড়ায় ভারতের কাছে ১৫ রানের ব্যবধানে চার উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। ৪৩২ রানের ম্যাচে জসপ্রিত বুমরাহ দুই দলের ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন। ৪ ওভারে ১৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন তিনি। মার্কো জানসেন ১৬তম ওভারে টানা ছয় মেরে ভারতকে শেষবার ভয় ধরিয়ে দেন। কিন্তু বুমরাহর বলে স্বাগতিকদের অষ্টম শিকার হয়ে তিনি ফিরলে আর পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা।
এর আগে ভারতের হয়ে ১৬ বলে দ্বিতীয় দ্রুততম ফিফটি করেন হার্দিক পান্ডিয়া। তিলক ভার্মা ৪২ বলে ৭৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে ম্যাচ নাগালে রাখেন। তিলক ও হার্দিকসহ চার ভারতীয় ব্যাটার প্রথম বলে বাউন্ডারি মেরেছেন। তাদের মধ্যে হার্দিক ছিলেন বিপজ্জনক, প্রথম সাত বলে ৩১ রান করেন এবং ইনিংস শেষ করেন ২৫ বলে ৬৩ রানে।

পায়ের চোটে শুভমান গিল না থাকায় সাঞ্জু স্যামসন ওপেনিংয়ে দায়িত্ব নেন। গতিময় ব্যাটিং করেন তিনি। সঙ্গে অভিষেক শর্মা তার সহজাত ব্যাটিং করেন। ২১ বলে ৩৪ রান করেন তিনি। দুজনে মিলে ৫.৩ ওভারে ৬৩ রান তোলেন। পাওয়ার প্লের পর আবারো হতাশ করেছেন স্যামসন। নবম ওভারে ডোনোভান ফেরেইরার ফিরতি ক্যাচ মিসে জীবন পান, তিন বল পর মাঠ ছাড়েন তিনি জর্জ লিন্ডের শিকার হয়ে। ২২ বলে ৩৭ রান করেন স্যামসন। পাওয়ার প্লের বাইরে ৯ বলে ১০ রান আসে তার ব্যাটে।
সূর্যকুমার যাদব আন্তর্জাতিক ফিফটি ছাড়াই বছর শেষ করলেন। করবিন বশের শিকার হন তিনি। সূর্যকুমারকে আউট করে যেন নিজেদের ক্ষতি করে প্রোটিয়ারা। অভিষেক ও তিলকের মতো তিনিও প্রথম বল শুরু করেন ছক্কা মেরে। তারপরও থামেননি। পরের ওভারে লিন্ডেকে দুটি করে চার ও ছক্কা মারেন। হার্দিকের সঙ্গে তিলকও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন। দুজনে মিলে ৭.২ ওভারে ১০৫ রান যোগ করেন। শিবম দুবেও প্রথম বলে ছক্কা মারেন।

ভারত ৫ উইকেট হারিয়ে ২৩১ রান করে। লক্ষ্যে নেমে ডি কক আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। শততম টি-টোয়েন্টিতে ইনিংসের দ্বিতীয় বল থেকে টানা তিন চার মারেন তিনি। আর্শদীপ সিংয়ের প্রথম দুই ওভারে ৩২ রান তোলেন ডি কক। রিজা হেনড্রিকস আবার হতাশ করলেন। সপ্তম ওভারে বরুণ চক্রবর্তীকে উইকেট দেন তিনি। তাতে অবশ্য খারাপ হয়নি। ব্রেভিস ও ডি কক ঝড় তোলেন। পরের ওভারে বরুণের কাছ থেকে ২৩ রান আদায় করেন তারা। হার্দিকের ওভারেও দুজনে তুলে নেন ১৯ রান। পানি বিরতির আগে দুই ওভারে ৪২ রান তুলে ভারতকে চাপে ফেলেছিল প্রোটিয়ারা।
১১তম ওভারে শুষ্ক বল নিয়ে বাজিমাত করেন বুমরাহ। অফকাটারে ডি কককে ফেরান তিনি। ৩৫ বলে ৯ চার ও ৩ ছয়ে ৬৫ রান করেন প্রোটিয়া ওপেনার। পরের দুই ওভারে আরও তিন উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে সফরকারীরা। শেষ দিকে জানসেন ঝড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিল। শেষ চার ওভারে ৫৫ রান খুব একটা কঠিন ছিল না। কিন্তু বুমরাহ তার বাকি দুই ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করেন। জানসেনকে ফেরান তিনি। ভারত ম্যাচ জেতে ৩০ রানে। ৮ উইকেটে ২০১ রানে থামে দক্ষিণ আফ্রিকা। আহমেদাবাদে এই জয়ে ৩-১ এ সিরিজ জিতল ভারত। এনিয়ে টানা ১৪তম সিরিজে অপরাজিত থাকল তারা।
এফএইচএম/