সাফল্য আনতে তৃণমূলে জোর টিটির

ফুটবল ফেডারেশনের মতো দেশের শীর্ষ ক্রীড়া ফেডারেশন অনূর্ধ্ব ১২-১৩ পর্যায়ে তেমন কাজ করে না। আরও অনেক ফেডারেশন এত কম বয়সের খেলোয়াড় তৈরিতে মনোযোগ দেয় না। টেবিল টেনিস (টিটি) ফেডারেশন সেখানে কিছুটা ব্যতিক্রম।
অনূর্ধ্ব ১৯,১৫ এর পাশাপাশি এ ফেডারেশন ১২-১৩ বছর বয়সী খেলোয়াড়দের ক্যাম্প করে। সেই ক্যাম্পকে আরও বেশি গতিশীল করতে সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খেলোয়াড় বাছাই করে।
ওপেন ট্রায়ালে না গিয়ে বিকেএসপিতে বাছাই করার কারণ সম্পর্কে ফেডারেশনের সহ-সভাপতি খোন্দকার হাসান মুনীর বলেন, টেবিল টেনিসে ছেলে ও মেয়ে উভয় বিভাগে মেধাবীরা বিকেএসপিতে ভর্তি হচ্ছেন। বিকেএসপিতে পরীক্ষা ও বেসিকের মাধ্যমে তারা আসেন। ফলে এখান থেকে খেলোয়াড় পেলে উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য সুবিধা হয়।
টেবিল টেনিস ফেডারেশনের এ প্রয়াসকে অত্যন্ত ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাজহারুল হক, বিকেএসপি ও ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোর মধ্যে এই ধরনের সমন্বয় থাকা দরকার। তাহলে জাতীয় যুবদলের খেলোয়াড় সরবরাহের পাইপলাইন হিসেবে বিকেএসপি অনন্য ভূমিকা রাখতে পারবে। যা ভবিষ্যতে সুন্দর জাতীয় দল গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অবদান রাখবে ।
‘টেবিল টেনিস ফেডারেশন জুনিয়র পর্যায়ে প্রশিক্ষণ এতো জোরদার করার কারণ, জুনিয়ররা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পদক জিতলে অন্যরাও টেবিল টেনিসের প্রতি আকৃষ্ট হবে এবং এই জুনিয়ররা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সফল হলে ক্যারিয়ার গড়ায় আরও সচেষ্ট হবে’- বলেন ফেডারেশনের সহ-সভাপতি।

বিকেএসপিতে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশন থেকে অনূর্ধ্ব ১২ ও ১৫, ছেলে এবং মেয়েদের বাছাই কার্যক্রমের অংশ নিতে জাতীয় দলের কোচ মোহাম্মদ আলী, পাঁচবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন সোনম সুলতানা সোমাসহ জাতীয় দলের বর্তমান ক্যাম্পে অবস্থানরত বালক ও বালিকারা গিয়েছিলেন। ওখানে বাছাই কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করেন বিকেএসপির টেবিল টেনিস বিভাগের প্রধান প্রাক্তন বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন খোন্দকার মোস্তফা বিল্লাহ। বাছাই কার্যক্রম চলার সময় বিকেএসপির মহাপরিচালক, পরিচালক প্রশিক্ষণসহ আরও অনেক কর্মকর্তাও ছিলেন।
ছেলেদের দলের মূল দুই স্তম্ভ মুহুতাসিন আহমেদ হৃদয়, রামহিম লিয়ান বম। অনূর্ধ্ব ১৭ ওয়ার্ল্ড টেবিল টেনিস ইয়ুথ কনটেন্ডার, মাস্কাট, ওমান এর খেলায় হৃদয় কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে এবং রামহিম ইন্ডিয়ান প্রতিযোগিকে গ্রুপ পর্যায়ে হারিয়ে দেয়, যা বয়স ভিত্তিক খেলায় বাংলাদেশের সেরা সাফল্য। পুরুষ দলের মতো নারী জাতীয় দলেও তরুণীরা ভালো পারফরম্যান্স করছেন। মেয়েদের দল গত সাউথ এশিয়ান গেমসে নেপালের কাছে ৩-১ সেটে হেরেছিল। তারাই এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালকে ৩-০ সেটে হারিয়েছে। এই দলের একজন খেলোয়াড় অ-১৭।
এই বছর মে’তে মালদ্বীপে ও সাউথ এশিয়ান জুনিয়র এন্ড ক্যাডেট টুর্নামেন্ট আগামী বছর পাকিস্তানে এসএ গেমস অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশন এই দু’টি গেমসকে পাখির চোখ করছে, ‘এই দুটি টুর্নামেন্টেই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাফল্য সাত দেশের মধ্যে ব্রোঞ্জ। তবে এবার এই দুইটি প্রতিযোগিতায় রৌপ্য পদক অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে’- বলেন হাসান মুনীর। ২০২৬ কমনওয়েলথ গেমসে পদক এবং আগামী বছরের পরবর্তী এসএ গেমসে স্বর্ণ জয়ের লক্ষ্যে টেবিল টেনিস ফেডারেশন ৪ জন মেধাবী খেলোয়াড়কে আগামী চার বছরের জন্য থাকা খাওয়া পড়াশোনা যাবতীয় সুবিধা দিচ্ছে।
এজেড/এসকেডি/এনইউ