সাকিব আর আমাকে দেখে মন্তব্য ছিল ‘যমজ ভাই নাকি’!
২০০২ সালে অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) সাকিব আল হাসানের পথচলা শুরু। হকি খেলোয়াড় ইমরান হাসান পিন্টু তার রুমমেট আরো আগে থেকে। ভর্তি প্রক্রিয়ার আগে প্রতিভা অন্বেষণ হয়। সেই প্রতিভা অন্বেষণ থেকে পিন্টু সাকিবের রুমমেট।
সাকিবের বিকেএসপি জীবনের অন্যতম সঙ্গী ছিলেন পিন্টু। প্রায় ৬ বছর বিকেএসপির হোস্টেল জীবনে অনেক স্মৃতি পিন্টুর সঙ্গে সাকিবের। কিশোর বয়সে দুই জনের চেহারায় মিলও ছিল অনেক, ‘একদিন এক খেলা শেষে আমি ও সাকিব নন্দন পার্কের দিকে গিয়েছিলাম ঘুরতে। তখন একজন আমাদের দেখে বলছিলেন, যমজ ভাই নাকি!’
আরও পড়ুন>> সাকিবের লকারেও থাকত হকি স্টিক
বিকেএসপির ২০২ নম্বর রুমে সাকিব ও পিন্টুর সঙ্গে ছিলেন আরও দু’জন। লিখন ও শুভলোক দুই জনই ছিলেন ক্রিকেটে। বিকেএসপির হোস্টেল রুম ক্রিকেট খুব জনপ্রিয়। ২০২ নম্বরে চারজনের তিনজনই ক্রিকেটার হওয়ায় রুম ক্রিকেট খেলেছেন অনেক পিন্টু। খেলাধুলার পাশাপাশি পড়াশোনাতেও সাকিবের পাশাপাশি ছিলেন পিন্টু। এসএসসি ও এইচএসসি দুই পরীক্ষাতেই দুই জনের সিট ছিল সামনে পেছনে।
পিন্টুর রুমমেট সাকিব এখন বিশ্ব তারকা ও বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসের আইকন। রুমমেটদের সঙ্গে সেই বিকেএসপির সাকিবই, ‘নিঃসন্দেহে সাকিবের ব্যস্ততা আমাদের চেয়ে বেশি কিন্তু সাকিবই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। দোস্ত চলে আয় বাসায়।’ –বলেন পিন্টু।
আরও পড়ুন>> বিশ্বকাপের চ্যালেঞ্জ হবে অন্যরকম : সাকিব
পিন্টু ও সাকিব দুই জনই দুই জাতীয় দলে খেলেছেন। অন্য দুই রুমমেট লিখন ও শুভলোক এখন ক্রীড়াঙ্গনের দূরে থাকলেও নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ প্রতিনিয়ত, ‘সাকিব এখন অনেক সময় পরিবারের সঙ্গে আমেরিকায় সময় কাটায়। সময়ের পার্থক্য অনেক হওয়ায় এমন হয় মাঝে মধ্যে সাকিবের ফোনে আমাদের ঘুম ভাঙে।’ –বলছিলেন পিন্টু।
সাকিব ও পিন্টু দুই রুমমেটের একটি বিষয় আবার মিল রয়েছে। দুই জনই নানা সময়ে সাসপেন্ড হয়েছেন। এই বিষয় নিয়েও মাঝে মধ্যে খুনসুটি হয় তাদের, ‘আসলে আমরা খেলাধুলা নিয়ে আলোচনা করি না তেমন। ব্যক্তিগত জীবন, বিকেএসপির স্মৃতি এসব নিয়েই বেশি কথা হয়। কাকতালীয়ভাবে আমরা দুই জন দুই খেলার হলেও ক্যারিয়ারে খানিকটা মিল রয়েছে। এ নিয়ে মজাও হয়। আসলে সাকিব যখন বন্ধুদের সাথে তখন সে একদম শিশুদের মতোই মজা করে।’ –বলছিলেন সাকিবের রুমমেট।
আরও পড়ুন>> দল হারলেও সুখবর পেলেন সাকিব
দুই বন্ধু শৃঙ্খলাজনিত কারণে অনেক সময় নিষেধাজ্ঞায় ছিলেন। বিকেএসপি জীবনে সাকিব অন্য খেলোয়াড়দের চেয়ে শৃঙ্খল বেশি ছিলেন বলে জানান পিন্টু।
হকি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের অনুষ্ঠানে এসে সাকিব আল হাসান রুমমেট পিন্টুর প্রসঙ্গ এনেছিলেন। সাকিব হকিতে আসায় খুবই খুশি রুমমেট পিন্টু, ‘ও আসলে সব খেলাই ভালোবাসে। ক্রিকেটার হলেও ও দারুণ ফুটবল খেলে এবং হকিটা উপভোগ করে। ফ্র্যাঞ্চাইজি হকি আমাদের হকির জন্য দারুণ উদ্যোগ এবং সাকিব আসায় সেটা আরো বর্ণিল হবে।’
সাকিব-পিন্টুরা যখন বিকেএসপিতে পড়তেন তখন জাতীয় ফুটবল দলের ক্যাম্প বেশিরভাগ সময় বিকেএসপিতে হতো। সেই সময় জাতীয় ফুটবল দলের তারকা ছিলেন মেহেদী হাসান উজ্জ্বল। তিনি ছিলেন সাকিবের আত্মীয়। পিন্টুকে সঙ্গে নিয়ে সাকিব অনেক দিন উজ্জ্বলের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন।
এজেড/এটি/এনইউ
