তদন্তে জানা গেল, মেসিকে আনতে কত খরচ করেছে ভারত

লিওনেল মেসি ভারত ঘুরে গেলেন। পুরোনো বন্ধু লুইস সুয়ারেজ ও রদ্রিগো ডি পল ছিলেন সঙ্গে। সফরের শুরুতে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়লেও আর্জেন্টিনা ফরোয়ার্ড ফিরে গেছেন সুখকর স্মৃতি নিয়ে। কলকাতায় চরম বিশৃঙ্খলা না হলে মেসির ‘জিওএটি ইন্ডিয়া ট্যুর’ হতে পারত ভারতের জন্য এক দারুণ অর্জন। কিন্তু সল্টলেকের যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে যা হলো, তার জের ধরে এই আয়োজন নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। স্টেডিয়ামে ভাঙচুরের কারণে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৪ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এই ইভেন্টের উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তকে। তার মাধ্যমেই জানা গেল, মেসিকে আনতে কত খরচ হয়েছে, যা শুনলে ভিরমি খেতে হবে।
কলকাতায় মেসিকে দেখার জন্য ন্যূনতম সাড়ে চার হাজার টিকিট কিনেছিলেন ভক্তরা। তার আগে হোটেলে মিট অ্যান্ড গ্রিট অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে ছবি তোলার ছাড়পত্রের জন্য মূল্য ধার্য হয়েছিল ২৫ লাখ টাকা। কিন্তু মেসিকে আনতে যে খরচ হয়েছে তার মাত্র ৩০ শতাংশ তোলা গেছে তাকে দেখার টিকিট ও ছবি তোলার স্পেশ্যাল পাস বিক্রি করে।
মেসিকে ভারতে আনতে খরচ হয়েছে ১০০ কোটি টাকায়। চুক্তির অঙ্কের পরিমাণ তদন্তকারীদের জানিয়েছেন উদ্যোক্তা শতদ্রু। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, তদন্তকারীদের শতদ্রু বলেছেন, ‘ভারত সফরের জন্য লিওনেল মেসিকে ৮৯ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। ভারত সরকারকে কর বাবদ দেওয়া হয়েছিল ১১ কোটি টাকা।’
সব মিলিয়ে ১০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল বলে তদন্তকারীদের জানিয়েছেন শতদ্রু। এর মধ্য়ে ৩০ শতাংশ টাকা পাওয়া গেছে স্পনসরদের থেকে। বাকি ৩০ শতাংশ টাকা এসেছে টিকিট বিক্রি করে।
যুবভারতী স্টেডিয়ামে মেসিকে ঘিরে যে বিশৃঙ্খলা দেখা গিয়েছিল, তার জেরে কলকাতাতে আগেভাগে কর্মসূচি বাতিল করতে হেয়ছিল। ওই ঘটনার পর কলকাতা বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল শতদ্রুকে। হায়দরাবাদের উদ্দেশে রওনা হওয়ার জন্য মেসির ব্যক্তিগত বিমানে তিনি উঠে পড়লেও তাকে আটক করা হয়।
গত শুক্রবার শতদ্রুকে টানা জেরা করে আরও তথ্য পেয়েছেন বিশেষ তদন্তকারী দলের কর্মকর্তারা। শতদ্রু বলেন, ‘পিঠে হাত দেওয়া, জড়িয়ে ধরা একেবারেই পছন্দ করেননি মেসি।’ বিদেশ থেকে আসা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদেরও বিষয়টি জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু লাভ হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়ামন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস তার আত্মীয়স্বজনদের এনেছেন ক্ষমতার জোরে। মেসির কোমর ধরেও তাকে ছবি তুলতে দেখা যায়। অবশ্য ওই ঘটনার জেরে তদন্ত চলা পর্যন্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন তিনি।
এফএইচএম/