ক্রোয়াট রূপকথা থামল স্পেনের অতিরিক্ত সময়ের দুই গোলে

রূপকথা তাহলে এভাবেই জন্ম নেয়! স্পেনের বিরুদ্ধে ম্যাচে কোপেনহেগেনে ঘটল যেমন। ৮৫ মিনিট অবধি যেই ম্যাচের স্কোরলাইন ৩-১, নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষে সেটাই ৩-৩। অবিশ্বাস্য, চোখের জন্য শান্তির অথবা ‘এটা কী হলো!’ কীভাবে ব্যাখ্যা করা যায় এমন ফিরে আসা!
লড়াইটা যে লুকা মদ্রিচদের জমে আছে রক্ত। তারা সেটা দেখিয়ে দিলেন আরও একবার। শেষ অবধি অবশ্য ফল যায়নি তাদের পক্ষে। স্পেনের কাছে ৫-৩ গোলে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে এবারের ইউরোর শেষ ষোলো থেকে। তবুও ক্রোয়েটরা যা করল, তা তো সত্যিই দারুণ কিছু!
নাটকীয়তায় মোড়ে থাকা ম্যাচের প্রথম নাটকের জন্ম দিয়েছিলেন উনাই সিমন। ডাগ আউটে ডেভিড ডি গিয়াকে বসিয়ে তার ওপর আস্থা রেখেছিলেন কোচ লুইস এনরিকে। তিনিই কি না স্পেনকে ডুবাতে বসেছিলেন শেষ ষোলোর মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে।
পেদ্রির দেওয়া ব্যাক পাসে ভড়কেই গিয়েছিলেন বোধ হয়। ঠিকঠাক রিসিভই করতে পারলেন না, বল গিয়ে জড়িয়ে গেল নিজেদের জালে! মনে হচ্ছিলো ওই গোল ডুবাবে স্পেনকে। গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচের আগে স্কোরিংটা অনেক ভুগিয়েছে লুইস এনরিকের দলকে।
কিন্তু তখন কে জানত, এই ম্যাচে পরে স্পেন দেবে পাঁচ গোল! ম্যাচের ৩৪ মিনিটে যেটার শুরু করেছিলেন পাবলো সারাভিয়া। বা পায়ের দারুণ শটে তিনি বল জড়িয়েছিলেন জালে।
৫৭ মিনিটে ওই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন চেসার আজফিলিকুয়েটা। ফারান তোরেসের বাড়িয়ে দেওয়া বলে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন তিনি। এরপর ৭৬ মিনিটে পাও তোরেসের কাছ থেকে বল পেয়ে গোলটা করেন ফারান তোরেস নিজেই।
৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পর মনে হচ্ছিলো স্পেনের জয়টা সময়ের ব্যাপার মাত্র। নিশ্চয়ই স্বস্তির নিশ্বাস নিয়ে তখন উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন স্পেনের সমর্থরা। অন্যদিকে হতাশায় পুড়ছিলেন ক্রোয়েশিয়ার সমর্থকরা। কিন্তু কে জানত, তখনো খেলার আসল অংশটাই বাকি।
৮৫ মিনিট মারসাব ওলসিক গোল করে ব্যবধানটা কমান। কিন্তু তখনো যে ম্যাচে ফিরতে আরও এক গোল দরকার ক্রোয়েশিয়ার। সেটা করবেন কে? করলেন মারিও মাসলিক, যোগ করা ছয় মিনিট সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে!
এরপর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে যদিও আর নাটকীয় কিছু ঘটেনি। যে আলভারা মোরাতাকে নিয়ে জমা হয়েছিল সমালোচনার পারদ। গোল করতে পারছেন না বলে বাচ্চা মারা যাক, ক্ষুব্ধ সমর্থরা চাইছিলেন এমন।
সেই তিনিই ম্যাচের ঠিক একশতম মিনিটে দারুণ এক গোল করে ফের এগিয়ে দেন স্পেনকে। তিন মিনিট বাদেই মাইকেল ওইরাজাবাল গোল করে নিশ্চিত করেন তাদের জয়। ৫-৩ ব্যবধানে জয় নিয়ে শেষ আটে পৌঁছে যায় লুইস এনরিকের দল।
এমএইচ/ওএফ