কায়সার সিনহার ‘বর্ণিল স্মৃতি, অমলিন কীর্তি’

দেশের ক্রীড়াঙ্গন ও ব্যবসায়ী অঙ্গনে অত্যন্ত পরিচিত নাম আফজালুর রহমান সিনহা। যিনি কায়সার সিনহা নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন। ২০১৮ সালে পৃথিবী ছেড়েছেন এই প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব। কায়সার সিনহাকে বিশেষভাবে স্মরণ করেছে বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতি। কায়সার সিনহার স্মরণে ‘বর্ণিল স্মৃতি,অমলিন কীর্তি’ নামক একটি স্মারক গ্রন্থ প্রকাশিত হবে। সেই গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে আজ (শনিবার) রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে।
শুধু মোড়ক উন্মোচন নয়, আফজালুর রহমান সিনহার নামে ক্রীড়া লেখক সমিতি সংগঠকদের পুরস্কৃতও করবে। বছরে দুই-তিন জন সংগঠক বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির মাধ্যমে এই পদক পাবেন।
নতুনের আবাহন নামে বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। সিনহার প্রতি ছিল তার অগাধ বিশ্বাস। সেই বিশ্বাসের একটি উদাহরণ টেনে পাপন বলেন, ‘বোর্ড সভাপতি হওয়ার কিছু দিনের মধ্যে আমার দেশের বাইরে আইসিসির একটা মিটিংয়ে যেতে হয়েছিল। আমার দুই সহ-সভাপতি ছিল। এরপরও তাদের আমি বলেছিলাম, এমন কোনো বিষয় যদি আমার সিদ্ধান্তের প্রয়োজন পড়ে সেটি সিনহা ভাই নেবেন।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বর্তমান রিজার্ভ ৯০০ কোটি টাকা। এর পেছনেও সিনহার অবদান দেখেন তিনি, ‘সিনহা ভাই ক্রিকেট বোর্ডের আর্থিক বিষয়টি খুব সুন্দরভাবে দেখভাল করতেন।’
কায়সার সিনহা শুধু ক্রিকেট বোর্ড নয়, ঢাকা আবাহনীর পরিচালক ছিলেন। ঢাকা আবাহনীর হকি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন দীর্ঘদিন। খেলোয়াড়দের জন্য তিনি ছিলেন আস্থার প্রতীক। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান বলেন, ‘আমার জীবনের প্রথম চাকুরি সিনহা ভাই দিয়েছিলেন একমিতে। আমার মতো আরো অনেক ক্রিকেটারকে চাকুরি দিয়েছিলেন সিনহা ভাই।’ বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলের কোচ মাহবুব হারুন দীর্ঘদিন একমিতে কর্মরত।
বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা বলেন, ‘সিনহা ক্রিকেট বোর্ডের ফাইন্যান্সের দায়িত্বে ছিল দীর্ঘদিন। সে অনেককে ক্রিকেটের টিকিট দিত। এই টিকিট সে নিজে কিনে এরপর মানুষকে খেলা দেখার সুযোগ করে দিত।’
কায়সার সিনহা দেশের সবচেয়ে অভিজাত ক্লাব ঢাকা ক্লাবের সভাপতি ছিলেন। বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজাও ঢাকা ক্লাবের সভাপতি ছিলেন। তিনি সিনহা সম্পর্কে আরো বলেন, ‘সিনহা ঢাকা ক্লাবের সঙ্গে দারুণভাবে জড়িত থাকতেন। ঢাকা ক্লাবের ক্রিকেট দলের কনভেনার ছিলেন দীর্ঘদিন। ক্লাবের সবার সুখ-দুঃখে তিনি পাশে থাকতেন।’
গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মোজাম্মেল বাবু আজকের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বলেন, ‘সিনহা ভাইয়ের সঙ্গে অনেক স্মৃতি। আমার বাবা মোহামেডানের সেক্রেটারি ছিলেন। আমি জানি সংগঠকদের কত ত্যাগ থাকে ক্রীড়াঙ্গনের জন্য। এমন একজন সংগঠকের নামে গ্রন্থ এবং তার নামে অন্য সংগঠকদের স্বীকৃতি দেয়াটা দারুণ উদ্যোগ।’
আফজালুর রহমান সিনহার ছেলে ফাহিম সিনহা বলেন, ‘আমার বাবার প্রতি আপনাদের সকলের ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ। বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতিকেও ধন্যবাদ বাবার স্মরণে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য।’
এজেড/টিআইএস