বিদেশি আম্পায়ারের বাংলায় রিপোর্ট!

দেশের হকি ও আম্পায়ারিং বিতর্ক সমান্তরালভাবেই চলে। অতি সম্প্রতি নতুন এক বিতর্কের জন্ম হয়েছে। প্রিমিয়ার লিগ হকিতে আম্পায়ারিং করা বিদেশি আম্পায়ার মাঠে খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফের অসদাচরণ নিয়ে লিগ কমিটির কাছে অভিযোগ করেছেন বাংলায়। বাংলায় লেখা অভিযোগে ভারতের ছত্রিশগড়ের আম্পায়ার আবার স্বাক্ষর করেছেন।
২৯ অক্টোবর বাংলাদেশ স্পোর্টিং ও ঢাকা আবাহনীর ম্যাচে আম্পায়ার ছিলেন ভারতীয় তারুণ ইয়াদাভ। অন্য দিনের মতো ওই দিনেও আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিবাদ খেলা স্থগিত ছিল কিছুক্ষণ। বাংলায় লেখা অভিযোগ পত্রে উল্লেখ রয়েছে, দুই দলের খেলোয়াড়েরা তার সঠিক সিদ্ধান্ত মেনে নিচ্ছিল না। বিশেষ করে আবাহনীর নাইম উদ্দিনকে কার্ড দেখানোর পর নাইম উদ্দিন ও টেন্ট থেকে শহীদুল্লাহ খোকন তার সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগপত্রে তাকে ব্যক্তিগতভাবে এবং তার দেশকে নিয়েও মন্তব্য করা হয়েছে বলে লেখা হয়েছে। এর বিচার না হলে তিনি দেশে ফিরে যেতে পারেন বলে জানিয়েছেন পত্রে।

২৯ অক্টোবর রাতে করা অভিযোগ পত্র পেয়েছেন লিগ কমিটির সম্পাদক আবু তাহের লতিফ মুন্না। অভিযোগপত্র দেখে তারও খটকা লেগেছে, ‘একজন আন্তর্জাতিক আম্পায়ার কেন বাংলায় রিপোর্ট বা অভিযোগ দেবে। এটা পাওয়ার পর আমি ও সাধারণ সম্পাদক তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি অবশ্য স্বীকার করেছেন বাংলায় দেয়া ঠিক হয়নি।’ ছত্রিশগড়ের এই আম্পায়ার বাংলা লেখা তো দুরের কথা বলতে ও বুঝতেও পারেন না।
ভাষাগত উপস্থাপন ও প্রক্রিয়া ভুল হলেও আম্পায়ারের অভিযোগ অনেকটা সত্য। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে লিগ কমিটির অবস্থান সম্পর্কে সম্পাদক মুন্না বলেন, ‘আমরা আগামীকাল লিগ কমিটির সভা ডাকছি। সেই সভায় আম্পায়ারের আনীত অভিযোগ ও বাংলায় কেন দিল দুটো বিষয় বিশেষভাবে খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’ ক্লাব কাপের সময় মোহামেডান ইস্যুতে জরুরি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল লিগ কমিটি। এই অভিযোগে আম্পায়ারের বাংলাদেশ চলে যাওয়ার হুমকির পর তিন দিন সময় অতিবাহিত হচ্ছে। এই বিলম্বের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মোহামেডানের ওই বিষয়টি ছিল টুর্নামেন্ট। খুব স্বল্প সময়ে টুর্নামেন্ট শেষ হয়। এজন্য তড়িৎ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। লিগে লম্বা সময় তাই একটু বিলম্ব। তাছাড়া আম্পায়ারের সাথে আলাপ হয়েছে তিনি আম্পায়ারিং করবেন।’
আম্পায়ার রিপোর্ট, অভিযোগ পত্র গোপনীয় বিষয়। এখানে প্রশাসনিকভাবে বুঝে পাওয়া, রিসিভ থাকার কথা না। বিদেশি আম্পায়ারের অভিযোগ বাংলায় লেখা আবার সেই অভিযোগপত্র রিসিভ করাও হয়েছে। সব কিছু মিলিয়ে হকিতে নতুন এক চক্রান্তের আভাস পাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
এজেড/এনইউ