অ্যাটলেটিকোকে প্রথম হারের স্বাদ দিয়ে শিরোপার লড়াইয়ে রিয়াল

মৌসুমের প্রথম মাদ্রিদ ডার্বি। সেটা ছাপিয়ে লা লিগার সমীকরণ ম্যাচটাকে বানিয়ে দিয়েছিলো রিয়াল মাদ্রিদের বাঁচা মরার লড়াই। সে ম্যাচে অ্যাটলেটিকোকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে বড় এক পদক্ষেপই নিলো জিনেদিন জিদানের দল।
ম্যাচের আগে ১০ ম্যাচ থেকে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে অ্যাটলেটিকো ছিলো টেবিলের শীর্ষে, আর এক ম্যাচ বেশি খেলে ২০ পয়েন্ট নিয়ে রিয়ালের অবস্থান ছিলো চারে। ম্যাচটা হারলে এক ম্যাচ বেশি খেলেও নগর-প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে নয় পয়েন্টে পিছিয়ে পড়তো জিদানের শিষ্যরা। লিগ শিরোপার লড়াইয়েও ‘রোহিব্ল্যাঙ্কো’ দের থেকে যোজন যোজন ব্যবধানে পিছিয়ে পড়তো, তা আর না বললেও হয়।
এমন সব সমীকরণ চলতি মৌসুমে যতো বারই রিয়ালকে চোখ রাঙানি দিয়েছে, সার্জিও রামোসরা ততোবারই দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছেন দারুণ নৈপুণ্যে। এদিনও দিলেন। তবে একটু ভিন্নভাবে।
২০২০-২১ মৌসুমে অ্যাটলেটিকো-রক্ষণ লা লিগায় তো বটেই ইউরোপেও সবচেয়ে শক্তিশালী। ১০ ম্যাচ থেকে হজম করেছিলো মোটে দুই গোল। এমন রক্ষণাত্মক রেকর্ড যাদের, তাদের বিপক্ষে জিততে সেটপিস কাজে লাগানোই ছিলো জিদানের প্রধান টোটকা। ম্যাচে বেশ সুযোগ সৃষ্টি করলেও তাই শেষমেশ দুটো গোল এসেছে সেই সেটপিস থেকে।
এস্তাদিও আলফ্রেডো ডি স্টেফানোয় রিয়াল এগিয়ে যেতে সমন নিয়েছে ১৫ মিনিট। কর্নার থেকে টনি ক্রুসের যোগানে ক্যাসেমিরোর করা গোলটির আগে প্রথম সুযোগটাও পায় স্বাগতিকরাই। কারিম বেনজেমার বাম পায়ে করা শট ঠেকিয়ে যে যাত্রায় দলকে বিপদমুক্ত রেখেছিলেন গোলরক্ষক ইয়ান অবলাক।
১৫ মিনিটে গোল হজমের পর ম্যাচে ফেরার জোর চেষ্টাই চালিয়েছে সফরকারী অ্যাটলেটিকো। তবে সার্জিও রামোস ফেরায় ক্রমশ জমাট হওয়া রিয়াল রক্ষণ কোনোরকম বিপদ ছাড়াই শেষ করে প্রথমার্ধ।
পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করা অ্যাটলেটিকো তিনটি বদলি আনে বিরতিতে। ফেলিপে, হেক্টর হ্যারেরা আর ইয়ানিক কারাসকোর বদলে থমাস লেমার, রেনান লোডি ও আনহেল কোরেয়াকে মাঠে আনেন কোচ দিয়েগো সিমিওনে। তাতে খেলার গতিতে পরিবর্তন আসে কিছুটা। মার্কোস ইয়োরেন্তের ক্রসে শট লেমারের লক্ষ্যভ্রষ্ট না হলে ৫৫ মিনিটেই সমতা ফিরতো ম্যাচে।
এর মিনিট পাঁচেক পর হোয়াও ফেলিক্সকে তুলে সাউলকে মাঠে আনেন অ্যাটলেটিকো। তবে রোহিব্ল্যাঙ্কোরা ম্যাচে ফিরবে কি, উলটো গোলই হজম করে বসে ৬৩ মিনিটে। সেটপিস থেকে টনি ক্রুসের চেষ্টা সফরকারী দেয়ালে বাঁধা পেলেও দানি কারভাহালের শট আর লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়নি। যদিও অ্যাটলেটিকো গোলরক্ষকের হাত ছুঁয়ে জালে জড়ানোয় তা গিয়েছে আত্মঘাতী গোলের খাতাতেই। তাতে রিয়ালের আফসোস নেই একটুও, ডার্বিটা যে নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গেছে ততক্ষণে!
দুই গোলে পিছিয়ে আক্রমণের ধার বাড়াতে মার্কো অ্যাসেনসিও ও রদ্রিগো গোয়েজকে বদলি হিসেবে নামান রিয়াল কোচ। তাতে অবশ্য ব্যবধান বাড়েনি রিয়ালের। উলটো কমতেই বসেছিলো ব্যবধানটা। শেষ দশ মিনিটে সাউল নিগুয়েজের হেডার ঠেকিয়েছেন রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া, থমাস লেমারের শট আটকে গেছে ক্রসবারে, তাতে শেষমেশ দুই গোলের ব্যবধানে লিগ মৌসুমের প্রথম হারের বিস্বাদ নেয় টেবিলের শীর্ষে থাকা অ্যাটলেটিকো।
আর রিয়াল মাঠ ছাড়ে সেভিয়া আর অ্যাটলেটিকোর মতো শীর্ষ চারের দুই দলের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে জয়ের তৃপ্তি নিয়ে। সেটা অবশ্য উপরি পাওনা। বড় প্রাপ্তিটা যে পেয়েছে পয়েন্ট টেবিলে, ১২ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে অ্যাটলেটিকোর সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান কমিয়ে তিনে নামিয়ে এনেছে জিদানের শিষ্যরা। ভিয়ারিয়ালকে টপকে উঠে এসেছে পয়েন্ট তালিকার তৃতীয় স্থানেও।
এনইউ