বাংলাতেই উবার ঠিক করেন আবাহনী কোচ

আবাহনীর পর্তুগিজ কোচ ম্যারিও ল্যামোস বাংলাদেশে কোচিং করাচ্ছেন চার বছরের বেশি সময়। এই সময়ের মধ্যে বাংলা ভাষাকে মোটামুটি আয়ত্ত্ব করেছেন এই কোচ। বিশেষ করে উবারের মাধ্যমে গাড়ি ঠিক করার সময় তিনি বাংলা ভাষায় ব্যবহার করেন।
গাড়িতে উঠার পর উবারের চালকরা বুঝতে পারেন তিনি বিদেশি, ‘উবারে বাসা থেকে ক্লাবে এবং ক্লাব থেকে বাসায় যাওয়ার জন্য কল দেই। চালকের সঙ্গে বাংলায় বলি ন্যাশনাল ব্যাংকের (আবাহনী ক্লাবের বিপরীত পাশ) সামনে আছি। তারা বুঝতে পারে। আমি গাড়িতে উঠার পর বলেন, ইউ আর ফরেইনার। করোনা সময় মাস্কে পড়তে হয়, তাই হয়তো অনেকে এখন বুঝতেও পারেন না।’ বলেন আবাহনী কোচ।
দেশের ক্রীড়াঙ্গনে খেলোয়াড়, সংগঠকদের মধ্যে এক আন্তরিকতার টিপ্পনি শব্দ ‘চাম্পু’। এই শব্দটি বেশ পছন্দ ম্যারিওর, ‘বাংলা অনেক শব্দের মধ্যে চাম্পু শব্দটি আমার বিশেষ পছন্দ।’ ক্রীড়াঙ্গনে চাম্পু শব্দের ব্যবহার ও উৎপত্তি আবাহনীর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান ক্লাব থেকে সেটিও জানা তার, ‘মোহামেডানের মতো আমাদের ক্লাবেও চাম্পু আছে। বড় চাম্পু আমার ভাই (পর্তুগিজ ভিডিও অ্যানালিস্ট )।’
পেশাগত খেলোয়াড়ী ও কোচিং জীবনে অনেক দেশে কাজ করলেও বাংলাদেশের আন্তরিকতা তার মনে ধরেছে, ‘আমি বেশ কয়েক বছর বাংলাদেশে। জাতীয় দল ও ক্লাব উভয় পর্যায়ে কাজ করেছি। সেই হিসেবে বাংলা আরও বেশি আয়ত্ব হওয়া উচিত ছিল। সেটা হয়নি এর জন্য বাংলাদেশি আন্তরিকতা কারণ। অনেকে ইংরেজীতে খুব সাবলীল না হলেও আমাকে বোঝানোর জন্য ইংরেজীতে বলার প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন। ফলে আমার বাংলা শেখার কষ্টটা বেশি করতে হয়নি। অন্য দেশে আমি বিদেশি হিসেবে মূল্যায়িত হয়েছে, বাংলাদেশে সে রকম না।’
রাজধানীর বারিধারায় একটি ফ্ল্যাটে ম্যারিওর স্ত্রী ও সন্তানও থাকেন। ম্যারিও স্ত্রী ঢাকায় রিকশা ভ্রমণ খুব পছন্দ করেন। রিকশা ভ্রমণের সঙ্গে সঙ্গে আস্তে শব্দটি তিনি দারুণ রপ্ত করেছেন বলে জানান, ‘আমার স্ত্রীও কয়েকটি বাংলা শব্দ শিখেছে। এর মধ্যে আস্তে। বারিধারার ফাকা রাস্তায় রিকশা অনেক জোরে চলে। এতে সে যখন খানিকটা ভয় পায়, তখন রিকশাচালককে বলে আস্তে আস্তে।’
ম্যারিওর পাঁচ বছর বয়সী সন্তানও ছোট বাংলা শব্দ ভালো বলতে পারেন। মেয়েরও মতো ‘ভালো’সহ ‘আরও’, ‘ঠিক আছে’, ‘শাবাশ’ জাতীয় কয়েকটি শব্দ ম্যারিওর প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গী।
বাংলাদেশে কয়েক বছর কাজ করায় বাংলা ভাষার জন্য আত্মত্যাগের বিষয়টিও তার অজানা নয়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে তার বিনম্র শ্রদ্ধা, ‘ভাষার জন্য আত্মদানকারী সকলদের প্রতি আমার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা’।
এজেড/এমএইচ/এটি