বড় লিড বাংলাদেশের

ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে রীতিমতো হইচই ফেলে দেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চলমান চট্টগ্রাম টেস্টে বোলিংয়েও কম গেলেন না এই অলরাউন্ডার। ক্যারিবীয়দের প্রথম ইনিংসে ২৫৯ রানে আটকে দিয়েছে টাইগাররা। তাতে বড় ভূমিকা মিরাজের। সেঞ্চুরির পর বল হাতে প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি।
স্লো উইকেটে টস জয় সাক্ষাৎ আশীর্বাদ হয়ে আসে বাংলাদেশ দলের জন্য। আগে ব্যাট করতে নেমে বড় স্কোর করে ম্যাচে নিজেদের এগিয়ে নেয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ স্কোর বোর্ডে জমা করে ৪৩০ রান। স্বাগতিকদের অলআউট করে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২৫৯ রানে গুঁটিয়ে গেছে উইন্ডিজ। ফলে ১৭১ রানে লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে আবার ব্যাটিংয়ে নামে অধিনায়ক মুমিনুল হকের দল।
৭৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করে উইন্ডিজ। শুক্রবার ব্র্যাথওয়েট ৪৯ ও বোনার ১৭ রানে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেন। তবে আগের দুই দিনের থেকে এদিন উইকেটের চরিত্র বদলে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হয় সফরকারী ব্যাটসম্যানদের। দিনের শুরুর বলেই বাজিমাত তাইজুলের। হালকা টানে বোনারকে ব্যাট ছোঁয়াতে বাধ্য করেন তিনি। ভেতরে ঢোকা বল আলতো ছোঁয়া দিলে স্লিপে শান্তর হাতে ধরা পড়েন বোনার। বিপদের অগ্রীম সতর্কবার্তা তখনই পাওয়া গেল।
৩ বল পরেই নতুন ব্যাটসম্যান মেয়ার্সকে ফেরাতে পারতেন তাইজুলও। তবে উইকেটের পেছনে ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন লিটন। একই বল মুঠোবন্দি করতে পারেননি শান্তও। তবে দিনের শুরুতে যে চাপ তৈরি করে বাংলাদেশ দল। সেটি খুব বেশি কাজে আসেনি। এর দায়টা পড়ে বোলারদের কাঁধেই। আলগা বলে উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের শটস খেলার সুযোগ করে দিয়েছেন মিরাজ-নাঈমরা। তাতে অর্ধশতক হাঁকিয়ে স্বাগতিক বোলারদের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান ব্র্যাথওয়েট। তাকে ৭৬ রানে থামিয়ে ম্যাচে নিজের প্রথম উইকেটের স্বাদ পান মিরাজ।
সুযোগ এসেছিল আরও কয়েকটা। তবে শট লেগে ইয়াসিন রাব্বি, স্লিপে শান্তরা বলকে তালুবন্দি করতে পারেননি। দলীয় ১৫৪ রানে ৪০ রানে থাকা কাইল মায়ার্সকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান মিরাজ। তাতে ৫ উইকেট হারিয়ে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যায় উইন্ডিজ। সেখান থেকে ফিরে ৯৯ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে বিপদ মুক্ত করেন দুই ব্যাটসম্যান ব্ল্যাকউড ও ডি সিলভা। এক ফাঁকে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৪তম অর্ধশতক তুলে নেন ব্ল্যাকউড।
এই সময় চোটে পেয়ে মাঠ ছাড়া সাকিব আল হাসানের অভাব অনুভব করে স্বাগতিক শিবির। তবে ৪২ রানে ডি সিলভাকে লিটনের হাতে ক্যাচ বানিয়ে আক্ষেপে প্রলেপ দেন নাঈম। পরে ব্ল্যাকউড ফেরেন ৬৮ রান করে। ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫৩ রানে চা বিরতিতে যায় উইন্ডিজ। সেখান থেকে ফিরে সুবিধা করতে পারেনি আর। রোচ, কর্নওয়েল, ওয়ারিক্যানদের দুই অঙ্কের কোটায় প্রবেশ করতে দেননি মিরাজ আর তাইজুল। ফলে ২৫৯ রানে গুঁটিয়ে যায় ক্যারিবীয়রা। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে লিড পায় ১৭১ রানের। বাংলাদেশের হয়ে মিরাজ চারটি এবং মুস্তাফিজ, নাঈম ও তাইজুল সামান দুইটি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ: ৪৩০/১০ (মিরাজ ১০৩, ৫৯, সাকিব ৬৮, সাদমান ৫৯; ওয়ারিক্যান ৪/১৩৩, কর্নওয়াল ২/১১৪)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২৫৯/১০, ৯৬.১ ওভার (ব্র্যাথওয়েট ৭৬, ব্ল্যাকউড ৬৮, ডি সিলভা ৪২; মিরাজ৪/৫৮, মুস্তাফিজ ২/৪৬)
টিআইএস/এমএইচ/এটি