জয়াবিক্রমা যেন ‘এলেন, দেখলেন, জয় করলেন’
‘এলাম, দেখলাম, জয় করলাম’ বুঝি একেই বলে? ইতিহাসের প্রথম বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে অভিষেকেই দশ উইকেট নিয়ে, বাংলাদেশকে নাচিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কারটাও বগলদাবা করা প্রবীন জয়াবিক্রমা তো তেমন বলতেই পারেন। তার অজস্র রেকর্ডগড়া ১১ উইকেটে ভর করেই যে দল পেয়েছে ২০৯ রানের দারুণ এক জয়!
প্রথম টেস্টের স্কোয়াডে ছিলেন, তবে মাঠে নামা হয়নি। দলেই ছিলেন চতুর্থ পছন্দের স্পিনার হিসেবে। যার মানে দাঁড়ায়, প্রথম টেস্ট থেকে ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গা চোট না পেলে, কিংবা স্পিন নির্ভর উইকেটে বাড়তি স্পিনারের প্রয়োজন না পড়লে হয়তো দ্বিতীয় টেস্টে খেলাই হতো না প্রবীন জয়াবিক্রমার। তবে শেষমেশ দ্বিতীয় টেস্টে তিনি খেললেন, আর তাতেই করলেন বাজিমাত।
প্রথম ইনিংসে সাইফ হাসানকে ফিরিয়ে শুরু। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাসের উইকেট গেছে তার ঝুলিতে। তাসকিন আহমেদ ও মেহেদি হাসান মিরাজের উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের লেজটা মুড়ে দেওয়ার কাজও করেছিলেন তৃতীয় দিনে। টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ইনিংসে পাঁচ উইকেটের কীর্তি জয়াবিক্রমার আগে আরও ১৫৮ জনের আছে। এ তালিকায় ১৫৯তম সংযোজন হলেন তরুণ লঙ্কান স্পিনার।
দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হতেই আবারও তার আঘাত। দারুণ সব ফ্লাইট, লুপের ব্যবহারে সাইফ, শান্ত, মিরাজ, লিটন ও আবু জায়েদকে ফেরালেন। তাতে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেটের দেখাও পেয়ে গেলেন। অভিষেকে দশ উইকেটের কীর্তি আছে আরও তিনজনের। আগের ১৫৫ জন থেকে নিজেকে আলাদা করে নিয়েছিলেন দ্বিতীয় ইনিংসে চতুর্থ উইকেটটি নিয়েই।
পাল্লেকেলেতে জয়াবিক্রমা প্রথম ইনিংসে নিয়েছেন ৯২ রানে ৬ উইকেট। অভিষেকে লঙ্কানদের হয়ে সেরা বোলিংয়ের কীর্তি এখন তার, ভেঙে দিয়েছেন ২২ বছর আগের রেকর্ড। এর আগে ১৯৯৯ সালে ঢাকায় এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে উপুল চন্দনার ১৭৯ রানে নেওয়া ৬ উইকেটই ছিল লঙ্কানদের হয়ে সেরা অভিষেক বোলিংয়ের রেকর্ড।
লঙ্কানদের হয়ে সেরা অভিষেক ম্যাচ ফিগারও এখন তার দখলে। এ রেকর্ডটা অবশ্য খুব বেশিদিন পুরনো নয়, ২০১৮ সালে এই বাংলাদেশের বিপক্ষেই আকিলা দনাঞ্জয়া ৪৪ রানে ৮ উইকেট নিয়ে গড়েছিলেন লঙ্কান রেকর্ড।
২২ বছর ২১১ দিনে এসে ১০ উইকেটের স্বাদ পেয়েছেন তিনি। লঙ্কানদের মধ্যে এর চেয়ে কম বয়সে ১০ উইকেটের কীর্তি আছে কেবল চামিন্দা ভাসের। ১৯৯৫ সালে নিউজিল্যান্ডের মাঠে তাদেরই বিপক্ষে ৯০ রানে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। তখন শ্রীলঙ্কার বর্তমান বোলিং কোচের বয়স ছিল ২১ বছর ৪৩ দিন।
এনইউ/এটি