অভিষেকে রেকর্ড গড়ে নিজেকে চেনালেন শ্রীলঙ্কার নতুন ‘রহস্য স্পিনার’

অজন্তা মেন্ডিসকে মনে আছে? ২০০৮ এশিয়া কাপের ফাইনালে যার তোপে ভারতকে গুড়িয়ে দিয়ে লঙ্কানরা জিতেছিল শিরোপা? সেই ‘রহস্য স্পিনার’ মেন্ডিসের রহস্য ফাঁস হয়ে গেছে, দল থেকে অপাঙক্তেয় হয়ে পড়েছেন বহু আগেই। শ্রীলঙ্কার অভিষিক্ত তরুণ মাহিশ থিকশানা যেন মঙ্গলবার ফিরিয়ে আনলেন সেই মেন্ডিসের স্মৃতিই!
থিকশানার বোলিং দেখে সেই মেন্ডিস বলে ভুল করাটা দোষের কিছু নয়। দুজনের বোলিংয়ের ধরনে যে মিল খুব। খালি চোখে পার্থক্যই করতে পারবেন না আপনি। অভিষেকটাও হলো অনেকটা সেই মেন্ডিসের মতোই। না, ভুল হলো। থিকশানা ছাড়িয়ে গেলেন মেন্ডিসকেও। ‘রহস্য স্পিনে’ গড়লেন রেকর্ড, তাতে ভর করেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে শেষ ওয়ানডেতে ৭৮ রানের বিশাল ব্যবধানে। ২-১ ব্যবধানে ঝুলিতে পুরেছে সিরিজটাও।
৭৮ রানে আবার বিশাল ব্যবধান হয় নাকি! এমনটা মনে হতেই পারে আপনার। কিন্তু কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের উইকেটে যে হয়েছেই সাকুল্যে ৩৪০ এর মতো রান, তাতে ৭৮ রানের ব্যবধানটা তো বিশালই হওয়ার কথা।
শুরুতে ব্যাট করা লঙ্কানরা খাবি খেয়েছে বেশ। উইকেট হারিয়েছে নিয়মিত বিরতিতে। অর্ধশত রানের জুটিও গড়তে পারেনি একটা। ৫০ রানের ইনিংস নেই একটিও। তবে ইনিংসে সর্বোচ্চ চারিথ আসালঙ্কা লড়ে গেলেন একাই, ৪৭ রানে আউট হলেও লঙ্কান ইনিংসটা ভদ্রস্থ হয়েছে তার কল্যাণেই। দুশমন্থ চামিরার ২৯ রানের ছোট্ট অথচ কার্যকরী ইনিংসের কথাও বলতে হবে গুরুত্ব দিয়ে, শেষ দিকে তার ক্যামিও না হলে যে ২০০-ই পেরোতো না স্বাগতিকদের সংগ্রহ!
ছোট লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা পথ হারিয়ে ফেলে শুরুতেই। এইডেন মারক্রাম প্রাভিন জয়াবিক্রমার স্পিন ফাঁদে ধরা পড়েন। এরপর দুশমন্থ চামিরার শিকার হন রিজা হেনড্রিকস আর রাসি ফন ডার ডাসেন।
এরপরই থিকশানার ভেল্কি লাগলো প্রোটিয়া শিবিরে। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান জানেমান মালান ছিলেন, তার ব্যাটে আশাও জেগে ছিল সফরকারীদের। তাকেই থিকশানা ফিরিয়ে দেন প্রথম বলে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম বলে উইকেট তুলে নেওয়া চতুর্থ লঙ্কান বোলার বনে যান তিনি।
এরপর আধঘণ্টা বৃষ্টির নাচন দেখল কলম্বোর আকাশ। ওভার অবশ্য কমেনি তাতে। তবে খেই হারানো দক্ষিণ আফ্রিকা আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। থিকশানা এরপর তুলে নেন আরও তিনটি উইকেট। প্রথম শ্রীলঙ্কান স্পিনার হিসেবে অভিষেকে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে ঢুকে যান রেকর্ডের পাতায়। তাতেই ৭৮ রানের ‘বিশাল ব্যবধানের’ জয়ে সিরিজটা পকেটে পুরে নেয় লঙ্কানরা।
এনইউ